লক্ষ্মীপুরে ৬ লাখেরও বেশি শিশু-কিশোরকে টাইফয়েড টিকা দেবে সরকার

প্রকাশিত: ৭:৫৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৯, ২০২৫

লক্ষ্মীপুরে ৬ লাখেরও বেশি শিশু-কিশোরকে টাইফয়েড টিকা দেবে সরকার

Manual2 Ad Code
রবিবার থেকে শুরু হচ্ছে ইপিআই কর্মসূচির আওতায় টিকাদান কার্যক্রম

মেহেদী হাসান রাসেল, বিশেষ প্রতিনিধি | লক্ষ্মীপুর, ০৯ অক্টোবর ২০২৫ : সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)-এর আওতায় লক্ষ্মীপুর জেলায় শুরু হচ্ছে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন।
আগামী রোববার (১২ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া এ কার্যক্রমে জেলার ৬ লাখ ২৯ হাজার ৯৭৮ জন শিশু ও কিশোরকে টিকা দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর ২০২৫) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান জেলা প্রশাসন ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সম্রাট খীসা। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার সরকার। উপস্থিত ছিলেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আবু হাসান শাহীন, জেলা তথ্য কর্মকর্তা বিশ্বনাথ মজুমদার, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. নাহিদ রায়হান, দৈনিক সংবাদ দিগন্ত পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টার ও বাংলাদেশ প্রেসক্লাব লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সদস্য সচিব মেহেদী হাসান রাসেল সহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও ইপিআই কেন্দ্রের মাধ্যমে টিকা প্রদান

Manual4 Ad Code

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত ১৫ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বিদ্যালয়ে টাইফয়েড টিকা প্রদান করা হবে। এছাড়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকা ৯ মাস থেকে ১৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের বিদ্যমান ইপিআইয়ের স্থায়ী ও অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হবে।

‘একটি শিশুও যেন বাদ না পড়ে’—ডিসি রাজীব কুমার সরকার

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডিসি রাজীব কুমার সরকার বলেন, “আপনারা স্বাস্থ্যবিষয়ক নানা প্রশ্ন তুলেছেন, যার উত্তর আমরা আজ দিতে পেরেছি। এতে সবাই স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যক্রম সম্পর্কে অবগত হয়েছি। আমরা চেষ্টা করব জেলার স্বাস্থ্যখাতের সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান করতে।”

তিনি আরও বলেন, “গবেষণায় দেখা যায়, প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মানুষ মারা যায়, যার বেশিরভাগই দক্ষিণ এশিয়া ও আফ্রিকার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর নাগরিক। ২০২১ সালে বাংলাদেশে ৪ লাখ ৭৮ হাজার মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয়েছে, যার মধ্যে ৮ হাজার মারা গেছে, এবং মৃতদের ৬৮ শতাংশই শিশু।

তাই টাইফয়েডের ভয়াবহতা অনুধাবন করে আমাদের প্রত্যাশা—লক্ষ্মীপুর জেলার ৬ লাখ ২৯ হাজার ৯৭৮ শিশুর কেউই যেন টিকাদান কর্মসূচি থেকে বাদ না পড়ে। আমরা বিশ্বাস করি, গণমাধ্যম ও জনগণের সহযোগিতা পেলে এই কর্মসূচি শতভাগ সফল করা সম্ভব।”

স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তুতি

Manual6 Ad Code

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মো. আবু হাসান শাহীন জানান, জেলার প্রতিটি টিকাদান কেন্দ্রে পর্যাপ্ত টিকা ও জনবল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। টিকাদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে মাঠপর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে এবং গণসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

Manual2 Ad Code

তিনি বলেন, “টাইফয়েড একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। টিকা গ্রহণের মাধ্যমে এই সংক্রমণ অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব। অভিভাবকদের অনুরোধ করছি—সঠিক তারিখে ও নির্ধারিত কেন্দ্রে গিয়ে সন্তানকে টিকা দিন।”

পটভূমি ও গুরুত্ব

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, টাইফয়েড জ্বর এখনো দক্ষিণ এশিয়ার একটি বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। দূষিত পানি ও অপর্যাপ্ত স্যানিটেশন ব্যবস্থার কারণে এই ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ দ্রুত ছড়ায়। নতুন টিকাটি শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলবে বলে আশা করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

Manual3 Ad Code

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code