শ্রীমঙ্গলে থানার কার্যক্রমে স্বস্তি ফিরছে স্থানীয়দের মাঝে

প্রকাশিত: ৩:১৩ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৮, ২০২৪

শ্রীমঙ্গলে থানার কার্যক্রমে স্বস্তি ফিরছে স্থানীয়দের মাঝে

মো. আফজল হোসেইন, বিশেষ প্রতিবেদক | শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ০৮ অক্টোবর ২০২৪ : গত ৫ই আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও অভ্যুত্থানের পর সারা দেশের মতো শ্রীমঙ্গলেও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ শঙ্কা নিয়ে শুরু করে জীবনযাপন। শ্রীমঙ্গল থানা এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা নিয়ে ছিলো ভীষণ উদ্বিগ্ন। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের মধ্যে দিয়ে পুলিশ বাহিনীর কর্মকর্তা ও সদস্যদের বদলি,পদায়ন ও বরখাস্ত শুরু করে সরকার। ধীরে ধীরে দেশের সকল থানার কার্যক্রম স্বাভাবিক হতে শুরু করে। নবাগত পুলিশ সুপার এম. কে. এইচ মো.জাহাঙ্গীর হোসেনের নির্দেশে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ শুরু করেন ব্যাপক অভিযান। কখনো সোর্সকে কাজে লাগিয়ে, কখনো বিশেষ অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে চিহ্নিত অপরাধীদের গ্রেফতার করছেন শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। অভিযান পরিচালনার মাধ্যমে মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি, সাজাপ্রাপ্ত, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ও দাগী আসামিদেরকে আটক করতে সক্ষম হয়। এছাড়াও বিগত দিনের তুলনায় হয়রানি ছাড়াই সহজেই মামলা ও অভিযোগ করতে পারছেন ভুক্তভোগীরা।পুলিশ সদস্যদের সৌহার্দ্যপূর্ণ ও সম্মানজনক আচরণে উচ্ছ্বসিত আইনের আশ্রয় নিতে আসা সুফলভোগীরা। শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের কার্যক্রম ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন স্থানীয় জনগণ ও গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা। অল্প সময়ের মধ্যে অপরাধ দমন ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে উন্নতি হওয়ায়, এতে করে স্বস্তি ফিরছে স্থানীয়দের মাঝে। শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের কার্যক্রমে সাধারণ মানুষের মন থেকে ইতোমধ্যে ভীতি ও শঙ্কা কাটতে শুরু করেছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের দৈনন্দিন কার্যক্রমের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক, সিনিয়র সাংবাদিক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “আইন শৃঙ্খলা রক্ষা সহ আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনে থানা পুলিশের দায়িত্ব অনেক বড় ও গুরুত্বপূর্ণ বটে। পুলিশকে পেশাদারিত্বের সাথে এমনভাবে জনসেবা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে করে জনগণ পুলিশকে তাদের রোল মডেল ভাবতে পারে। থানা হচ্ছে সেবা প্রদানের মোক্ষম জায়গা, পুলিশের ভাবমূর্তির দর্পণ। তাই থানার কার্যক্রম হতে হবে সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ, নির্ভেজাল ও কালিমামুক্ত। শ্রীমঙ্গল এলাকায় জনগণের শান্তি বিঘ্নকারী কোন দুষ্টের ঠাঁই নেই। সেবাদানের আন্তরিক সদিচ্ছা, স্বচ্ছতার মনোভাব নিয়ে কাজ করতে হবে। মাদক, চুরি, দস্যুতা সহ যাবতীয় অপরাধ প্রতিরোধে আরও বেশি নজরদারি বাড়াতে হবে। তিনি আরও বলেন, ন্যায় বিচার নিশ্চিতকল্পে থানায় হতে সেবাপ্রত্যাশীদের প্রতিটি আবেদনের বিষয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাগণ ফলোআপ করতে পারেন। প্রো-অ্যাক্টিভ পুলিশিং এর মাধ্যমে অপরাধ দানাবাঁধার আগেই তা দমন করা বাঞ্ছনীয়।” এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সেক্রেটারি মো. আশরাফুল ইসলাম কামরুল বলেন, মানুষের আইনি আশ্রয় চাওয়ার ভরসার স্থানটি হলো থানা। ভালো কর্মকর্তা দ্বারা কোনো প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা হলে প্রতিষ্ঠানের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস জন্ম নেয়। থানা তার বাইরে নয়। শ্রীমঙ্গল থানার কার্যক্রম অনেকটাই ছিলো নিস্ক্রিয়। বিগত দিনে আইনশৃঙ্খলা অবনতি লক্ষ্য করা গেলেও ধীরে ধীরে তা স্বাভাবিক হচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।