সিলেট ১১ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৬:১৪ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২০
প্যারিস, ১১ জুলাই ২০২০ : আদি আমেরিকান এবং পলিনেশিয়ানরা (মধ্য এবং দক্ষিণ প্রশান্তমহাসাগরীয় দ্বীপমালা) ১২০০ বছর ধরে উন্মুক্ত সমুদ্রে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছিল এবং তারা পরস্পর মিশে গেছে। বর্তমান জনগোষ্ঠীর ডিএনএ বিশ্লেষণ করে এই সংযোগের অকাট্য প্রমাণ পাওয়া গেছে। বুধবার বিজ্ঞানীরা এ কথা জানান।
বর্তমান কলম্বিয়া অথবা ইকুয়েডরের লোকেরা হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যাঞ্চলের ছোট ছোট দ্বীপগুলোতে পৌঁছেছিল অথবা পলিনেশিয়ানরা সমুদ্রযাত্রায় দক্ষিণ আমেরিকায় পৌঁছেছিল এবং তারা সেখান থেকে ফিরছিল কিনা তা এখনো অজানা।
তবে ডিএনএ’র প্রাকৃতিক বন্ধন গবেষণায় এটি নিশ্চিত হয়েছে যে, আমেরিকা ও পলিনেশিয়া অঞ্চলে ইউরোপিয়ানদের পা রাখার কয়েকশ বছর আগেই তাদের মধ্যে যাগাযোগ স্থাপিত হয়েছিল এবং ফ্রান্স পলিনেশিয়ান (পরবর্তীতে ফ্রান্সের কলোনি দ্বীপগুলো) অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা লোকদের ডিএনএ’র মধ্যে তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া নতুন বিশ্বের স্বাক্ষর রয়েছে।
মেক্সিকোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি অব জিনোমিকস ফর বায়োডাইভারসিটি’র প্রধান ইনভেস্টিগেটর এবং গবেষণা রিপোর্টের প্রধান লেখক আন্দ্রেজ মরিনো এসত্রাদা এএফপিকে বলেন, “এই অনুসন্ধানগুলো আমাদের প্রজাতির বিশাল মহাদেশীয় বিস্তারের একটি অন্যতম অজানা অধ্যায় যা আমাদের আগেকার ধারণা পাল্টে দিচ্ছে।”
আর্কিওলোজিস্ট এবং ঐতিহাসিকরা কয়েক দশক ধরে ওশেনিয়ার দ্বীপবাসিরা এবং আদি আমেরিকানরা মধ্যযুগে মহাসমুদ্র অতিক্রম করে নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করেছিল কিনা এবং সেটা কিভাবে হয়েছিল এই অজানা ঘটনা উদঘাটনে চেষ্টা চালিয়ে আসছেন।
১৯৪৭ সালে নরওয়েজিয়ান অনুসন্ধানী ও লেখক থর হায়ারডাহাল স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি ভেলায় করে দীর্ঘ মহাসমুদ্র পাড়ি দিয়েছিলেন, তিনি ইনকা দেবতার নাম অনুসারে এই ভেলাটির নাম রেখেছিলেন কোন-টিকি এবং ফ্রেন্স পলিনেশিয়ান টুয়ামোটাস দ্বীপে পৌঁছে ভেলাটি ধ্বংস হওয়ার আগে তিনি পেরু থেকে ১০১ দিনে প্রায় ৭ হাজার কিলোমিটার মহাসমুদ্র পাড়ি দিয়েছেন।
এটি সেই দ্বীপ যেখানে অধিবাসীদের ডিএনএ’র মধ্যে নতুন বিশ্বের স্বাক্ষর পাওয়া যায়।
হায়ারডাহাল এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেন যে, এই দ্বীপের বাসিন্দারা পেরু থেকে এসে জনসংখ্যা বিস্তার করেছে এবং তিনি নিজের সমুদ্র যাত্রা দিয়ে দেখাতে চান যে এাঁ সম্ভব। তবে এটি ছিল অর্ধসত্য।
স্টানফোর্ড ইউনিভার্সিটির পোস্ট ডক্টরাল গবেষক এবং পেপারের লিড লেখক আলেকজান্ডার আইওনানিডিস এএফপিকে বলেন,“ সম্ভবত পলিনেশিয়ানরাই আগে আমেরিকায় পৌঁছে এবং তারা উন্মুক্ত মহাসমুদ্র পাড়ি দেয়ার প্রযুক্তি ও সক্ষমতা প্রমাণ করেছিল।”
হালকা নৌকায় ভ্রমণ করে পলিনেশিয়ানরা হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ, ইস্টার আইল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডে ত্রিভূজ আকৃতির অঞ্চলজুড়ে বসতি স্থাপন করেছে।
এখন পর্যন্ত আমেরিকান আদিবাসী ও পলিনেশিয়ান সংস্কৃতির অভিন্ন অংশ মিষ্টি আলু। আইওনানিডিস বলেন, এটি আদি আমেরিকান সংস্কৃতি, ইউরোপীয়দের আগমনের অনেক আগেই হাজার মাইল দূরে পলিনেশিয় দ্বীপে এই সংস্কৃতি ছিল।
তিনি বলেন, মধ্য আমেরিকা ও পলিনেশিয় দ্বীপের লোকদের ডিএনএ টেস্ট করে আমরা একই ডিএনএ সিকুয়েন্স ও কোড পেয়েছি। এমনকি পলিনেশিয় ভাষার সঙ্গে আদি আমেরিকান আন্দেজ ভাষার মিল পেয়েছি।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D