জাতিসংঘে ঝড় তুললেন বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মোটলি

প্রকাশিত: ১২:১৯ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫

জাতিসংঘে ঝড় তুললেন বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মোটলি

Manual8 Ad Code
পশ্চিমা বিশ্ব ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা

কূটনৈতিক প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দিয়ে আবারও বিশ্ব রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এলেন বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোটলি। তিনি কঠোর ভাষায় পশ্চিমা বিশ্ব, বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের নীতিকে সমালোচনা করেন। তার বক্তব্যে ফুটে ওঠে বৈশ্বিক দক্ষিণের ক্ষোভ, উপনিবেশোত্তর রাষ্ট্রগুলির বেদনা এবং বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে বড় শক্তিগুলির দ্বিমুখী অবস্থানের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ।

“তারা লুণ্ঠনকারী, তারা কসাই, তারা মরুভূমি তৈরি করে আর বলে শান্তি এনেছে”

মিয়া মোটলি স্পষ্ট ভাষায় বলেন— যারা বিশ্বজুড়ে আগ্রাসন, দখল, শোষণ ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে, তাদের মুখোশ এখন উন্মোচিত। তিনি পশ্চিমা শক্তিকে “লুণ্ঠনকারী”, “কসাই”, “আবর্জনা” আখ্যা দিয়ে বলেন, এরা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে মরুভূমি তৈরি করে এবং সেটিকেই শান্তি বলে আখ্যা দেয়। তার বক্তব্যে ইঙ্গিত স্পষ্টভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের প্রতি, যারা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মধ্যপ্রাচ্যে সামরিক অভিযানে অভিযুক্ত।

বব মার্লির সুরে প্রতিবাদ

Manual4 Ad Code

আন্তর্জাতিক ফোরামে তিনি উত্থাপন করেন বিশ্ববিখ্যাত সংগীতশিল্পী বব মার্লির উক্তি:
“তুমি কীভাবে ওখানে বসে থেকে আমাকে বলতে পারো যে তুমি কেয়ার কর … যখন আমি আমার চারপাশে তাকাই, দেখি কষ্ট পাওয়া মানুষ …”
এই উদ্ধৃতি দিয়ে মোটলি বোঝাতে চেয়েছেন যে, যারা মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের বুলি আওড়ায়, তারা বাস্তবে মানুষের দুর্ভোগ কমানোর জন্য কিছুই করে না।

ট্যাসিটাসকে উদ্ধৃত করে ইতিহাসের স্মরণ

মিয়া মোটলি তার ভাষণে রোমান ঐতিহাসিক ট্যাসিটাসের একটি বিখ্যাত উক্তিও উল্লেখ করেন:
“তারা মরুভূমি তৈরি করে এবং একে শান্তি বলে।”
এই ঐতিহাসিক রেফারেন্স দিয়ে তিনি দেখিয়েছেন, সাম্রাজ্যবাদী শক্তিগুলির ধ্বংসযজ্ঞ আজ নতুন কিছু নয়, বরং হাজার বছর ধরে চলে আসা এক পুনরাবৃত্ত ইতিহাস।

নতুন প্রজাতন্ত্রের নারী প্রধানমন্ত্রী

Manual7 Ad Code

মিয়া আমোর মোটলি শুধু একজন বিশ্বনেত্রী নন, বরং বার্বাডোসের ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী। ২০১৮ সাল থেকে দায়িত্বে থাকা মোটলি বার্বাডোস লেবার পার্টির (BLP) নেতা। ২০২১ সালে তার নেতৃত্বেই দেশটি ব্রিটিশ সাংবিধানিক রাজতন্ত্র বিলুপ্ত করে প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। ফলে তিনি হলেন স্বাধীন প্রজাতন্ত্র বার্বাডোসের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।

বৈশ্বিক দক্ষিণের কণ্ঠস্বর

তার ভাষণকে অনেকে বলছেন “গ্লোবাল সাউথ”-এর কণ্ঠস্বর। আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের বহু দেশ দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা শক্তির আধিপত্য, ঋণনির্ভরতা ও সামরিক হস্তক্ষেপের শিকার। মিয়া মোটলির ভাষণ সেই শোষিতদের বেদনা ও প্রতিবাদকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে তুলে ধরল।

Manual7 Ad Code

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

Manual8 Ad Code

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতিসংঘে এই সাহসী বক্তব্য মিয়া মোটলিকে উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে নেতৃত্বের এক প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছে। পশ্চিমা কূটনীতিকদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি হলেও, সাধারণ মানুষের মধ্যে তিনি প্রশংসিত হয়েছেন একজন নির্ভীক ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেওয়া নেত্রী হিসেবে।

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code