নারীর গৃহস্থালি ও যত্নমূলক অদৃশ্য শ্রমকে অর্থনীতিতে স্বীকৃতির দাবি: এমজেএফ’র সংলাপে বক্তারা

প্রকাশিত: ৭:৩৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২৫

নারীর গৃহস্থালি ও যত্নমূলক অদৃশ্য শ্রমকে অর্থনীতিতে স্বীকৃতির দাবি: এমজেএফ’র সংলাপে বক্তারা

Manual4 Ad Code
“নারীর অদৃশ্য শ্রমের স্বীকৃতির পথে প্রথম পদক্ষেপ” : জাতীয় সংলাপ আয়োজন করল মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ : নারীর গৃহস্থালি ও যত্নমূলক অদৃশ্য শ্রমকে জাতীয় অর্থনীতির অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি এখন সময়ের অনিবার্য দাবি—এমন মত উঠে এসেছে রাজধানীর গুলশানে অনুষ্ঠিত এক উচ্চপর্যায়ের জাতীয় সংলাপে।

সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫) “Road to Recognition: A First Step towards Gender Equality” শীর্ষক এ সংলাপ গুলশানের ক্রাউন প্লাজা হোটেলে আয়োজন করে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন (এমজেএফ)। সংলাপে নীতি নির্ধারক, গবেষক, উন্নয়ন সহযোগী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা অংশ নেন।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কাজী গোলাম তোয়াসিফ, জাতিসংঘ মহিলা বিষয়ক সংস্থা ইউএন উইমেন বাংলাদেশ-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ গীতাাঞ্জলি সিংহ এবং কানাডার হাইকমিশনের সেকেন্ড সেক্রেটারি (ডেভেলপমেন্ট – জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি) স্টেফানি সেন্ট লরেন্ট ব্রাসার্ড।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নুসরাত আমান, প্রধান নির্বাহী, আয়াত ফাউন্ডেশন; নশিবা সেলিম, প্রিন্সিপাল সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট (জেন্ডার), এডিবি; এবং ক্যাথারিনা কোয়েনিগ, ডেপুটি টিম লিডার, নাগরিকতা : সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ড (সিইএফ)।

Manual3 Ad Code

বিবিএস-এর যুগান্তকারী প্রতিবেদন

সংলাপে উপস্থাপিত হয় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর হাউজহোল্ড প্রোডাকশন স্যাটেলাইট অ্যাকাউন্ট (এইচপিএসএ) রিপোর্ট। প্রতিবেদনে দেখানো হয়—

নারীর অবৈতনিক গৃহস্থালি কাজের আর্থিক মূল্য বছরে দাঁড়ায় প্রায় ৬ লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা,

যা দেশের মোট জিডিপির ১৮.৯ শতাংশের সমান।

Manual4 Ad Code

এর মধ্যে নারীদের অবদান ৮৫ শতাংশ (অর্থাৎ প্রায় ১৬.১৪% জিডিপি)।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, নারীর শ্রমকে স্বীকৃতি ও মূল্যায়ন করলে শুধু পরিবার নয়, জাতীয় অর্থনীতিও শক্তিশালী হবে।

এমজেএফ-এর দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টা

এমজেএফ দীর্ঘদিন ধরে “সম্মানের মাধ্যমে সমতা” (Equality through Dignity) ক্যাম্পেইন চালিয়ে আসছে। এর অংশ হিসেবেই নারীর অদৃশ্য শ্রমের স্বীকৃতি দাবি এখন আরও জোরালো হচ্ছে।

এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হচ্ছে নাগরিকতা: সিভিক এনগেজমেন্ট ফান্ড (সিইএফ) প্রোগ্রামের আওতায়। প্রোগ্রামটি বাস্তবায়নে কারিগরি সহায়তা দিচ্ছে জিএফএ কনসাল্টিং গ্রুপ, আর অর্থায়ন করছে সুইস দূতাবাস ও গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা (জিএসি)।

বিশেষ অতিথিদের মন্তব্য

প্রধান অতিথি ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, “জাতীয় বাজেট বা পরিকল্পনায় নারীর অবৈতনিক শ্রমের প্রতিফলন ঘটানো গেলে উন্নয়ন আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক হবে।”

গীতাাঞ্জলি সিংহ বলেন, “নারীর অদৃশ্য শ্রমকে মূল্যায়ন করা মানেই জেন্ডার সমতার পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।”

স্টেফানি ব্রাসার্ড বলেন, “কানাডা সবসময় নারীর অধিকার ও সমতার পক্ষে থাকবে। বাংলাদেশে এ ধরনের উদ্যোগকে আমরা সহযোগিতা অব্যাহত রাখব।”

উপসংহার

সংলাপে বক্তারা জোর দিয়ে বলেন, নারীর অদৃশ্য শ্রমকে সরকারি নীতি, জাতীয় পরিকল্পনা ও অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তবেই টেকসই উন্নয়ন ও প্রকৃত সমতার পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে।

Manual3 Ad Code

 

Manual6 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code