মহামারিকে শতভাগ কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে তামাক কোম্পানিগুলো

প্রকাশিত: ৫:৫৭ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৮, ২০২০

মহামারিকে শতভাগ কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে তামাক কোম্পানিগুলো

Manual8 Ad Code

ঢাকা, ২৮ নভেম্বর ২০২০ : চলমান কোভিড-১৯ মহামারিকে শতভাগ কাজে লাগাতে সক্ষম হয়েছে তামাক কোম্পানিগুলো। মূলত সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক (সিএসআর) কর্মসূচির অজুহাতে তারা এই ব্যবসায়িক সুবিধা আদায় করতে সক্ষম হয়েছে।

Manual5 Ad Code

আজ ঢাকায় প্রকাশিত ‘তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ সূচক : এফসিটিসি আর্টিক্যাল ৫.৩ বাস্তবায়ন প্রতিবেদন, বাংলাদেশ ২০২০’ গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। অনলাইনভিত্তিক জুম সফটওয়্যারের মাধ্যমে গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) এবং অ্যান্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা) আয়োজিত এক ওয়েবিনারে এই গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি । বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত সচিব এবং জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের প্রাক্তন সমন্বয়ক মুহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস।
সাবের হোসেন বলেন, তামাক অপরিহার্য পণ্য তবে শুধু মৃত্যুর জন্য, জীবনের জন্য নয়। এটি কোনোভাবেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের তালিকায় থাকতে পারে না। বরং এটি সংবিধানের বাঁচার অধিকার সংক্রান্ত মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী। তামাকপণ্যকে এই তালিকা থেকে বাদ দেয়ার জন্য জাতীয় সংসদে বেসরকারি সদস্য বিল জমা দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, কোভিড এর মধ্যে অনেক তামাক কোম্পানিকে প্রণোদনার টাকা দেয়া হয়েছে এটা হতে পারে না।
মুহাম্মদ রূহুল কুদ্দুস বলেন, সরকার সম্প্রতি তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। “আমি আশা করবো, স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় নিজ মন্ত্রণালয় ছাড়াও অন্যান্য মন্ত্রণালয় বিশেষ করে অর্থ, শিল্প, বাণিজ্য ও কৃষি মন্ত্রণালকে আর্টিক্যাল ৫.৩ প্রতিপালনের বাধ্যবাধকতা বিষয়ে সচেতন করবে যাতে চলমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়াসহ সকল ক্ষেত্রে তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপমুক্ত থাকা যায়।
অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন,‘ কোভিড-১৯ আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে তামাক ব্যবহার কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে। এটা এমন একটা সমস্যা যার সমাধানে শুধু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নয় বরং সকল মন্ত্রণালয় মিলে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।’
গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী বাংলাদেশে আর্টিক্যাল ৫.৩ বাস্তবায়নের কিছুটা অগ্রগতি হলেও তা সন্তোষজনক নয়। ‘তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ সূচক’ এ বাংলাদেশের প্রাপ্ত স্কোর ৬৮ অর্থাৎ বাংলাদেশ এখনও তামাক কোম্পানির শক্তিশালী হস্তক্ষেপ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে তামাক কোম্পানিগুলো সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক (সিএসআর) কর্মসূচির অজুহাতে নীতিনির্ধারক, সরকারি কর্মকর্তা এবং প্রশাসনযন্ত্রের সাথে মিশে ব্যবসায়িক সুবিধা আদায় এবং তামাকনিয়ন্ত্রণ কর্মকান্ডে বাধা প্রদানের চেষ্টা করেছে। একইসাথে এসব সিএসআর কার্যক্রম ব্যাপকভাবে প্রচার করে জনমনে নিজেদের সর্ম্পকে ইতিবাচক মনোভাব তৈরির চেষ্ট করেছে কোম্পানিগুলো।গবেষণার সুপারিশে আইন সংশোধন করে তামাক কোম্পানির সকল প্রকার সামাজিক দায়বদ্ধতামূলক (সিএসআর) কার্যক্রম সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করার প্রতি জোর তাগিদ প্রদান করা হয়েছে। পাশপাশি অন্যান্য মন্ত্রণালয়কে আর্টিক্যাল ৫.৩ প্রতিপালনের বাধ্যবাধকতা বিষয়ে সচেতন করতে সুপারিশ করা হয়েছে।
ওয়েবিনারে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনায় অংশ নেন মো: শফিকুল ইসলাম, ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক, সৈয়দ মাহবুবুল আলম, এম এ সালাম এবং প্রজ্ঞার নির্বাহি পরিচালক এবিএম জুবায়ের। এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স আত্মা’র কনভেনর মর্তুজা হায়দার লিটন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন।

Manual7 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code