আইনের বাতিঘর ব্যারিস্টার রফিক-উল হক অার নেই

প্রকাশিত: ৭:০৫ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৪, ২০২০

আইনের বাতিঘর ব্যারিস্টার রফিক-উল হক অার নেই

Manual8 Ad Code

ঢাকা, ২৪ অক্টোবর ২০২০: চলে গেলেন লাইফ সাপোর্টে থাকা আইনের বাতিঘর সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক। আজ শনিবার সকাল ৮ টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর আদ-দ্বীন হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। তার বয়স হয়েছিলো ৮৬ বছর।

দেশের বিশিষ্ট আইনজ্ঞ ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক গত ১৫ অক্টোবর থেকে বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতা নিয়ে রাজধানীর আদ্-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রথম দিকে তাকে কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অবস্থা কিছুটা জটিল হওয়ায় তাকে হাই ডিপেনডেন্সি কেয়ার ইউনিটে (এইচডিইউ) ভর্তি করা হয়।

গত ২০ অক্টোবর তার শারীরিক অবস্থার আরো অবনতি হলে তাকে দ্রুত লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। ঐ সময় তার ব্লাড প্রেশার ও অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যায়। এতে তিনি শকে চলে যান।

এরপর আদ্-দ্বীন হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন শুক্রবার জানিয়েছিলেন, স্যারের রক্তের পরীক্ষানিরীক্ষাগুলো করা হয়েছে। কিন্তু তাতে খুব একটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি। উনারা সবাই স্যারকে দেখেছেন। তারাও বলেছেন, স্যারের অবস্থা সংকটাপন্ন। আমাদের আল্লাহ তায়ালার কাছে দোয়া করা ছাড়া আর কিছু করার নেই। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালের ২রা নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল সম্পন্ন করেন। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন। বর্ণাঢ্য জীবনে আইন পেশায় দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছর পার করেছেন।

বিগত সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে অকুতোভয় আইনি লড়াই করেন তিনি। দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও ভাবমূর্তি রক্ষায় বরাবরই সোচ্চার রফিক-উল হক। দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি বিষয় নিয়ে সরকারকে সহযোগিতা করেছেন বর্ষীয়ান এই আইনজীবী।

১৯৯০ সালের ৭ই এপ্রিল থেকে ১৭ই ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রফিক-উল হক। কিন্তু কোনো সম্মানী নেননি। পেশাগত জীবনে তিনি কখনো কোনো রাজনৈতিক দল করেননি। তবে, নানা সময়ে রাজনীতিবিদরা সবসময় তাঁকে পাশে পেয়েছেন। রাজনীতিবিদদের সম্মান সবসময়ই অর্জন করেছেন তিনি।

ব্যারিস্টার রফিক-উল হক তাঁর জীবনের উপার্জিত অর্থের প্রায় সবই ব্যয় করেছেন মানুষের কল্যাণ ও সমাজসেবায়। আর তার এই উদ্যোগকে বিরল বলে আখ্যায়িত করেছেন আইন অঙ্গনে তার সমসাময়িকরা।

Manual1 Ad Code

ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে আইন অঙ্গনে নেমে এসেছে শোকের ছায়া। তার মৃততে গভীর শোক প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি। এছাড়া সিনিয়র আইনজীবীরাও গভীর শোক প্রকাশ করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তারা বলেন, আইন ও বিচারাঙ্গনে তার শূণ্যতা পূরণ হবার নয়।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ দেশের বিশিষ্ট আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে গভীর শোকও দুঃখ প্রকাশ করেছেন ।
স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য বর্তমানে দুবাইতে অবস্থানরত রাষ্ট্রপতি আজ এক শোকবার্তায় বলেন, ‘দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় ব্যারিস্টার রফিক-উল হক বিপুল অবদান রেখেছেন। তাঁর মৃত্যুতে দেশ একজন অভিজ্ঞ আইনবিদকে হারালো।’
রাষ্ট্র প্রধান মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
আজ এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যারিস্টার রফিক-উল হক সংবিধান সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরামর্শ দিতেন।’
প্রধানমন্ত্রী একটি মিথ্যা মামলায় তৎকালীন তত্ত্বাববধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালে তাঁকে গ্রেপ্তার করার পর জেল থেকে মুক্তির জন্য আইনী লড়াইয়ে এগিয়ে আসায় ব্যারিস্টার রফিকের ভূমিকার কথা গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন ।
শোকবার্তায় শেখ হাসিনা মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

ওয়ার্কার্স পার্টির শোক

বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি।

সৈয়দ অামিরুজ্জামানের শোক

Manual5 Ad Code

বিশিষ্ট আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ অামিরুজ্জামান।

Manual6 Ad Code

ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যুতে মন্ত্রিপরিষদের সদস্যবৃন্দ গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
আজ এক তথ্য বিররণীর মাধ্যমে মন্ত্রী পরিষদের পক্ষ থেকে এই শোক প্রকাশ করা হয়।
বিশিষ্ট আইনজীবী রফিক-উল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন- মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক, কৃষিমন্ত্রী ড. মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী ড. মো. হাছান মাহমুদ, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক), স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, মৎস্য ও প্রাণি সম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
এছাড়া, রফিক-উল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা এবং পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম।
পৃথক পৃথক শোকবার্তায় তাঁরা ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

Manual8 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code