সিলেট ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৭শে ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:৩৯ অপরাহ্ণ, মে ৩১, ২০২১
বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ৩১ মে ২০২১ : আসন্ন বাজেটে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতসহ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বরাদ্দের দাবিতে শনিবার (২৯ মে ২০২১) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী। সংগঠনের সভাপতি কাজী আব্দুল মোতালেব জুয়েলের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অতুলন দাস আলোর সঞ্চালনায় সংহতি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও ঢাকা মহানগর সভাপতি কমরেড আবুল হোসাইন, বাংলাদেশ যুব মৈত্রীর কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মোঃ তৌহিদ রহমান, সাবেক ছাত্রনেতা হাসিদুল ইসলাম ইমরান। আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রীর সহ-সভাপতি ও ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি ইয়াতুন্নেসা, সহ-সভাপতি জেসমিন আকতার প্রমুখ।
এসময় ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি বলেন, ‘শিক্ষাখাতে রাষ্ট্রীয়ভাবে সরকারের বিনিয়োগ করার কথা। কিন্তু আমরা প্রতি অর্থবছরে এই খাতে বরাদ্দের ব্যাপারে উদাসীনতা দেখতে পাই। অতীতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার সাথে প্রযুক্তিকে জুড়ে দিয়ে অতি চাতুরতার এই খাতে বেশি বরাদ্দ দেখিয়ে আসছে। বিগত দশ বছরে সরকার এইখাতে ১৫ শতাংশ বরাদ্দ অতিক্রম করতে পারেনি। উপরন্তু কমেছে। গত দশ বছরের বাজেট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ভগ্নাংশের হিসাবে শিক্ষায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ ছিল। ঐ বছর ১৪.৩৯% বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে যা ১২.৬% এবং পরের দুই অর্থবছরে যথাক্রমে ছিল ১১.৫৩%, ১১.৬৮%। চলতি অর্থবছরে তা দশমিক শূন্য এক শতাংশ বেড়ে ১১.৬৯ শতাংশে এসে দাড়ায়। অর্থাৎ বাজেট বড় হওয়ার কারণে টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বাড়লে কমেছে শতাংশের হিসাবে। করোনাকালীন সময়ে শিক্ষাব্যবস্থা যখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাড়িয়ছে তখন তাকে ফেরাতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে ভগ্নাংশের হিসাবে। অন্যদিকে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ। এর মধ্যেও থেমে নেই শিক্ষা বাণিজ্য। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন হুমকীর মুখে, কমছে চাকরীতে প্রবেশের বয়সও। করোনা মহামারীতে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে শিক্ষা ও শিক্ষার্থীরা। অপরদিকে সরকারী নিয়োগ বন্ধ থাকা, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর ‘কর্মচারী ছাটাই’ নীতি অনুসরণের ফলে দেশে শিক্ষিত বেকারের কয়েকগুন বেড়েছে। তাই স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখেই অনতিবিলম্বে শিক্ষার চলমান অচলাবস্থা কাটিয়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন ও শিক্ষাব্যবস্থাকে গতিশীল করতে এই শিক্ষাখাতেই ন্যুনতম ২৫ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। একইসাথে নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও বাজেটে বরাদ্দ ও প্রণোদনা রাখার ব্যাপারে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।’
সংহতি বক্তব্যে কমরেড আবুল হোসাইন বলেন, ‘দেশের এই ক্রান্তিকালেও সরকার বাজেট পেশ করছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্তু সেই বাজেট দিয়ে যদি দেশের মানুষ উপকৃত না হয়, যদি পুঁজিপতিদের একচেটিয়া স্বার্থ উদ্ধার হয় তবে সেই বাজেট কোনো কাজে আসবে না। আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখেছি দেশের পুঁজিপতিরাই বাজেটের সিংহভাগ সুবিধা লাভ করেছে। দেশের মেহনতী শ্রমজীবী মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটে না বললেই চলে। ফলে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য আকাশছোঁয়া হয়ে দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্যখাতের এত দুর্ণীতি, অনিয়ম, লুটপাটের ঘটনা সামনে আসার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দ্বারা কতটুকু জনগণ উপকৃত হচ্ছে বা হবে সে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। তারপরেও করোনা মোকাবেলায় সরকারকে শিক্ষা, স্বাস্থ্যখাতকে সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে এবং সে অনুযায়ী বরাদ্দ রাখতে হবে। প্রতিবছর শিক্ষাখাতে যে বরাদ্দ দেয়া হয় তার সিংহভাগই ব্যয় হয় পরিচালনা খাতে, উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ থাকে নামমাত্র। সরকারের উচিত পরিচালন ব্যয়ের সমধিক বরাদ্দ শিক্ষার উন্নয়ন খাতের জন্য রাখা। অন্যথায় শিক্ষা ব্যবস্থায় চলমান সংকটের অবসান হবে বলে মনে করি না।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি শাফিউর রহমান সজীব, সহ-সভাপতি তারিকুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক তানভীন আহমেদসহ বিভিন্ন শাখা কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by M-W-D