বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণার উন্নয়ন ও অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার আহ্বান

প্রকাশিত: ১২:২৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১, ২০২১

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণার উন্নয়ন ও অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার আহ্বান

Manual7 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ০১ ডিসেম্বর ২০২১ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি উৎসব আজ বুধবার শুরু হয়েছে।

শতবর্ষ পূর্তি উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণার উন্নয়ন ও অতীত ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান।
বুধবার (০১ ডিসেম্বর ২০২১) দুপুর ১২টায় প্রধান অতিথি হিসেবে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বঙ্গভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন।

Manual8 Ad Code

বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি ও মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বর্ণিল সাজে সজ্জিত করা হয়েছে। ‘শতবর্ষের আলোয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে আলোক বাক্স ও রঙিন প্ল্যাকার্ডে উৎসবের আমেজ বইছে পুরো ক্যাম্পাসে।

Manual1 Ad Code

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শতবর্ষের তথ্যচিত্র প্রদর্শন ও শতবর্ষের ‘থিম সং’ পরিবেশন করা হয়। পরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পূর্তি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশিত ৬টি বই, ফটোগ্রাফি অ্যালবাম ও ওয়েবসাইট উদ্বোধন করবেন।

Manual8 Ad Code

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ. এস. মাকসুদ কামাল। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই লোটে শেরিং শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন।

অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এগিয়ে চলছে। কয়েক বছর পরই পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের ঢেউ বইতে শুরু করবে। তাই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে এ লক্ষ্যে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরা যাতে তথ্যপ্রযুক্তিসহ জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল শাখায় বিশ্বব্যাপী সফলতার সাথে এগিয়ে যেতে পারে সেভাবে তাদেরকে গড়ে তুলতে হবে।

রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, অবকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, ডিপার্টমেন্ট ও ইনস্টিটিউটের সম্প্রসারণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে, কিন্তু এক্ষেত্রে শিক্ষা ও গবেষণার মানই মূল সূচক। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শ্রম বাজারের চাহিদা ও যোগ্যতা বিবেচনা করে শিক্ষার মান ও শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা বাড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। আমি আশা করব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ যাত্রাপথে নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকবে।

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামের ইতিহাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বের কথা তুলে ধরে বলেন, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিল্প বিপ্লবের ঢেউ সামাল দেয়ার মতো দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। যদিও এই শিল্প বিপ্লবগুলোর আমরা সফল অংশীদার হতে পারিনি। বর্তমানে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মুখোমুখি দাড়িয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগে সারা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলার উপযোগী দক্ষ কর্মী গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের পথ দেখিয়ে যাবে এমনটিই প্রত্যাশ্যা আমাদের।

তিনি আরও বলেন, আজ শতবর্ষের এই উৎসবের ক্ষণে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে, জোর দিতে হচ্ছে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের দিকে। বিগত একশত বছরের অগ্রযাত্রায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে যেতে হয়েছে অনেক ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে। শুরুর এক দশকের মধ্যে যেভাবে সারাবিশ্বের দরবারে যে সুনাম অর্জন করেছেন। দুঃখজনক হলেও সত্যি সে অগ্রযাত্রার গতি নানা কারণে ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। সে কারণেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনার কথা ভাবতে হচ্ছে।

Manual2 Ad Code

অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, বাজেট দিলে বড় বড় বিল্ডিং হলেই যে আপনার গবেষণা-অধ্যাবসায় বাড়বে এমনটা না। এরিস্টটল, সক্রেটিস কিংবা মার্সাল- তাদের বড় বড় অট্টালিকা ছিল না, ঘর-বাড়ি ছিল না, কিন্তু তাদের অধ্যাবসায় ছিল, জ্ঞানের প্রচেষ্টা ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা আছেন তারাও সেইদিকে আরও একটু মনোযোগী হবেন, যাতে আমরা গর্ব করে বলতে পারি, আমার বিশ্ববিদ্যালয় পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ। আর তাদের গবেষণা দিয়ে আমার দেশের মানব উন্নয়ন বলেন, আমাদের দেশের ক্লাইমেটের কথা বলেন, সবক্ষেত্রে আমরা বিশিষ্টতা অর্জন করবো।

এ সময় শিক্ষার্থীদের সময় নষ্ট না করার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, আপনাদের উপর নির্ভর করছে আমাদের ভবিষ্যৎ। আপনারা সময় নষ্ট করবেন না। সময়টা বড় দরকার। একই সাথে ছাত্রদের মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার পরিবেশ সৃষ্টির আহ্বান জানান।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এছাড়া অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কাজী শহীদুল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান, ঢাকা ইউনিভার্সিটি এলামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ প্রমুখ।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code