হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপুরণ দিতে হবে: জাতীয় কৃষক সমিতি

প্রকাশিত: ৭:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২২, ২০২২

হাওরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপুরণ দিতে হবে: জাতীয় কৃষক সমিতি

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ২২ এপ্রিল ২০২২ : জাতীয় কৃষক সমিতির সভাপতি মাহমুদুল হাসান মানিক ও সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম গোলাপ আজ এক বিবৃতিতে বলেন, আপনারাননিশ্চয়ই জানেন যে, চলতি ২০২২ সালের এপ্রিল প্রথমার্ধে দেশের নানা অঞ্চলে বিশেষত সুনামগঞ্জ, সিলেট, নেত্রকোনাসহ সমগ্র হাওর অঞ্চলে কোন রকম বৃষ্টি-বন্যা ছাড়াই কেবল পাহাড়ী ঢলে বহু ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙে হাজার হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এতে এতদ্বাঅঞ্চলের কৃষি ও কৃষক চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সরকার হাওরে বাঁধ নির্মাণ, কৃষি ও কৃষকদের রক্ষায় যথেষ্ট আন্তরিক হয়েও এইখাতে বিপুল আর্থিক বরাদ্দ সত্ত্বেও প্রতিবছর একই ঘটনার দুঃখজনক পুনরাবৃত্তি ঘটছে। এই প্রেক্ষিতে জাতীয় কৃষক সমিতি ও হাওর অঞ্চলে কর্মরত বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপদ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলো সরেজমিনে পরিদর্শন করি। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে পারি যে, হাওরে বাঁধ নির্মাণে বরাদ্দকৃত সরকারি অর্থের লুটপাট চলছে। স্পষ্টতই দেখা যায় ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব শালী, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা সরাসরিভাবে জড়িত। এই অঞ্চলের ধান উৎপাদন সমগ্র দেশের ২০% এবার খাদ্য নিরাপত্তা বিপদগ্রস্ত হবে। একসময় ঠিকাদারদের মাধ্যমে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হতো।পরবর্তীতে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) মাধ্যমে এটি করা শুরু হয়। কিন্তু এই কমিটিতে সরকারি কর্মকর্তাদের যোগসাজশে স্থানীয় রাজনৈতিক টাউট-বাটপাররা ঢুকে পড়ে। ফলে যথাসময়ে ভাগ-বাটোয়ারাই তাদের কাছে মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। যার পরিনতিতে প্রতিবছর লাখ লাখ একর জমির হাজার কোটি টাকার ফসল কৃষকদের চোখের সামনে পানিতে তলিয়ে যায়।

আমরা দাবি করি যে, ১) হাওর এলাকার নদ-নদীগুলো জরুরী ভিত্তিতে খনন করতে হবে। ২) হাওরে বাঁধ নির্মাণে পিইসিকে আমূল সংস্কার করতে হবে। একে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে। ৩) প্রশাসন ও পাউবো কর্মকর্তাদের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। ৪) যারা দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে যুক্ত, তদন্ত করে তাদের আইনের আওতায় এনে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ৫) জরুরি ভিত্তিতে সমগ্র হাওড়ে শস্যবীমা চালু করতে হবে। ৬) ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

কৃষক ও কৃষি বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহ। বৈশ্বিক মহামারি করোনা পূর্বাপর দেশের ১৮ কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত দেশের খাদ্য সংস্থান করেছে এই শোষিত, বঞ্চিত, মেহনতী কৃষকরাই। প্রকৃতপক্ষে “কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে”। তাই হাওর অঞ্চলের কৃষিও কৃষকদের বাঁচাতে সরকারের সব ইতিবাচক উদ্যোগের সাথে আমরা সর্বাত্বকভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত আছি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ