নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, নিরাপত্তা ঝুঁকিও তত বৃদ্ধি পাবে: সাইফুল হক

প্রকাশিত: ৬:১০ অপরাহ্ণ, জুলাই ৯, ২০২৫

নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, নিরাপত্তা ঝুঁকিও তত বৃদ্ধি পাবে: সাইফুল হক

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ০৯ জুলাই ২০২৫ : বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক বলেছেন, “‘জাতীয় নির্বাচন যত বিলম্বিত হবে, দেশে বহুমাত্রিক নিরাপত্তা ঝুঁকিও তত বৃদ্ধি পাবে।”

গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

জুলাই-আগস্ট ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ২১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।

বুধবার (৯ জুলাই ২০২৫) রাজধানীর সেগুনবাগিচা তোপখানা রোডের সংহতি মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য কমরেড আকবর খান, কমরেড মীর মোফাজ্জল হোসেন মোশতাক, কমরেড সাইফুল ইসলাম ও কমরেড ফিরোজ আলী, কেন্দ্রীয় সংগঠক কমরেড বাবর চৌধুরী ও কমরেড জামিরুল রহমান ডালিম।

সংবাদ সম্মেলনে কমরেড সাইফুল হক আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির ক্রমাবনতিতে জনগণের জানমালের নিরাপত্তাহীনতা নতুন উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। দেশজুড়ে মব সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়া নতুন উৎকণ্ঠার জন্ম দিয়েছে। সরকারের অকার্যকারিতায় সামাজিক নৈরাজ্য দ্রুত রাজনৈতিক নৈরাজ্যের পথে বাঁক নিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে বোঝাপড়ার সংবাদে রাজনৈতিক দলসহ জনগণের মধ্যে একধরনের স্বস্তি দেখা গেছে।

সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মনস্তাত্ত্বিক দূরত্বও খানিকটা কমেছে। কিন্তু প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের বৈঠকের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার নির্বাচনের সম্ভাব্য তফসিল নিয়ে কোনো কথা বলতে পারেননি। এই পরিস্থিতি কাঙ্ক্ষিত নয়। নির্বাচন কমিশনের দিক থেকে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দেশবাসীকে আশ্বস্ত করা দরকার ছিল।
কারণ সংস্কার ও নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে নানা অপতৎপরতা চলছে। আশা করি নির্বাচন কমিশন এই সম্পর্কে নির্দিষ্টভাবে কথা বলবেন।’

কমরেড সাইফুল হক বলেন, ফ্যাসিবাদী জমানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার ও সংস্কারের প্রক্রিয়া জোরদার করার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য রয়েছে। নির্বাচনের আগে বিচারের উদ্যোগকে দেশবাসী দৃশ্যমান দেখতে চায়। আর সাংবিধানিক সংস্কার ছাড়া মতৈক্যের ভিত্তিতে বাকি সংস্কার সরকার নির্বাহী আদেশে এখনি সম্পন্ন করতে পারে।

তবে সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ও সংসদের প্রয়োজন হবে, যাতে জনসম্মতির ভিত্তিতে তা সংবিধানে যুক্ত হতে পারে। আশা করি এই জুলাই মাসের মধ্যে আমরা এই লক্ষ্যে জাতীয় সনদ স্বাক্ষর করতে পারব। এই পরিস্থিতি উত্তরণে রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে আস্থায় নিতে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ঘোষিত পার্টির ২১ দিনের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে, আগামী ১৬ জুলাই শহীদ আবু সাঈদ, পার্টির দুই শহীদ বদিউজ্জামাল ও আবদুল লতিফসহ গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রংপুরে তিন শহীদের কবরে শ্রদ্ধা জ্ঞাপনসহ সারাদেশে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন ও সমাবেশ। ১৮ জুলাই শহীদ পরিবারসমূহ ও আহতদের নিয়ে ঢাকার আশুলিয়ায় শ্রমিক গণসমাবেশ। ২৫ জুলাই নারায়ণগঞ্জে শহীদ ও আহতদের পরিবারসহ গণসমাবেশ। ২ আগস্ট ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে ‘গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি : গণআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভা। ৫ আগস্ট ২০২৫ গণ-অভ্যুত্থানের আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এছাড়া পার্টির পোস্টার ও ‘ডাক দিয়ে যাই’ শীর্ষক স্মরণিকা প্রকাশিত হবে।