কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমদের ৭১তম জন্মদিবস আজ

প্রকাশিত: ১:১১ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১১, ২০২৫

কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমদের ৭১তম জন্মদিবস আজ

বিশেষ প্রতিবেদক | মৌলভীবাজার, ১১ জুলাই ২০২৫ : মৌলভীবাজার থেকে প্রকাশিত জনগণের সংগ্রামের সহযোদ্ধা, একসময়ের জননন্দিত পত্রিকা সাপ্তাহিক মনুবার্তা’র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য আজীবন সংগ্রামী নেতা কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমদের ৭১তম জন্মদিবস আজ।

কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ ১৯৫৪ সালের ১১ জুলাই মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার রঘুনাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা সৈয়দ মনোয়ার আলী এবং মা সৈয়দা আমিরুন্নেসা খাতুন। সৈয়দ আবু জাফর আহমেদ দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে উচ্চতর পড়াশোনার জন্য তিনি ১৯৭৯ সালে জার্মানি যান।

ছাত্রজীবন থেকেই সৈয়দ আবু জাফর প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন। ছাত্ররাজনীতির পাশাপাশি সিলেটের বিভিন্ন পেশাজীবী- সামাজিক-সাংস্কৃতিক গণতান্ত্রিক আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন। ১৯৭০ সালে তিনি মৌলভীবাজার সরকারি কলেজ ছাত্রসংসদের সাহিত্য সম্পাদক, মৌলভীবাজার জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং পরবর্তী সময়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।

সিলেটে চা শ্রমিক হত্যার প্রতিবাদ করতে গিয়ে ১৯৭২ সালে সৈয়দ আবু জাফর প্রথম কারাবরণ করেন। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার অব্যবহিত পরই আবার ১৯৭৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি গ্রেপ্তার হন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় ফের তিনি গ্রেপ্তার হন এবং বিনা বিচারে দীর্ঘ এক বছর জেলজীবন কাটান। এ ছাড়া এরশাদবিরোধী আন্দোলনেও তিনি ছিলেন সমান সক্রিয়। গণতন্ত্রের ওই উত্তাল আন্দোলন- সংগ্রামে তাঁর সোচ্চার ভূমিকার জন্য তিনি বেশ কয়েকবার গ্রেপ্তার-নির্যাতনের শিকার হন।

প্রগতিশীল রাজনীতির পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি অঙ্গনেও সৈয়দ আবু জাফরের ছিল সমান বিচরণ। ছাত্রজীবন থেকেই সাংবাদিকতার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৯০ সাল থেকে মৌলভীবাজারের জনপ্রিয় সাপ্তাহিক মনুবার্তার সম্পাদক-প্রকাশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সিপিবির দশম ও একাদশ কংগ্রেসে দলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

পরবর্তীতে প্রেসিডিয়াম মেম্বার হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

জননন্দিত নেতা কমরেড সৈয়দ আবু জাফর আহমদ নিপীড়িত-বিপন্ন গণমানুষের আত্মার আত্মীয় ছিলেন; ছিলেন সামাজিক বৈষম্য ও অর্থনৈতিক মুক্তিসংগ্রামের অগ্রদূত।

আজ থেকে ছবছর আগে তিনি অনেকটা নিরবেই চলে গিয়েছিলেন। তাঁর প্রয়াণে আমরা হারিয়েছিলাম প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, সাম্য-মানবিক সমাজ গঠনের নিরন্তর লড়াইয়ের এক পুরোধাকে! তবে, লড়াই সংগ্রামের আলোকবর্তিকা হয়ে আছেন তিনি আমাদের মাঝেই।
২০১৯ সালের ২৯ মে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

জন্মদিনে স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, লাল সালাম কমরেড।