গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান দিবস আজ

প্রকাশিত: ৭:৪৪ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ৪, ২০২১

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান দিবস আজ

Manual8 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ০৪ নভেম্বর ২০২১ : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান দিবস অাজ।

Manual5 Ad Code

১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর গণপরিষদে বাংলাদেশের সংবিধান গৃহীত হয় এবং ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭২ (বিজয় দিবস) থেকে কার্যকর হয়।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন।

এর আগে, সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১৯৭২ সালের ১১ এপ্রিল ড. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ৩৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। একই বছরের ১৭ এপ্রিল থেকে ৩ অক্টোবর পর্যন্ত এই কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে বৈঠক করে। জনগণের মতামত সংগ্রহের জন্য মতামত আহ্বান করা হয়। সংগ্রহীত মতামত থেকে ৯৮টি সুপারিশ গ্রহণ করা হয়। ১৯৭২ সালের ১২ অক্টোবর গণপরিষদের দ্বিতীয় অধিবেশনে খসড়া সংবিধান বিল আকারে উত্থাপন করা হয়।

গণপরিষদে সংবিধানের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘এই সংবিধান শহীদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা-আকাঙ্খার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।’

Manual5 Ad Code

মূল সংবিধান ইংরেজি ভাষায় রচিত হয় এবং তা বাংলায় অনুবাদ করা হয়। তাই, এটি বাংলা ও ইংরেজি উভয় ভাষায় বিদ্যমান। তবে, ইংরেজি ও বাংলার মধ্যে অর্থগত বিরোধ দৃশ্যমান হলে বাংলা রূপ অনুসরণীয় হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের প্রথম অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধান ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ প্রণয়ন ও ঐতিহাসিক বিপ্লবী মুজিবনগর সরকার গঠন করা হয়েছিল ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল। এরসাথে সম্পৃক্ত সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
অল্পসংখ্যক ঘাতক রাজাকার-আল বদর-আল শামস-শান্তি কমিটির সদস্য ছাড়া বাংলাদেশের তৎকালীন প্রায় সাড়ে ৭ কোটি মানুষ ধর্ম-বর্ণ-বিশ্বাস-নারী-পুরুষ-আবাল বৃদ্ধ বণিতা-দলমত নির্বিশেষে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ, মজলুম জননেতা মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ (ভাসানী), অধ্যাপক মোজাফফর আহমদের নেতৃত্বাধীন ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপ (মোজাফফর), কমরেড মণি সিং-এর নেতৃত্বাধীন কমিউনিষ্ট পার্টি, কাজী জাফর-রাশেদ খান মেনন-হায়দার আকবর খান রনো’র নেতৃত্বাধীন কমিউনিষ্ট বিপ্লবীদের পূর্ব বাংলার সমন্বয় কমিটি (বর্তমানে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি), ছাত্র ইউনিয়ন [মেনন]-(বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী), ছাত্র ইউনিয়ন [মতিয়া]-(বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন), কমিউনিষ্ট পূর্ব বাংলার সমন্বয় কমিটি (দেবেন শিকদারের নেতৃত্বে), শ্রমিক-কৃষক কর্মীসংঘ, কমিউনিস্ট পার্টি (হাতিয়ার), পূর্ব বাংলার কৃষক সমিতি, পূর্ব বাংলা শ্রমিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশন (পূর্ব পাকিস্তান শ্রমিক ফেডারেশন), পূর্ব বাংলা বিপ্লবী ছাত্র ইউনিয়ন, উপরোক্ত অধিকাংশ বাম প্রগতিশীল রাজনৈতিক দল ও গণ-সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটিসহ অন্যান্য বামপন্থী প্রগতিশীল নানা গ্রুপ-দলের নেতৃত্বে বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের ফলেই পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর পরাজয় ঘটলো এবং পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশ নামে একটি নতুন রাজনৈতিকভাবে স্বাধীন সার্বভৌম দেশের অভ্যুদয় ঘটলো। জাতিগত নিপীড়ন ও শোষণের শিকার জনগণের বিজয় অর্জিত হয়।
১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয়। এই ঘোষণাকে অনুমোদন দানের জন্য তথা বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতার দাবীতে ১০ এপ্রিল তারিখে  ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ জারি করা হয়। ১৯৭০ সালে সাধারণ নির্বাচনে যারা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে জাতীয় অাইন পরিষদের সদস্য (M.N.A.) নির্বাচিত হয়েছিলেন এবং যারা প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্য (M.P.A.) নির্বাচিত হয়েছিলেন তাদের অধিকাংশই স্বাধীনতা ঘোষণার পর ভারতে চলে যান এবং তারা ১০ এপ্রিল কুষ্টিয়া জেলার মুজিবনগরে গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকার গঠন করেন এবং এই অস্থায়ী সরকারের মাধ্যমে স্বাধীনতার ঘোষণাকে অানুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করা হয়। ঘোষণা অনুযায়ী এটা ছিল স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের বিপ্লবী সরকার। বিপ্লবী সরকারের এই ঘোষণা ২৬ মার্চ থেকে কার্যকরী করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল স্বাধীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অস্থায়ী বিপ্লবী সরকার মুজিবনগরে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথ গ্রহণ করে।

যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ সাময়িকভাবে অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধানের কাজ করেছে। এটা যদিও একটা ঘোষণা ছিল তথাপিও এটাকে আমরা সংবিধান বলবো। কারণ ইহাতে রাষ্ট্রের প্রকৃতি, সরকার পদ্ধতি, সরকারের বিভাগ, সরকারের রূপরেখা পাওয়া যায়।

Manual3 Ad Code

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান সর্বমোট ১৭ বার সংশোধন হয়েছে। বাংলাদেশ সংবিধান দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন জাতীয় কমিটি ই-পোস্টার প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া দিবসটি উপলক্ষে আজ বিকালে শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বাহাত্তরের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা জাতীয় কমিটি।
আজ সন্ধ্যা ৭টায় একটি অনলাইন আলাপচারিতার আয়োজন করেছে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট) ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক।

Manual6 Ad Code

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ অামিরুজ্জামান বলেন, “গণপরিষদে সংবিধানের ওপর বক্তব্য রাখতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, এই সংবিধান শহীদের রক্তে লিখিত, এ সংবিধান সমগ্র জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার মূর্ত প্রতীক হয়ে বেঁচে থাকবে।” অামরা এর বাস্তবায়ন দেখতে চাই।

 

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code