একজন প্রিয়ভাজন সাংবাদিক মুনজের আহমদ চৌধুরী

প্রকাশিত: ১১:৩৭ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৪, ২০২০

একজন প্রিয়ভাজন সাংবাদিক মুনজের আহমদ চৌধুরী

Manual3 Ad Code

নুরুল ইসলাম শেফুল, মৌলভীবাজার, ১৪ জুন ২০২০ : গত ১৩ জুন শনিবার বিকেলে ঐতিহ্যবাহী মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবে মফস্বল সাংবাদিকতা দিয়ে শুরু করা বৃটেনের বিশিষ্ট সাংবাদিক, বাংলা ট্রিবিউন এর যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি, ইউকে বাংলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক, প্রিয়ভাজন মুনজের আহমদ চৌধুরীকে নিয়ে এক চা চক্রের আয়োজন করা হয়।

মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব সভাপতি প্রবীন সাংবাদিক এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পান্না দত্তের পরিচালনায় প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি এড ভোকেট নুরুল ইসলাম শেফুল, লন্ডন প্রবাসী সাংবাদিক সৈয়দ রুহুল আমিন, প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালেহ এলাহী কুটি, মনুবার্তা সম্পাদক জসিম উদ্দীন, মুক্তকথার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মামুনুর রশীদ মহসীন, দৈনিক যুগান্তর এর জেলা প্রতিনিধি হোসাইন আহমদ, ভোরের পাতা প্রতিনিধি এস এ কাকন, গণকন্ঠ প্রতিনিধি তানভীর আঞ্জুম আরিফ, বিটিভির ক্যামেরাপার্সন মো: আমির ও আলী হোসেন রাজন প্রমুখ। আগামী ২১ জুন তার লন্ডনে ফিরে যাওয়ার কথা।
মুনজের আহমদ চৌধুরী আমার প্রিয় মানুষদের একজন। বর্তমানে ৩৪ বছরের মুনজের দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছে। সেখানে গিয়েও সে সাংবাদিকতা ছাড়তে পারেনি। অত্যন্ত দাপটের সাথে সেখানেও সাংবাদিকতা করে যাচ্ছে। চ্যানেল আই-এর যুক্তরাজ্য অফিসে বার্তা সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছে দীর্ঘ কয়েক বছর। এখন সে বাংলা ট্রিবিউন-এর যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি। দেশে সাংবাদিকতাও করেছে দাপটের সাথে। প্রথমে মনুবার্তা পরে পাতাকুঁড়ির দেশে কলাম লিখতো। লেখাগুলো অত্যন্ত উচু মানের হওয়ায় অনেকেই পাতাকুঁড়ির দেশের সম্পাদক হওয়ার কারণে আমার কাছে অভিযোগ করতেন লেখাগুলো তার নয়। অন্য কেউ লিখে দিয়েছে। তাই না ছাপাবার জন্য বলতেন। তাদের অভিযোগকে গুরুত্ব না দিয়ে তার লেখাগুলো আমি ছাপিয়ে গেছি। তাদের অভিযোগ যে মিথ্যে ছিল বর্তমানের মুনজের তার প্রমান। দেশে থাকাকালনি সময়ে সে কাজ করেছে দৈনিক আমাদের সময়-এ। আমাদের সময়ের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান তাকে খুব স্নেহ করেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে দেশে এসেছিলো। দেশে থাকা তার মাকে নিয়ে যায় ওমরা পালন করতে। ওমরা থেকে ফিরে আসার পর লন্ডনে ফিরে যাওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে ফিরতে পারেনি। যদিও দেশে আসার আগে ৪ বছরের ছেলে জহির জামিল চৌধুরীকে তার ফুফুর কাছে রেখে আসতে হয়েছিল।
লকডাউনে আমরা যখন ঘরবন্দি, মুনজের তখন তার পরিচিত মানুষদের খোঁজখবর নিচ্ছে, তাদের পাশে দাড়িয়েছে। করোনার এই সময়ে প্রতিদিন সাধারণ মানুষের পাশে ছিল। সাধ্যের সবটুকু নিয়ে থাকার চেষ্টা করেছে অনেকটাই নিরবে।
ইউকে-বাংলা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে মৌলভীবাজার পৌরসভা ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ১০০ পরিবারের মধ্যে ইফতার সামগ্রী ও নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে।
রাজনগর প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক প্রয়াত সাংবাদিক ও কবি আহমেদ ফয়সল আজাদকে আর্থিক সহযোগীতা করেছে ইউকে-বাংলা প্রেসক্লাব। রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজার ইউনিয়নে আহমেদ ফয়সল আজাদের বাবা মোঃ আজাদ মিয়া ও ভাই হুমায়ুন রশীদের কাছে ইউকে-বাংলা প্রেসক্লাব এর পক্ষে মুনজের আর্থিক সহযোগীতা হস্তান্তর করে।
মৌলভীবাজার অনলাইন প্রেসক্লাবের সাবেক সম্পাদক প্রয়াত মতিউর রহমানের অসহায় পরিবারের বাড়ীতে গিয়ে খাদ্যসামগ্রী ও আর্থিক সাহায্য প্রদান করেছে।
বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ ও নিম্ন আয়ের বিভিন্ন পেশার মানুষের কল্যাণে শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকার অনেক উদ্যোগ নিলেও সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও মফস্বল সাংবাদিকদের আর্থিক সংকটের বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। কিছু কিছু সাংবাদিক নেতা এ বিষয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও সরকার কোন পাত্তাই দেয়নি। বেশিরভাগ সংবাদপত্র ও তার উপকারভোগী মালিকরা বেতন ভাতা দেওয়াতো দূরের কথা, সংকট দেখিয়ে অনেককে চাকরিচ্যুত করেছেন। এতেও এগিয়ে আসেননি দেশ সেরা কোন সাংবাদিক নেতা। এমনিতেই মফস্বলের সাংবাদিকরা সবসময়ই বঞ্চিত, অবহেলিত। এদের পাশে দাঁড়ানোর মত না আছে কোন সংগঠন, না আছে কোন ব্যক্তি উদ্যোগ। করোনা সংকটকালীন সময়ে কেমন আছেন মফস্বল সাংবাদিকরা তা জানতেও চায়নি কেউ।
কিন্তু মফস্বল সাংবাদিকতা দিয়ে শুরু করা বর্তমানে বৃটেনের বিশিষ্ট সাংবাদিক মুনজের আহমদ চৌধুরী ঠিকই অনুভব করেছে। একজন মধ্যম আয়ের মানুষের পক্ষে সারা দেশের মফস্বল সাংবাদিকদের দায়িত্ব নেওয়া সম্ভব নয় বিধায় বিবেকের তাড়নায় পাশে দাড়িয়েছে নিজ জেলা মৌলভীবাজারের সাংবাদিকদের পাশে। জেলার ৭টি উপজেলার প্রায় ৭০ এর অধিক সংকটাপন্ন সাংবাদিকের মোবাইলে পৌঁছে দিয়েছে তার ক্ষুদ্র উপহার। এ বাবদ ব্যক্তিগত তহবিল থেকে কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়েছে তার।
আমার জানামতে শুধু মৌলভীবাজার জেলা নয়, সারা বাংলাদেশের মধ্যে মুনজেরই একমাত্র সাংবাদিক, যে ব্যাক্তি উদ্যোগে মানবিক সাহায্য নিয়ে সহকর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। অতীতেও সে সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকদের যে কোন প্রয়োজনে পাশে দাড়িয়েছে সব সময়। এ ঘটনায় মুনজেরের প্রতি ভাললাগা ও ভালবাসা আরো বেড়ে গেল। বর্তমানে অনেকের টাকা ব্যাংকে জমা আছে কিন্তু খরচ করার মতো মন মানসিকতা নেই কিন্তু প্রবাসি হয়ে ও নিজের জেলার সহকর্মীদের প্রতি যে ভালবাসা মুনজের দেখিয়েছে তা তার সহকর্মীরা আজীবন মনে রাখবে। সৎ, সাহসি সাংবাদিক মুনজেরের প্রতি রইল ভাল লাগা ও ভালবাসা। মুনজেরের সুস¦াস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করি।

Manual5 Ad Code

নুরুল ইসলাম শেফুল অ্যাডভোকেট
সিনিয়র সহসভাপতি
মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।

Manual1 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code