নারী অধিকারের কিংবদন্তি কণ্ঠস্বর কমলা ভাসিনের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ১২:১৫ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪

নারী অধিকারের কিংবদন্তি কণ্ঠস্বর কমলা ভাসিনের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক | নয়াদিল্লি (ভারত), ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ : ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রখ্যাত নারী অধিকারকর্মী, লেখক, প্রশিক্ষক, কথাসাহিত্যিক কমলা ভাসিনের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

২০২১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ভোরে মারা যান তিনি।

উপমহাদেশের তথা দক্ষিণ এশিয়ার নারীবাদী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব তিনি। পশ্চিমা নারীবাদী ধ্যানধারণার সঙ্গে স্থানীয় প্রেক্ষিত যুক্ত করে সহজ ভাষায় তিনি এ উপমহাদেশে নারীবাদ প্রচার করেছেন, নারী-পুরুষ বৈষম্যহীন সমাজ গঠনের মৌলিক ভাবনাগুলো সঞ্চালিত করেছেন। তিনি একজন খ্যাতিমান জেন্ডার প্রশিক্ষক।

কাজের সুবাদে তিনি প্রায়ই বাংলাদেশে আসতেন এবং বাংলাদেশে নারী আন্দোলনকে সাম্প্রতিক সময়ে সক্রিয় রাখতে তার ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ।

ভারতীয় উন্নয়নশীল নারীবাদী কর্মী, কবি, লেখক ও সমাজ বিজ্ঞানী তিনি। ১৯৭০ সালে শুরু হওয়া বাসিনের কাজটি, লিঙ্গ, শিক্ষা, মানব বিকাশ এবং প্রচার মাধ্যমের উপর আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। তিনি ভারতের নতুন দিল্লিতে থাকতেন। তিনি সঙ্গত – একটি নারীবাদী অন্তর্জাল নিয়ে তার কাজ এবং তার কিঁউকি ম্যায় লডকি হুঁ, মুঝে পঢ়না হ্যায় কবিতার জন্য সুপরিচিত। ১৯৯৫ সালে তিনি একটি সম্মেলনে জনপ্রিয় কবিতা আজাদী (স্বাধীনতা) এর একটি পরিমার্জিত, নারীবাদী সংস্করণ আবৃত্তি করেছেন। তিনি ওয়ান বিলিয়ান রাইজিং এর দক্ষিণ এশিয়ার সমন্বয়কারী।

২০০২ সালে তার প্রতিষ্ঠিত এবং তার উপদেশে চালিত সঙ্গতের সাথে কাজ করার জন্য ইউএন এর চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। নারীবাদী তত্ত্ব এবং সম্প্রদায়ের কর্মকে একত্রিত করে, এমনই এক ধরনের বিশ্বাসকে তিনি সমর্থন করেছেন। তিনি বঞ্চিত উপজাতীয় নারীদের সাথে এবং খেটে খাওয়া মানুষদের সাথে, পোস্টার, নাটক এবং অন্যান্য সাহিত্য সম্বন্ধহীন পদ্ধতি ব্যবহার করে কাজ করেছেন, স্বল্প সাক্ষর সম্প্রদায়ের গভীরে চলে গেছেন। তিনি সবসময় বলেছেন যে, কার্যকর পরিবর্তন আনার জন্য, দলগত ধ্বনির সাথে সাথে সম্প্রদায়ের আন্দোলন ও চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি নিজেকে বলেছেন ‘মধ্যরাত্রি প্রজন্ম’, স্বাধীনতার কাছাকাছি সময়ে জন্মগ্রহণকারী ভারতীয়দের প্রজন্মের একটি উল্লেখ, ‘মধ্যরাতের ঘণ্টা বাজার সময়..’. পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি সবচেয়ে বড় ছিলেন। তার বাবা রাজস্থানের একজন ডাক্তার ছিলেন। তিনি ভারতের গ্রামগুলিতে বড় হয়েছেন এবং এটি তাকে ভারতের গ্রামগুলিতে নারীর সমস্যা সম্পর্কে বুঝতে সাহায্য করেছিল। এই অভিজ্ঞতা তার জীবনে এবং ভবিষ্যতের কর্মজীবনে সহায়ক হয়েছে। তিনি তার স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর পড়াশোনা একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় করেছেন। তিনি পরে তার অভিজ্ঞতা থেকে বলেছেন যে, সেই সময় তিনি কোন অনুপ্রেরণা পাননি এবং তিনি দ্বিতীয় বিভাগ স্নাতক পাস করেন।

সেবা মন্দির এর জন্য কাজ করার সময় রাজস্থানে তার (এখন প্রাক্তন) স্বামীর সাথে দেখা হয়। তিনি পরে দেখেন যে, তার স্বামী অত্যন্ত নারীবাদী ব্যক্তি এবং প্রগতিশীল ধারণাকে সমর্থন করেন। তার স্বামী চেয়েছিলেন যে, তাদের সন্তানরা তাদের দুজনেরই পদবী গ্রহণ করবে এবং বাসিনের ৭০-বছর বয়সী মায়ের তাদের সাথে থাকাকে সমর্থন করেছিলেন। কিন্তু সবকিছু পাল্টে যায়, যখন গার্হস্থ্য হিংসা এবং অবিশ্বস্ততা ঘটতে থাকে।

তার প্রাপ্তবয়স্ক বড় মেয়ের মৃত্যু তাকে সবচেয়ে বেশি আঘাত দেয়, সে তার অত্যন্ত কাছের ছিল। তার একটি ছেলে ছিল, টিকাকরণের পর তার শরীরে খুব খারাপ প্রতিক্রিয়া হয়।

শিক্ষা ও পেশা

রাজনৈতিকীকরণের শুরু

কমলা বাসিন রাজস্থান বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। এবং তারপরে ফেলোশিপ নিয়ে পশ্চিম জার্মানির মুয়েনস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়নে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে অধ্যয়ন শুরু করেন। তারপরে তিনি বাড হনেফ এর জার্মানি ফাউন্ডেশন ফর ডেভেলপমেন্ট কান্ট্রিজ এর ওরিয়েন্টেশন কেন্দ্রে প্রায় এক বছরের জন্য শিক্ষা দিয়েছেন। তারপর তিনি ভারতে ফিরে, সেখানে যা শিখেছেন তার বাস্তবায়ন করতে চাইলেন। তাই, তিনি সেবা মন্দিরের জন্য কাজ শুরু করেন, এঁরা প্রাকৃতিক সম্পদের স্থায়িত্ব নিয়ে প্রাথমিকভাবে কাজ করেন। সেখানে তিনি শিখলেন, জাতি প্রথা কীভাবে ভারতীয় সমাজে প্রচলিত, এবং কীভাবে বৈষম্য স্পষ্টতঃ প্রতীয়মান, এমনকি শাসনক্ষেত্রেও। প্রতীয়মান সত্য ছিল এই যে, ব্রাহ্মণদের কুয়ো কখনো শুকিয়ে যাবে না, কারণ তারা প্রতি বছর কুয়ো খোঁড়ার জন্য রাজ্য তহবিল পেত। এই সময়েই তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে জাতি প্রথা এবং নারীবাদ দুটিই বিভাগ অনুযায়ী চলে।

১৯৪৬ সালের ২৪ এপ্রিল জন্ম নেয়া কমলা বড় হয়েছেন ভারতের রাজস্থানে। তিনি জেন্ডার সমতা, মানবাধিকার, শান্তি প্রতিষ্ঠাসহ বেশিকিছু বিষয় নিয়ে তার বিভিন্ন লেখালেখি আছে।
তিনি নিজেকে একজন গীতিকার হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসতেন। বিভিন্ন গণআন্দোলনের সময় তিনি গান লিখেছেন। শিশুদের জন্য, নারীদের হয়ে নানা সময় তিনি কবিতা লিখেছেন। নিজের সম্পর্কে তার মূল্যায়ন ছিল, ‘আমি একজন নারীবাদী, আমি একজন মানবাধিকার কর্মী, আমি একজন কবি, সমাজসচেতন মানুষ, আমি কমলা।
সত্তর দশক থেকে কমলা ভাসিন ভারতের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও নারী আন্দোলনের বিশিষ্ট কণ্ঠস্বর ছিলেন।

ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রদ্ধা
ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার প্রখ্যাত নারী অধিকারকর্মী, লেখক, প্রশিক্ষক, কথাসাহিত্যিক কমলা ভাসিনের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কমরেড নূর আহমেদ বকুল।

সৈয়দ আমিরুজ্জামানের শ্রদ্ধা

ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার কিংবদন্তী নারী অধিকারকর্মী, লেখক, প্রশিক্ষক, কথাসাহিত্যিক কমলা ভাসিনের ৩য় মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান।

তাঁর ৩য় মৃত্যুবার্ষিকীতে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক তাপস কুমার ঘোষ, তৃণমূল নারী উদ্দোক্তা সোসাইটি (গ্রাসরুটস)-এর মৌলভীবাজার জেলা শাখার সভাপতি শ্যামলী সূত্রধর ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা তাহমিনা বেগম, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি দেওয়ান মাসুকুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন এবং শ্রীমঙ্গল পৌর শাখার সভাপতি শেখ জুয়েল রানা ও সাধারণ সম্পাদক রোহেল আহমদ, বাংলাদেশ যুবমৈত্রীর শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি জামাল মুশরাফিয়া, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার সভাপতি মৌ দেব ও সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াসা ঘোষ।