সিলেট ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১২:১১ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২৫
এমন অনেকের কথা জানি যাদেরকে আল্লাহ অনেক অর্থবিত্ত দিয়েছেন। কিন্তু একটা সন্তানও দেননি। অনেক ডাক্তার, কবিরাজ, মাজার, তাবিজেও কাজ হয়নি। আবার আল্লাহ অনেককে অনেকগুলো সন্তান দিয়েছেন। কিন্তু শেষ বয়সে থাকতে হচ্ছে বৃদ্ধাশ্রমে। সন্তানরা অনেক টাকার মালিক কিন্তু মনুষ্যত্বের মালিক হতে পারেনি। একজন স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার কথা শুনেছি যার তিন ছেলে একজন কানাডায়, একজন অষ্ট্রেলিয়া আর একজন আমেরিকায় থাকেন। কিন্তু তিনি দেশে থাকতেন একা। জীবনের সমস্ত সঞ্চয় দিয়ে একজনকে ইঞ্জিনিয়ার, একজনকে প্রফেসর ও আরেকজনকে ডাক্তার বানিয়েছেন। কিন্তু মৃত্যুর সময়ে কেউ পাশে থাকতে পারেনি। সবাই ব্যস্ত। তার লাশটা নেয়ার মতও কেউ পাশে ছিল না।
বিখ্যাত মানুষেরা খুব একা। তারেক শামসুর রহমান স্যার একা ফ্ল্যাটে মরে পড়ে রইলেন। কবরীর সন্তানেরা কেউ পাশে নেই। তিনি সাক্ষাৎকারে বললেন, ”আমি আসলে খুব একলা মানুষ।”
প্রমোশান পেয়ে সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হয়েছিলেন। পরপর তিনটা বিয়ে করলেন। একজনও পাশে নেই। তিনি ফ্ল্যাটে একা থাকেন। নিজে রান্না করেন। তিনি নিজেই বলতেন, ”আমি খুব একা”।বলতেন, “খারাপ লাগলে হারমোনিয়াম বাজাই”!
মানুষের শেষ জীবনটা খুব একা কাটে। যাদের ছেলেমেয়ে দূরে থাকে। তারা দূর পথের দিকে তাকিয়ে থেকে থেকে অপেক্ষায় দিন কাটে। জীবন আসলে এমনই। এ জীবনের সফলতা, ব্যর্থ্যতা নিয়ে হাহুতাশ করার কিছুই নেই।
মানুষ একা খুব একা। শেষ জীবনে সবাই একা হয়ে যায়। বিখ্যাত, সেলিব্রেটি, ধনীরা আরো বেশি একা।
এখন যার কথা বলব, তিনি গ্রামের এক মসজিদের মুয়াজ্জিন। পাচ ওয়াক্ত আজান দেন। কিছু জমিতে চাষ করেন। তার পাঁচ ছেলে-মেয়ে। কেউ খুব বেশি শিক্ষিত নয়। দুই মেয়ের একজনকে নিজ গ্রামে আরেকজনকে পাশের গ্রামে বিয়ে দিয়েছেন। তিন ছেলের একজন বাবাকে কৃষি কাজে সাহায্য করেন। বাকী দু’ জন একজন মাদ্রাসার শিক্ষক। আরেকজন স্থানীয় বাজারের ফার্মেসীর ব্যবসা করেন। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে তিনি সুখেই আছেন। কোন আফসোস নেই। সবসময় ধবধবে ইস্ত্রি করা সফেদ পাঞ্জাবী পড়েন। খুব বেশি চাওয়া পাওয়াও নেই। কেমন আছেন জিজ্ঞেস করলে বলেন, আলহামদুলিল্লাহ। মসজিদ থেকে কত টাকা পান বললে, বলেন আলহামদুলিল্লাহ। ছেলে-মেয়ে সবাই পাশে থাকে। কোন একাকিত্ব নেই। কেউ প্রতিষ্ঠিত হল না এজন্য হাহাকার নেই।
আসলে কে সফল বাবা মা?
কে সুখী? কে সফল? এগুলোর কোন নির্দিষ্ট প্যারামিটার নেই।
ছোটবেলায় ট্র্যান্সলেশান মুখস্থ করতাম ধার্মিকেরাই সুখী? The virtuous are happy.
এটাই ঠিক বলে মনে হয়। তবে চরমপন্থি ধার্মিক না।
আল্লাহ আছে কি নাই, সে তর্কে আজ যাব না। তবে সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস একটি পজিটিভ ব্যাপার।
ধার্মিকেরা হতাশ হয় না, সব কিছুর জন্য তাদের ভরসা করার কেউ থাকে। আত্মতুষ্টির পরিমানটা বেশি থাকে।
#
মাসুদুল আলম
সহকারী অধ্যাপক
শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ
সম্পাদক : সৈয়দ আমিরুজ্জামান
ইমেইল : rpnewsbd@gmail.com
মোবাইল +8801716599589
৩১/এফ, তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০।
© RP News 24.com 2013-2020
Design and developed by ওয়েব নেষ্ট বিডি