বিশেষ প্রতিনিধি | শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ১১ আগস্ট ২০২৫ : ভুল চিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্ত শ্রীমঙ্গলের এক রোগী প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন মহোদয়ের বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সোমবার (১১ আগস্ট ২০২৫) সকালে শ্রীমঙ্গল শহরের ক্ষুদে ব্যবসায়ী মো. মোক্তার মিয়া এ অভিযোগ দায়ের করেন।
এছাড়াও আরপি নিউজের সম্পাদক ও দ্য ফিনান্সিয়াল পোস্টের বিশেষ প্রতিনিধি কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান, মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. মামুনুর রহমান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিনথিয়া তাসনিম, শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আ ফ ম আব্দুল হাই ডন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন আরাফাত রবিন, ডায়াগনস্টিক ওউনার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরে প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও সদয় অবগতির জন্য অনুলিপি প্রেরণ করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাবরেও বিশেষভাবে আরেকটি একই অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি।
লিখিত অভিযোগ পত্রে মোক্তার মিয়া বলেন, “তলপেটে প্রচন্ড ব্যথায় সহ্য করতে না পেরে চিকিৎসার জন্য শ্রীমঙ্গল শহরের (ইসলামী ব্যাংক সংলগ্ন) সৈয়দ ফার্মেসীতে ডা. মো. আমিনুল ইসলাম মহোদয়ের দ্বারস্থ হই। তিনি চেকআপ পূর্বক প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। এতে সিবিসি, HBs Ag (ICT), USG of Whole Abdomen ইউরিন R/ME টেস্টগুলো ডক্টরস পয়েন্ট থেকে করানোর নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশনা অনুযায়ী ডক্টরস পয়েন্ট টেস্টগুলো করাই এসব টেস্ট দেখে ঐ প্রেসক্রিপশনে ঔষধগুলো লিখে দেওয়ার সময় জানান আমার পিত্তথলিতে পাথর, তার জন্য ১৫ দিনের মধ্যে অপারেশন করতে হবে বলে জানান। ঔষধ খাওয়ার পর দিনকে দিন আমার অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছিল। সারা শরীর অবশ হয়ে যায়, চোখে সমস্যা বেড়ে যায়, সারা শরীরে ব্যথা-বেদনা বেড়ে যেতে থাকে। এই অবস্থায় দিশেহারা ও বাধ্য হয়ে সিলেটের ডাক্তার এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ইউরোলজী বিভাগের সহকারী অধ্যাপক, ইউরোলজীস্ট ও এন্ড্রোলজীস্ট ডা. মো. শফিকুল ইসলাম (লিয়ন) মহোদয়ের দারস্থ হই (প্রতি শুক্রবারে তিনি শ্রীমঙ্গলে আসেন)। তিনি সিলেট ট্রাস্ট মেডিকেল সার্ভিসেস থেকে Serum Creatinene, USG of Whole Abdomen MU, PVR, Bed Tissue, Vacutainer Red 4ml, Vacutainer Needle টেস্টগুলো করানোর জন্য নির্দেশনা দেন। তার নির্দেশনা ও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী টেস্টগুলো করাই। এতে দেখা যায়, আমার পিত্তথলিতে কোনো পাথর নাই। টেস্ট রিপোর্টগুলো দেখার পর তিনি রেপার করেন সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালের সার্জারী বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবু বকর মো. মোস্তফা মহোদয়ের কাছে। তিনি টেস্ট রিপোর্ট গুলো দেখে প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। তার চিকিৎসা মতে আমি সম্পূর্ণ সুস্থ হ। এর পরে চোখের সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় মৌলভীবাজারের মাতারকাপনস্থ বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা করাই। তাঁর চিকিৎসা মতে আমি সম্পূর্ণ সুস্থ হই। এখানে মূল অভিযোগ, ডক্টরস পয়েন্ট-এর বিরুদ্ধে। ডক্টরস পয়েন্ট-এর টেস্ট রিপোর্ট গুলার কারনে ভুল চিকিৎসায় আর্থিক ও মানসিক ও শারিরিকভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হই। ভুল চিকিৎসার পরিপ্রেক্ষিতে শুধুমাত্র আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা মাত্র।”
প্রতিকার ও ক্ষতিপূরণ চেয়ে লিখিত অভিযোগ পত্রে মোক্তার মিয়া আরও বলেন, “ভূল চিকিৎসায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায়, ডক্টরস পয়েন্টের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মহাদয়ের সুমর্জি কামনা করছি।”
অভিযোগপত্র গ্রহণকালে শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিনথিয়া তাসনিম বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান।
তদন্ত শেষে সিভিল সার্জন মহোদয়ের নির্দেশনা ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়ের সহযোগিতায় যথাযথ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Post Views:
১,১০১