অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা : ৭ আসামি কারাগারে এবং ৩ জনের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

প্রকাশিত: ৫:৩৬ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০২০

অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা : ৭ আসামি কারাগারে এবং ৩ জনের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

Manual3 Ad Code

কক্সবাজার, ০৬ আগস্ট ২০২০: সেনা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৭ জন আসামিকে আজ কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Manual8 Ad Code

সিনহা হত্যা মামলার এই ৭ আসামি আজ বৃহস্পতিবার কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আত্মসর্মপনের পর তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন আদালত।
এদিকে র‌্যাবের পক্ষ থেকে ৭ জনের বিরুদ্ধে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়। রিমান্ড শুনানি শেষে আদালত মামলার প্রধান আসামি কামলাপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী, ২ নং আসামী টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিতের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাকি আসামিদের জেল গেটে জিজ্ঞাবাদের নির্দেশ দেয়া হয়।
সিনহা রাশেদ হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৯ জনকে আসামি করে বুধবার কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রট আদালতে মামলা দায়ের করেন তার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়কে (র‌্যাব) এ ব্যাপারে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। একই সাথে টেকনাফ থানাকে এই মামলা নিয়মিত মামলা হিসাবে রেকর্ড করার নির্দেশ দেন। আদালতের এই আদেশ বুধবার রাত ১০ টার দিকে টেকনাফ থানায় পৌঁছালে মামলাটি নথিভূক্ত করা হয়।
আজ সকালে চট্টগ্রামের বাসা থেকে মামলার ২ নং আসামী টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে কঠোর প্রহরায় কক্সবাজার নিয়ে আসে র‌্যাব ও পুলিশের দু’টি টিম। অসুস্থতাজনিতকারণ দেখিয়ে তিনি ছুটি নিয়ে চট্টগ্রামের বাসায় অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকে ওসি প্রদীপকে কক্সবাজার নিয়ে আসা হয়। প্রদীপকে সরাসরি কক্সবাজারের আদালত প্রাঙ্গনে নিয়ে আসা হয়। অন্য ৬ আসামি পুলিশ হেফাজতে বিকালেই আদালতে হাজির হন। এই মামলার এক নম্বর আসামি হচ্ছেন টেকনাফের কামলাপুর তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী। মামলায় অন্য আসামিরা হলেন, এসআই নন্দ দুলাল রক্ষিত, কনস্টেবল সাফানুর করিম, কনস্টেবল কামাল হোসেন, কনস্টেবল আবদুল্লাহ আল মামুন, এএসআই লিটন মিয়া, এএসআই টুটুল এবং কনস্টেবল মো. মোস্তফা।
এএসআই টুটুল এবং কনস্টেবল মোস্তফাকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
৭ আসামির জামিন আবেদন জানিয়ে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা বলেন- টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলী মাদক প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁরা নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক বার সরকারি পদকে ভূষিত হয়েছেন। অন্যান্য আসামীরাও তাদের দায়িত্ব যথাযতভাবে পালন করেছেন মাত্র। তাঁরা কোনভাবেই মেজর সিনহা হত্যাকান্ডে অভিযুক্ত হতে পারে না। আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন- এডভোকেট রাখাল চন্দ্র মিত্র এবং এডভোকেট মো. জাকারিয়া।
অন্যদিকে সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, সরকারপক্ষ থেকে তারা জামিনের বিরোধীতা করে তাঁরা বলেছেন, মেজর সিনহা হত্যা জামিন অযোগ্য অপরাধ। আসামিদের জামিন দেয়া হলে মামলার সুষ্ঠু তদন্ত কাজ ব্যাহত হওয়ার আশংকা রয়েছে। মামলায় পাবলিক প্রসিকিউটরকে সহযোগিতা করেন কোর্ট পরিদর্শক প্রদীপ দাশ।
উভয় পক্ষের শুনানী শেষে আদালতের বিচারক হেলাল উদ্দিন আসামিদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
এরআগে এই ঘটনায় উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার এম মিজানুর রহমানকে আহবায়ক করে গঠিত এই কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন পুলিশের চট্টগ্রাম জোনের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. জাকির হোসেন, সেনাবাহিনী কক্সবাজারের রামুস্থ ১০ ডিভিশনের জেওসির প্রতিনিধি লে. কর্নেল সাজ্জাদ এবং কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট মো. শাহজাহান আলী। কমিটি মঙ্গলবার থেকে তদন্ত কাজ শুরু করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার কমিটির সদস্যরা ঘটনাস্থল পরির্দশন করেন। এই সময়ে তাঁরা প্রত্যক্ষদর্শীসহ কয়েকজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

Manual2 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code