সবচেয়ে শক্তিশালী ফল ডুমুর

প্রকাশিত: ৪:২২ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩০, ২০২০

সবচেয়ে শক্তিশালী ফল ডুমুর

Manual5 Ad Code

সৈয়দ অারমান জামী || ৩০ অক্টোবর ২০২০ : পাকা কিংবা শুকনো, দুই অবস্থাতেই এই ফল খাওয়া যায়। হালকা মিষ্টি স্বাদের এই ফলের উপরিভাগ অনেক পাতলা এবং ভেতরে ছোট ছোট বীজ আছে।
ডুমুর আমাদের দেশের অতিপরিচিত একটি ফল। শহরে-গ্রামে সব জায়গায় রাস্তার পাশে ডুমুরের গাছ জন্মে। ডুমুরের গাছের নিচে ডুমুর ফল পড়ে থাকে। তবে খুবই অবাক করা বিষয় হলো যে গাছের নিচে পড়ে থাকা একদম বিনে পয়সার এই ফলটি কিন্তু ভীষণ উপকারী। পাকা কিংবা শুকনো, দুই অবস্থাতেই এই ফল খাওয়া যায়। হালকা মিষ্টি স্বাদের এই ফলের উপরিভাগ অনেক পাতলা এবং ভেতরে ছোট ছোট বীজ আছে।

Manual1 Ad Code

সাধারণত দুই ধরনের ডুমুর দেখা যায়- গোল ডুমুর এবং যজ্ঞ ডুমুর। দুটোই খাওয়া যায়। পাকা ডুমুর বেশ রসালো এবং হালকা মিষ্টি স্বাদযুক্ত। গরমে পাকা ডুমুরের জুস বেশ আরামদায়ক একটি পানীয়। পাকা ডুমুর দিয়ে জেলি এবং চাটনি তৈরি করা যায়। কাঁচা ডুমুর তরকারি হিসেবে রান্না করলে খেতে বেশ উপাদেয় এবং সুস্বাদু হয়। ডুমুর শুকিয়ে সংরক্ষণ করা যায়। আমাদের দেশে শুকনো ডুমুরের প্রচলন নেই। শুকনো ডুমুরও বেশ পুষ্টি সমৃদ্ধ। শুকনো ডুমুরের প্রায় ৬০ ভাগই চিনি।

ধারণা করা হতো যে, গ্রিক পণ্ডিত প্লেটো অ্যাথলেটদের এ কারণেই বেশি করে ডুমুর খাওয়ার পরামর্শ দিতেন। ডুমুরে চিনির পরিমাণ এবং বিভিন্ন ভিটামিন এর আধিক্যের জন্য বলা হয়ে থাকে যে, মানুষ শুধু ডুমুর খেয়েই সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে পারে। আসুন জেনে নিই খুবই সহজলভ্য এই ডুমুর ফলের পুষ্টিগুণ এবং উপকারিতা।

Manual2 Ad Code

পুষ্টিগুণ

Manual6 Ad Code

ডুমুর অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি ফল। বিশেষ করে এনার্জি, ক্যালসিয়াম এবং আঁশে ভরপুর। যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিষ্ট্রেশন বা এফডিএ-এর তথ্য মতে প্রতি ১০০ গ্রাম ডুমুরে কার্বোহাইড্রেট ৬৩.৮৭ গ্রাম, শর্করা ৪৭.৯২ গ্রা্ম, আঁশ ৯.৮ গ্রাম, ফ্যাট ০.৯ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ১৬২ মিলিগ্রাম পাওয়া যায়। এছাড়াও এতে আছে ভিটামিন বি, রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, থায়োমিন, প্যান্টোথেনিক এসিড, ফোলেট, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়ামের মত উপকারী সব খনিজ উপাদান। যা আমাদের শরীরের জন্য ভীষণ প্রয়োজন।

উপকারিতা

১. ডুমুর ভাঙলে বা কাটলে একরকমের সাদা রস বের হয়। একে বলা হয় ল্যাটেক্স । এটাকেই ডুমুরের সকল শক্তি এবং উপকারিতার মূল উৎস বলে ধারণা করা হয়ে থাকে। আগে এই রস বা ল্যাটেক্স বন্ধ্যাত্বের প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহার করা হতো। তা ছাড়া মায়েদের বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করানোর জন্য উদ্দীপক হিসেবেও ব্যবহার করা হতো।

২. ডুমুর আমাদের উচ্চ কিংবা নিম্ন উভয় ধরনের রক্ত চাপকেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক সহায়তা করে। ডুমুর খেলে এতে থাকা বেশ কিছু উপকারী খনিজ উপাদান আমাদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।

৩. ডুমুর খেলে আমাদের ত্বক উজ্জ্বল হয়ে থাকে। এছাড়াও ত্বকে ব্রণের দাগ কিংবা যেকোনো দাগ মেশাতে ডুমুর বেশ কার্যকর। তাই যারা ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি কিংবা ত্বকের দাগ নিয়ে চিন্তিত তারা কিন্তু ডুমুর খেতে পারেন।

Manual6 Ad Code

৪. ডুমুর বিভিন্ন চর্মরোগের জন্য অনেক উপকারী। এজন্য ডুমুরের ছাল পানিতে সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করলে ত্বকের বিবর্ণতা এবং ক্ষত খুব দ্রুত সেরে যায়।এছাড়াও ত্বকের ফাঙ্গাশ জনিত যেকোনো সমস্যয় ডুমুরের সিদ্ধ পানি অনেক উপকারী।

৫. ডূমুরের ছাল থেঁতো করে পানিতে সিদ্ধ করে এর সাথে যদি পুদিনার রস মিশিয়ে খাওয়া যায় তাহলে আমাদের হজমশক্তি অনেক বেড়ে যায় এবং একই সাথে আমাদের পাকস্থলীর কর্মক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি পায়।

ডুমুর অনেক উপকারী হলেও এটি অতিরিক্ত মাত্রায় খেলে আমাদের যকৃত, পাকস্থলী এবং দাঁতের ক্ষতি হতে পারে। তাই বেশি মাত্রায় না খেয়ে অল্প করে খেলে সহজলভ্য এই ফলটি আমাদের অনেক উপকার করতে পারে। তাই আর এখন থেকে ডুমুরকে মোটেও অবহেলা করবেন না।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code