ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য : মামুনুল-বাবুনগরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা

প্রকাশিত: ৫:৩৬ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ৭, ২০২০

ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য : মামুনুল-বাবুনগরীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা

Manual4 Ad Code

ঢাকা, ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ : ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্যের অভিযোগে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মোহাম্মদ জোনায়েদ ওরফে জুনায়েদ বাবুনগরী ও সৈয়দ ফয়জুল করীমের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়েছে।

Manual4 Ad Code

সোমবার মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল বাদি হয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম সত্যব্রত শিকদারের আদালতে এ মামলা করেন । আদালত বাদির জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) ডিআইজিকে আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়,আসামি মামুনুল হক গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ ভবনের মিলনায়তনে বক্তৃতায় বলেন, ‘যারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন করে তারা বঙ্গবন্ধুর সুসন্তান হতে পারে না। এই মূর্তি স্থাপন বন্ধ করুন। যদি আমাদের আবেদন মানা না হয়, আবারও তৌহিদী জনতা নিয়ে শাপলা চত্বর কায়েম হবে।’
একইদিন আসামি সৈয়দ ফয়জুল করীম ধোলাইখালের নিকটে গেন্ডারিয়া নামক স্থানে তার নসিহত শুনতে আসা সাধারণ মুসলমানদের হাত উঁচু করে শপথ পড়িয়ে বলেন, ‘আন্দোলন করব, সংগ্রাম করব, জেহাদ করব। রক্ত দিতে চাই না, দেয়া শুরু করলে বন্ধ করব না। রাশিয়ার লেলিনের বাহাত্তর ফুট মূর্তি যদি ক্রেন দিয়ে তুলে সাগরে নিক্ষেপ করতে পারে, তাহলে আমি মনে করি শেখ সাহেবের এই মূর্তি আজ হোক, কাল হোক খুলে বুড়িগঙ্গায় নিক্ষেপ করবে।’
মোহাম্মদ জোনায়েদ ওরফে জুনায়েদ বাবুনগরী হাটহাজারীতে বলেন, ‘মদিনা সনদে যদি দেশ চলে তাহলে কোনো ভাস্কর্য থাকতে পারে না।’
তিনি সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, ‘ভাস্কর্য নির্মাণ পরিকল্পনা থেকে সরে না দাঁড়ালে আরেকটি শাপলা চত্বরের ঘটনা ঘটবে এবং ওই ভাস্কর্য ছুড়ে ফেলা হবে।’
মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে মামলার বাদি দাবি করেছেন, আসামিরা এরূপ ভাস্কর্যবিরোধী বক্তব্য দিয়ে ইসলাম ধর্মকে কাজে লাগিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা ও সুযোগ-সুবিধা লাভের হীন উদ্দেশ্যে বিদেশি শক্তির সাথে হাত মিলিয়ে ধর্মের লেবাসে সাধারণ মুসলমানদের উসকানি দিয়ে, ক্ষেপিয়া তুলে রাষ্ট্র ও সমাজের মধ্যে ঘৃণা ও শত্রুভাব সৃষ্টি করেছে। যার ফলশ্রুতিতে আসামিদের নির্দেশে মধুদার ভাস্কর্য ও কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর নির্মিত ভাস্কর্যসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ভাস্কর্য ভাঙা হচ্ছে। এইরূপ প্রচারণা ও উসকানি রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।
অপর দিকে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠা ও নির্বাহী সভাপতি এডভোকেট আবদুল মালেক একই আদালতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নেতা মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেন। আদালত বাদির জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনর (পিবিআই) ডিআইজিকে আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।
এ মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ‘আসামি মামুনুল হক গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বিএমএ মিলনায়তনের এক আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার হুমকি দেন। এ সময় তিনি বলেন, “লাশের পর লাশ পড়বে, তবুও বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য গড়তে দেয়া হবে না।” আর এই বক্তব্যের ফলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাবমূর্তি ও সম্মান ক্ষুণ্য হয়েছে।

Manual6 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code