৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় খাদ্য সংকটে বিশ্ব: জাতি সংঘ

প্রকাশিত: ৫:১৯ পূর্বাহ্ণ, জুন ১৯, ২০২০

৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় খাদ্য সংকটে বিশ্ব: জাতি সংঘ

Manual8 Ad Code

বিশেষ প্রতিবেদন, ১৯ জুন ২০২০ : জাতি সংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জানিয়েছেন, বড় ধরনের খাদ্য সংকটের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে বিশ্ব। অন্তত গত ৫০ বছরের মধ্যে এমন খাদ্য সংকটের নজির দেখা যায়নি।

Manual1 Ad Code

ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব এবং লকডাউনের সাথে জড়িত আয়ের ক্ষতি, অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের স্থবিরতায় বিপুল সংখ্যক মানুষ বেকার হয়ে পড়েছে। বাড়ছে দারিদ্রের মাত্রা। ক্রয়-সক্ষমতা কমছে। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে বিশ্ব অর্থনীতি পড়েছে মন্দার ঘেরাটোপে। দেশে দেশে দেখা যাচ্ছে মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা। অন্যদিকে, কৃষিকাজ,খাদ্য পরিবহন এবং সংরক্ষণের নানা পর্যায়কে বাধাগ্রস্ত করছে কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে নেওয়া নানাবিধ সতর্কতামূলক পদক্ষেপও। ফলে বিশ্বের বিপুলসংখ্যক দরিদ্র জনগোষ্ঠী এক অকল্পনীয় খাদ্য সংকটে পড়তে চলেছে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের (মঙ্গলবার ৯ জুন ২০২০) প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে এই সতর্কতা কথা জানিয়েছেন গুতেরেস।

বিশ্ব সংস্থা জানিয়েছে , করোনাভাইরাসের মহামারির প্রেক্ষিতে আসন্ন অর্থনৈতিক মন্দা দরিদ্রদের সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মুখে ফেলেছে। এরফলে, তারা নুন্যতম মৌলিক পুষ্টিচাহিদা থেকেও বঞ্চিত হতে চলেছে। এই মুহূর্তেই জরুরি পদক্ষেপ না নেওয়া হলে, বিশ্বের কোটি কোটি পূর্ণবয়স্ক মানুষ এবং শিশু এক ভয়াবহ খাদ্য সংকটে পড়তে চলেছে।

Manual3 Ad Code

জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনা মহামারির কারণে এ বছর প্রায় ৫ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে আছে। তবে দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব আরও ভয়াবহ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দরিদ্র শিশুদের ন্যুনতম পুষ্টিচাহিদা এখন মেটানো না গেলে জীবনভর তাদেরকে ভুগতে হবে। বিশ্বে বর্তমানে প্রতি ৫ জনে একজন শিশুর বয়স পাঁচ বছর হতে না হতেই তাদের বিকাশ থমকে যায়। দারিদ্র্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে নতুন করে আরও লাখ লাখ শিশুকে এমন নিয়তি বরণ করতে হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আসন্ন দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার কথা বলে, সঙ্কট মোকাবিলায় সকল দেশের সরকারের প্রতি দ্রুত পদক্ষেপের পাশাপাশি গরীব মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা বলয় শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ব সংস্থাটি।

বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারির বিপর্যয়পূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যেও প্রধান খাদ্যশস্যের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা যে বিষয় নিয়ে আতঙ্কিত থাকেন, সেই রফতানি নিষেধাজ্ঞা ও সংরক্ষণবাদ নীতির প্রয়োগ এখন পর্যন্ত বড় আকারে ঠেকানো গেছে। তারপরও বড় ধরনের খাদ্য সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। মহাসচিব গুতেরেস বলেন, ‘এমনকি খাদ্য সমৃদ্ধ দেশগুলোতেও আমরা খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছি।’

বিশ্বের নাজুক খাদ্য ব্যবস্থা সংস্কারের জন্য তিন দফা পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন গুতেরেস। সেগুলো হলো:
১. সবচেয়ে সংকটপূর্ণ এলাকাগুলোকে খাদ্য সহায়তার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া, খাদ্য সরবরাহ শৃঙ্খলকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকারকে উদ্বুদ্ধ করা।

Manual7 Ad Code

২. সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থাকে দৃঢ় করা , যেন শিশু, গর্ভবতী ও প্রসূতি নারী এবং খাদ্য ঝুঁকিতে থাকা অন্য মানুষরা পর্যাপ্ত পুষ্টি পায়।

Manual8 Ad Code

৩. ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করা, যেন মহামারি থেকে মুক্ত হওয়ার পর স্বাস্থ্যকর ও পরিবেশগতভাবে টেকসই খাদ্য ব্যবস্থাকে অগ্রাধিকার দেওয়া যায়।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থার প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ম্যাক্সিমা টরেটো বলেন, বিশ্ব খাদ্য ব্যবস্থা এমন ধরনের হুমকিতে আছে যা সাম্প্রতিক সময়গুলোতে দেখা যায়নি। মহামারি ও লকডাউনের কারণে মানুষের চাষাবাদ, খাদ্য ক্রয় ও বিক্রির সক্ষমতা ব্যাহত হয়েছে।
ম্যাক্সিমা টরেটো সাবধান করে বলেন,‘আমাদেরকে সতর্ক হতে হবে। আমরা যে খাদ্য সংকটগুলো দেখেছি তার চেয়ে এটি অনেকখানি আলাদা।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code