মাগুরছড়ার ঝলসানো কলিজার দাগ মুছে ফেলার শক্তি কারও নেই

প্রকাশিত: ৬:৫৯ পূর্বাহ্ণ, জুন ১২, ২০২১

মাগুরছড়ার ঝলসানো কলিজার দাগ মুছে ফেলার শক্তি কারও নেই

।।|| পাভেল পার্থ ||।।

১৯৯৮ সালের জুনে এক দগ্ধ দুপুর। লাউয়াছড়া জঙ্গলে তখনও আগুনের দাগ। ছাই আর কয়লার স্তূপ। একেকটা গাছ পুড়ে-গলে কালো কঙ্কাল হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। লাউয়াছড়া খাসিপুঞ্জির বার্লো সুচিয়াং দীর্ঘদিনের বন্ধু। অনেক খাসি পরিবারের মতো তাদেরও পানজুম আর ঘরদুয়ার সব ছাই হয়ে গেছিল তখন। ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন এদিনে মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় বিস্তৃত দেশের এক অবিস্মরণীয় বর্ষারণ্য লাউয়াছড়ার মাগুরছড়া এলাকা করপোরেট গ্যাস কোম্পানি অক্সিডেন্টালের দায়িত্বহীনতায় জ্বলেপুড়ে ছাই হয়ে যায়। লাউয়াছড়া জঙ্গলে তিনটি খাসিপুঞ্জি ও দুইটি ত্রিপুরা গ্রাম। এছাড়া চা বাগান বসতি। লাউয়াছড়া, মাগুরছড়া ও জাগছড়া খাসিপুঞ্জি। ডলুবাড়ি ও বিষামনি ত্রিপুরা গ্রাম। বার্লো আর আমি শ্রীমঙ্গল থেকে হেঁটে ডলুবাড়ি ত্রিপুরী কামিতে পৌঁছি। শ্রীমঙ্গল থেকে লাউয়াছড়া বনের ভেতর দিয়ে কমলগঞ্জ যাওয়ার সরাসরি সড়কপথটি আগুনে পুড়ে মরার মতো পড়ে আছে। নূরজাহান চা বাগানের ভেতর দিয়ে ঘুরতিপথে মাধবপুর হয়ে কমলগঞ্জ যেতে হয়। ত্রিপুরাদের ককবরক ভাষায় ‘কামি’ মানে গ্রাম। লাউয়াছড়া খাসিপুঞ্জি আর ডলুবাড়ি ত্রিপুরী কামি আমার দুই প্রাণের জায়গা। আমার কাছে বিশাল বিদ্যালয়। এখানকার খাসি ও ত্রিপুরা প্রবীণজনরা আমাকে কত রাত দুপুর জঙ্গল-বিজ্ঞানের জটিল সূত্রগুলো শিখিয়েছেন। ডলুবাড়িতে বন্ধু শ্যামল দেববর্মার ঘরে বার্লোসহ খেতে বসেছি। গলা বিচিত্র বর্ণের মালা দুলিয়ে তুলাকইন্যা দেববর্মা আসেন। কবে থেকে দেখছি প্রবীণ এ নারীর গলায় নানা কিসিমের মালার বহর। তুলাকইন্যার মন ভালো নেই। গেল বছর যারা মারা গেল পাড়ার, তাদের স্বর্গযাত্রার কথা ভেবে। জঙ্গলে জন্মায় কুথুই রগনি খ্লুম বা খ্লুম চুং খ্যাং নামের এক গাছ। থোকা ধরে ময়লা সাদা ফুল ফোটে। ত্রিপুরাদের বিশ্বাস মৃত্যুর পর এ গাছটি মৃতের আত্মার সহযাত্রী হয়। স্বর্গের পথ চিনিয়ে নিয়ে যায়। ত্রিপুরা সমাজে এ গাছটি পেয়েছে পবিত্র বৃক্ষের মর্যাদা। মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্র বিস্ফোরণের পর কুথুই রগনি খ্লুমের মতো অনেক লতাগুল্ম পুড়ে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। অনেক গাছের বীজদানা না পেয়ে তুলাকইন্যার গলায় এক বছরে আর কোনো নয়া মালার লহর ঝুলেনি। তুলাকইন্যা আরও জানান ছত্রভঙ্গ, খুমচাক, গনথু, খুমজা, গদকি, খুমগন্দাক, খুনজুপরা, খুম থাতু, খুমচা, দিংগ্রা, লাংগ্রা ও কাইসিলিংয়ের মতো বুনো ফুল গাছগুলোও খুব কমই দেখা যাচ্ছে বনটিলায়। এসব গাছের ফুল ত্রিপুরাদের নানা পূজা, কৃত্য ও পার্বণে ব্যবহৃত হয়।

২.

তুলাকইন্যার আহাজারিকে হাতের মুঠোয় জড়িয়ে অভিলাষ দেববর্মা, শ্যামল দেববর্মা আর বার্লো সুচিয়াংসহ লাউয়াছড়ার পথে রওনা দিই। মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্র বিস্ফোরণের পর ডলুবাড়ি ত্রিপুরী কামিদের ছেলেরা শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, মৌলভীবাজার শহরে গেছে অনেকেই জীবিকার সন্ধানে। পুড়ে গেছে লেবু ও আনারস বাগান। তেজপাতা গাছ পুড়ে কঙ্কাল। মাটির রস কমে গেছে। এক বছরে ফলফলাদির ফলন এমন কমেছে যে, এসব দিয়ে বছরের খোরাকি হচ্ছে না। লাউয়াছড়াকে ত্রিপুরা আদিবাসী ডাকেন মৈলপতুইসা। মৌলভীবাজারের অনেক টিলা অরণ্যের মতো মৈলপতুইসারও আদি বাসিন্দা ত্রিপুরা জনগণ। বিস্ময়করভাবে লাউয়াছড়া সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক বন না হয়েও প্রাকৃতিক বনের বৈশিষ্ট্য পেয়েছে। আর এটি সম্ভব হয়েছে লাউয়াছড়া বনের আদিবাসী ত্রিপুরা, খাসি ও চা বাগানি জনগণের কল্যাণেই। ১৯২২ সালে লাউয়াছড়াতে ত্রিপুরাদের মাধ্যমে বনবিভাগ গাছ লাগানো শুরু করে। সেসব আদি গাছের বংশধরও আজ পুড়ে ছাই হয়েছে। লাউয়াছড়া বনের ভেতর প্রবাহিত ছড়া ও পানির স্রোতগুলো শুকিয়ে গেছে। যেসব ছড়ায় পায়ের গোড়ালি পুরোটাই ডুবে যেত এবং কোথাও হাঁটু সমান জল ছিল এসব আজ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। এমন এক লম্বা ছড়ার গোড়ালি থেকে ঘাড় পর্যন্ত আমরা তন্নতন্ন করে খুঁজেও একটি লম্বা শামুক পাইনি। ত্রিপুরাদের ককবরক ভাষায় এর নাম সিকামবুক। ছড়ার ভাটিতে পাথরের গায়ে কয়েকটা গোল শামুক দেখা গেল। আগুন লাগার আগের বছরও এ ধরনের ছড়ার পাশ থেকেই আমরা বুনো মাশরুম সংগ্রহ করেছিলাম। ত্রিপুরা ভাষায় বলে মুইখুমু রথয় এবং খাসি ভাষায় তেতস্লাং। নিদারুণভাবে ঘণ্টা দুই বনপথ হেঁটে আমরা আধখান বুনো মাশরুমের নাগাল পাইনি। খাসি পানজুমগুলো ঝলসে গেছে। পুরো লাউয়াছড়া ও মাগুরছড়া খাসিপুঞ্জি উচ্ছেদ আতঙ্ক নিয়ে কোনোরকমে বেঁচেবর্তে আছে। নতুন কোনো পানজুম হয়নি। কালো পোড়া গাছের কঙ্কাল আর ছাইয়ের পাশাপাশি ঝলসানো বাগান ও বসতি। চারধারেই পোড়া গন্ধ আর দমবন্ধ ঝাঁজ। লাউয়াছড়া আর মাগুরছড়া খাসিপুঞ্জি দুইটি আয়তন ও জনসংখ্যার দিক থেকে জাগছড়া পুঞ্জির চেয়ে বড়। জাগছড়া পুঞ্জি এ আগুনের ধকল সামাল দিতে পারছে না। নিরুদ্দেশের পানে তাকিয়ে আছে। টিলাপথে দেখা হয় জেরিন চা বাগানের শ্রমিক রতনী মুণ্ডা ও দিলীপ শবরদের সঙ্গে। সারা দিনে একবেলা রান্নার জ্বালানিও জোগাড় হয়নি। সবই যে আগুনে পুড়েছে।

৩.

১৯৯৭ সালের ১৪ জুন অক্সিডেন্টালের অবিবেচক পরিচালনায় একসঙ্গে সপরিবারে নিহত হয় লাউয়াছড়া বনভূমির লক্ষ-হাজার প্রাণ। একইসঙ্গে বৃক্ষ-পতঙ্গ-পাখি-পাহাড়ি ছড়া-মাটি-অণুজীব-ছত্রাক-পরাশ্রয়ী লতাগুল্ম-মাছ-সরীসৃপ-বন্যপ্রাণী-ব্যাঙ-পানজুম প্রশ্নহীনভাবে নিহত হয়। বাংলাদেশের পরিবেশ-প্রতিবেশ হত্যার ইতিহাসে এত লাশের মিছিল লাউয়াছড়া ছাড়া আর কোথাও সমকালে দেখা যায়নি। হয়তো দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটিই জানামতে দেশের সবচেয়ে বড় পরিবেশ গণহত্যা। বনভূমির পাশাপাশি খাসিয়া-ত্রিপুরী এবং চা বাগান শ্রমিকরা আহত হন, চেনাজানা জীবনজীবিকা হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে যান অনেকেই। আজ ১৮ বছরেও বাংলাদেশ মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্র বিস্ফোরণের তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করতে পারেনি। বহুজাতিক কোম্পানিদের কাছ থেকে কোনো ক্ষতিপূরণ আদায় করেনি। নিশ্চিত করতে পারেনি লাউয়াছড়া অরণ্যের ন্যায়বিচার। বহুজাতিক এজেন্সিগুলো মাগুরছড়ার স্মৃতিকে বেমালুম উধাও করে দেয়ার উন্মাদনা চালিয়েই যাচ্ছে।

৪.

প্রাকৃতিক বন ও সৃজিত বাগান মিলেমিশে এক জটিল মিশ্র চিরহরিৎ বর্ষারণ্যের বাস্তুসংস্থান গড়ে উঠেছে লাউয়াছড়ায়। দেশের সাতটি বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য, ১০টি জাতীয় উদ্যানের ভেতর লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানই বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায় উল্লুক গিবনের সবচেয়ে বড় বিচরণ এলাকা। মৌলভীবাজার রেঞ্জের ২ হাজার ৭৪০ হেক্টর আয়তনের পশ্চিম ভানুগাছ সংরক্ষিত বনের ১ হাজার ২৫০ হেক্টর এলাকাকে ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) (সংশোধন) আইন অনুযায়ী ১৯৯৬ সালে ঘোষণা করা হয় লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান। জাতীয় উদ্যান ঘোষণার পর ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন মার্কিন কোম্পানি অক্সিডেন্টালের মাধ্যমে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় লাউয়াছড়া বনের প্রতিবেশ ও জীবনব্যবস্থা। পরবর্তী সময় আরেক মার্কিন কোম্পানি ইউনোকল লাউয়াছড়া বনের ভেতর দিয়ে গ্যাস পাইপলাইন বসায়, যার ফলে এ সংবেদনশীল বনভূমির বাস্তুসংস্থান অনেকটাই উল্টেপাল্টে যায়। মাগুরছড়া পরিবেশ গণহত্যার পর ২০০৮ সালে রাষ্ট্রের অনুমোদন নিয়ে ভূতাত্ত্বিক গ্যাস জরিপের নামে মার্কিন কোম্পানি শেভরন লাউয়াছড়া বনভূমিতে প্রশ্নহীন বোমা বিস্ফোরণে ঝাঁঝরা করে দেয় বনের মুমূর্ষু শরীর। মার্কিন নানা বহুজাতিক কোম্পানির মাধ্যমে এসব নিপীড়ন সংঘটিত হলেও আবারও প্রশ্নহীন কায়দায় মার্কিন সরকারের সহায়তায় এ বনভূমিতেই চালু হয়েছে নিসর্গ সহায়তা প্রকল্প এবং তার লেজ ধরে আইপ্যাক কর্মসূচি এবং তারও লেজ ধরে ক্রেল প্রকল্প। নিসর্গ, আইপ্যাক ও ক্রেল কী করেছে? পরিবেশ সংরক্ষণ ও প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষার নামে লাউয়াছড়া বনকে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। নির্দয়ভাবে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে চালু করেছে বাণিজ্যিক পর্যটন। ১৯৯৭ সাল থেকে ঘটে চলা লাউয়াছড়া বনের ওপর নানা বিচারহীন বহুজাতিক আঘাত সমূলে ঢেকে ফেলছে। বাণিজ্যিক পর্যটনের নামে জনগণের স্মৃতি থেকে লাউয়াছড়ার ওপর লাগাতার বহুজাতিক জখমের দাগ মুছে দিতে একের পর এক উন্নয়ন-উন্মাদনা তৈরি করছে। ফুটন্ত পদ্মফুলের ছবি দিয়ে অনলাইনে একজন মাগুরছড়ার গ্যাসক্ষেত্র বিস্ফোরণস্থলটির কথা লিখেছে, একসময়ের মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্রে এখন পদ্মফুল ফুটছে। আসলে গভীর খাদ হয়ে টিলার ভেতর বসে যাওয়া জায়গাটি একটি গ্যাসকূপ। এখানে ছিল দুইটি ঘাড় উঁচু টিলা। বিস্ফোরণের পর তড়িঘড়ি করে সব পোড়া দাগ, কঙ্কাল আর ছাই সরিয়ে অক্সিডেন্টাল এ খাদে পদ্ম আর শাপলা ফুল আনে। চার পাশে দ্রুত বর্ধনশীল সবুজ গাছ আর ঘাসে ভরে দেয়। যেন কোনো দাগ না থাকে। যেন বহুজাতিক অন্যায় আর এলোপাতাড়ি আঘাতের কোনো চিহ্ন না থাকে। কিন্তু অক্সিডেন্টাল, বনবিভাগ এবং রাষ্ট্রের জানা দরকার প্রাণ ও প্রকৃতি কাল থেকে কালে সব আঘাতের চিহ্ন বয়ে নিয়ে চলে ঝলসানো কলিজায়। এ চিহ্ন এ দাগ মুছে ফেলার শক্তি কারও নেই।

৫.

লাউয়াছড়ার খাসি আদিবাসীদের বনবিজ্ঞান অনুযায়ী, বনের নিচের স্তরে মানে বনতলে থাকে সেমখচু, মেকরিয়াৎ, লৎঅঁৎ, সেমখ্রুৎ নামের নানা পাখি। লাউয়াছড়া বনের সর্বাধিক সংবেদনশীল বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর ভেতর তেঙা হনরঅ নামের এক হলুদ কচ্ছপ, ডং চেলতিয়া নামের এক গাছশামুক, খ্র ছেরঙ্গান নামের এক সবুজ ব্যাঙ, ক্রালাহিড ও ক্রামুসুরি নামের ঔষধি গাছগুলোর আবাসও বনতল। আগুনে বনতল পুরো ঝলসে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কী পরিমাণে সাপ, ব্যাঙ, সরীসৃপ, পাখি ও অন্যান্য প্রাণীর মৃত্যু ঘটেছে তার কোনো উপাত্ত নেই। রাষ্ট্র জোর করেই এসব চিহ্ন মুছে ফেলতে চাইছে। এ অন্যায় জুলুমের সাক্ষী মুছে দিয়ে নয়, ন্যায়পরায়ণতার হদিস রেখেই রাষ্ট্রকে গণপ্রজাতন্ত্রের ব্যাকরণ প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। মাগুরছড়া গ্যাসক্ষেত্র বিস্ফোরণ হলো সমসাময়িককালের বৃহৎ ‘পরিবেশ গণহত্যা’। ১৮ বছর ধরে এ গণহত্যা বিচারহীনতার সংস্কৃতিকে টেনে চলেছে। পাশপাশি যুক্ত হয়েছে অস্বীকারের নির্দয় চাপ। প্রতি বছরই এ ঘটনার ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে একটি হলেও লেখালিখে চলেছি। নির্দয়ভাবে এ বছর গণমাধ্যমে স্মরণ জাতীয় খবর প্রকাশ ছাড়া আর কোনো লেখাই নজরে আসেনি। হয়তো এ সময়টা জাতীয় বাজেট আর রাজনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে ব্যস্ত থাকে রাষ্ট্র ও সময়। কিন্তু মাগুরছড়া গণহত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিত না করে কি কোনোভাবেই আমরা আমাদের বাজেট ও রাজনৈতিকতার বিকাশ ঘটাতে পারি? ঝলসানো জঙ্গল থেকে আবারও ঘাড় তুলে দাঁড়িয়েছে এক নতুন লাউয়াছড়া বন। কিন্তু নির্দয়ভাবে এ বনটি আবারও আরেক মার্কিন দাতা সংস্থা ইউএসএইডের খবরদারি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। অক্সিডেন্টাল, ইউনোকল ও শেভরনের পর ইউএসএইড। বাংলাদেশের সব বনের মালিক জনগণ। বনবিভাগ দেশের সব বনের রাষ্ট্রীয় প্রহরী। কিন্তু বনবিভাগকে ছাপিয়ে এক মার্কিন এজেন্সি আজ জনগণের পাবলিক বনের ওপর মাতবরি করছে। লাউয়াছড়ার বৃক্ষগুল্ম, তরুলতা, বননির্ভর আদিবাসী, চা বাগান শ্রমিক, প্রাণিকুল সবাই বহন করে চলেছে একের পর এক অন্যায় বহুজাতিক আঘাত। রাষ্ট্রকে দেশের প্রাণ ও প্রকৃতির জানমাল সুরক্ষায় দাঁড়াতেই হবে, সব বহুজাতিক বাহাদুরিকে আইনের আওতায় আনতে হবে। বিস্মৃতি বা অস্বীকার কোনোভাবেই জবাবদিহিতার বৈশিষ্ট্য হতে পারে না।

পাভেল পার্থ

গবেষক ও লেখক। ই-মেইল : animistbangla@gmail.com

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ