মালিক ও চা শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠকের সিদ্ধান্তে বকেয়া মজুরি ৩০ হাজার নয়, পাবে ১১ হাজার টাকা

প্রকাশিত: ২:০০ অপরাহ্ণ, মার্চ ২, ২০২৩

মালিক ও চা শ্রমিক প্রতিনিধিদের বৈঠকের সিদ্ধান্তে বকেয়া মজুরি ৩০ হাজার নয়, পাবে ১১ হাজার টাকা

Manual2 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ০২ মার্চ ২০২৩ : চা শ্রমিকদের জন্য গত আগস্ট থেকে নতুন যে মজুরি কাঠামো নির্ধারণ করা হয়েছে, সেই মজুরি কাঠামো অনুযায়ী তাঁদের বকেয়া পাওনার প্রথম কিস্তি চলতি মাসে দেওয়া শুরু হবে বলে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের মধ্যকার এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বকেয়া মজুরি ৩০ হাজার টাকা নয়, থোক হিসেবে প্রতি জন চা শ্রমিক ১১ হাজার টাকা করে পাবেন।

Manual5 Ad Code

গত আগস্ট থেকে চা শ্রমিকেরা নতুন মজুরি কাঠামো অনুযায়ী দৈনিক ১৭০ টাকা মজুরি মজুরি পাচ্ছেন। তবে তাঁদের জন্য প্রযোজ্য আইন অনুযায়ী যে চুক্তি হয়, সেই চুক্তির মেয়াদ সমন্বয়ের কারণে প্রচলিত নিয়মে নতুন কাঠামো অনুযায়ী ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে মজুরি দিতে হবে। সেই হিসাবে ওই সময় থেকে শুরু করে গত বছরের ২৭ আগস্ট পর্যন্ত তাঁদের বকেয়া মজুরি দাঁড়ায় জনপ্রতি চা শ্রমিক ৩০ হাজার টাকা।

Manual5 Ad Code

রাজধানীর বিজয়নগরে শ্রম ভবনের সম্মেলন কক্ষে গতকাল বুধবার রাতে চা-বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বকেয়া মজুরি পরিশোধের বিষয়ে ঘোষণা দেন। পরে রাতেই শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী স্বাক্ষরিত এ–সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার (২ মার্চ ২০২৩) শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানায়।

Manual7 Ad Code

সিদ্ধান্ত হয়েছে, চা বাগান কর্তৃপক্ষ তিন কিস্তিতে শ্রমিকের বকেয়া পরিশোধ করবে। যার প্রথম কিস্তির অর্থ ৭ মার্চের আগে পাবেন শ্রমিকেরা। বাকি দুই কিস্তির অর্থ কবে পরিশোধ হবে তা চা-শ্রমিক ও মালিকপক্ষ আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।

মজুরি বাড়ানোর দাবিতে গত আগস্টে চা বাগানগুলোয় শ্রমিকেরা আন্দোলনে নামেন। প্রায় ১৯ দিন লাগাতার কর্মবিরতির পর ২৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা বাগান মালিকদের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে চা-শ্রমিকদের মজুরি দৈনিক ৫০ টাকা বাড়িয়ে ১২০ টাকা থেকে ১৭০ টাকা ঘোষণা দেওয়া হয়। মজুরি বৃদ্ধির পাশাপাশি বার্ষিক ছুটি, বেতনসহ উৎসব ছুটি, অসুস্থতাজনিত ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণায় আরও বলা হয়, চিকিৎসা ব্যয়ের চাঁদা মালিকপক্ষ বহন করবে। ভবিষ্য তহবিলে নিয়োগকর্তার চাঁদা আনুপাতিক হারে বাড়বে।

এ ছাড়া চা শ্রমিকদের ভর্তুকি মূল্যে রেশন সুবিধা বাড়ানোর কথা জানানো হয়।
বলা হয়, চিকিৎসাসুবিধা, অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পেনশন, চা-শ্রমিকদের পোষ্যদের শিক্ষা বাবদ ব্যয়, রক্ষণাবেক্ষণ, গোচারণভূমি বাবদ ব্যয়, বিনামূল্যে বসতবাড়ি ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ শ্রমিককল্যাণ কর্মসূচিতে ব্যয় বাড়বে।

Manual1 Ad Code

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরদিন থেকেই চা শ্রমিকেরা বর্ধিত মজুরিসহ বর্ধিত অন্যান্য সব সুবিধাদি পাওয়ার কথা। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শ্রমিকেরা ২০২১ এর জানুয়ারি থেকে গত বছরের ২৭ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের জন্য বর্ধিত মজুরির বকেয়া পাওনার জন্য মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচিও পালন করছিলেন।

প্রথা অনুযায়ী প্রতি দুই বছর পরপর চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা-সংসদ ও বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা হয়। আলোচনার মাধ্যমে চা শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। নতুন চুক্তির পর মজুরির বর্ধিত বকেয়া অংশও পরিশোধ করা হয়ে থাকে। সর্বশেষ মজুরিসংক্রান্ত চুক্তির মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বরে।

গত রাতের মতবিনিময় সভায় শ্রমসচিব মো. এহছানে এলাহী, অতিরিক্ত সচিব তৌফিকুল আরিফ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, বাংলাদেশীয় চা সংসদ চেয়ারম্যান শাহ আলম, মহাসচিব মোজাফফর আহম্মদ, কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল ও অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code