রমজান এলেই দুধের লিটার ১০ টাকায় বিক্রি করেন কিশোরগঞ্জের এরশাদ

প্রকাশিত: ১০:১৯ পূর্বাহ্ণ, মার্চ ২৫, ২০২৩

রমজান এলেই দুধের লিটার ১০ টাকায় বিক্রি করেন কিশোরগঞ্জের এরশাদ

Manual6 Ad Code

বিজয় রায় খোকা | কিশোরগঞ্জ, ২৫ মার্চ ২০২৩ : রমজান এলেই যেখানে বেড়ে যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। সেখানে মাত্র ১০ টাকায় গরুর খাঁটি দুধের লিটার বিক্রি করছেন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের রৌহা গ্রামের ব্যবসায়ী এরশাদ উদ্দিন। পুরো রমজানজুড়ে সুষ্ঠু বণ্টনের স্বার্থে একটি পরিবারকে দিনে এক লিটার দুধ দেবেন।

তিন বছর ধরে রমজান এলেই তার এমন ব্যতিক্রমী উদ্যোগ ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে সবখানে। নামমাত্র মূল্য ১০ টাকা লিটারে আশপাশের বিভিন্ন গ্রামের মানুষ তার কাছ থেকে দুধ পেয়েছেন।

Manual8 Ad Code

এবার আরও বড় পরিসরে কাজটি শুরু করেছেন বাংলাদেশ মিলস্কেল রি-প্রসেস অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জেসি অ্যাগ্রো ফার্মের চেয়ারম্যান এরশাদ উদ্দিন। সব প্রস্তুতি শেষে রোজার প্রথম দিন থেকেই ১০ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি শুরু করেছেন। চলবে পুরো রমজানজুড়ে।

Manual3 Ad Code

জানা গেছে, জেসি অ্যাগ্রো ফার্মে বর্তমানে পাঁচ শতাধিক গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। খামারে উন্নতজাতের ২৫টি গাভিও রয়েছে। সেগুলো থেকে প্রতিদিন ৭০-৭৫ লিটার দুধ পাওয়া যাচ্ছে। আর এ দুধই ১০ টাকা লিটার দরে বিক্রি শুরু হয়েছে রমজানে। তবে গত বছর একই সময়ে দুধ বিক্রি করলেও সেটি আরও ছোট পরিসরে ছিল। এবার খামারে গাভির সংখ্যা বেশি থাকায় উদ্যোগও বড় হয়েছে।

নিয়ামতপুর গ্রামের কৃষক গোলাপ মিয়া বলেন, রমজানে দুধের চাহিদা থাকে। তাই এ সময়টায় দুধের দামও থাকে অনেক বেশি। প্রয়োজন হলেও অনেকের দুধ কেনার সামর্থ্য থাকে না। কিন্তু এরশাদ ভাই কয়েক বছর ধরে এলাকার মানুষদের জন্য এমন একটা ব্যবস্থা করেছেন, যার ফলে রমজানে দুধ নিয়ে অন্তত বাড়তি কোনও চাপ থাকে না। তিনি মানুষের বিপদের বন্ধু। আমরা এলাকাবাসী তাকে নিয়ে অনেক গর্ব করি।

Manual4 Ad Code

সাবিনা আক্তার জানান, তিন বছর ধরে তিনি রমজানে এখান থেকে ১০ টাকা লিটারে দুধ কিনছেন। এ সময়ে বাজারে দুধের অনেক দাম থাকে। ইচ্ছে করলেও কিনে খাওয়ার সামর্থ্য থাকে না। গরিবের পাশে থাকার জন্য তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।

এরশাদ উদ্দিন বলেন, সারাদিন রোজা শেষে মানুষ একটু ভালোমন্দ খেতে চায়। সবারই ইচ্ছে থাকে ইফতারে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে দুধ থাকুক। কিন্তু দুধসহ সব কিছুর দামই তো আকাশছোঁয়া। ইচ্ছা থাকলেও সবাই দুধ কিনতে পারবে না। এসব ভেবে এবার আরও বেশি করে দুধ বিক্রি করছি। গত বছর এক হাজার লিটারের মতো দুধ বিক্রি করেছি। এবার ইচ্ছা আছে পরিমাণটা দ্বিগুণ করার।

Manual5 Ad Code

তিনি বলেন, রোজার প্রথম দিন থেকে প্রতিদিন ৭০-৭৫ জনের কাছে এক লিটার করে দুধ বিক্রি হবে। এটি চলবে রোজার শেষ দিন পর্যন্ত। আর প্রতি লিটার দুধের দাম ধরা হয়েছে মাত্র ১০ টাকা। এটি আর কিছু নয়, প্রতীকী মূল্য মাত্র। কেও যদি এক টাকাও দেন আমরা তাকেও দুধ দেবো। নিয়ামতপুর ইউনিয়নসহ আশপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের লোকজনের কাছে এই দুধ বিক্রি করা হবে। তাই এসব এলাকায় গ্রুপ ও রুটিন করে দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত গ্রুপ রুটিন অনুযায়ী সবাই দুধ কিনতে আসে।

এদিকে এরশাদ উদ্দিনের ১০ টাকা লিটার করে দুধ বিক্রির এই উদ্যোগটিকে সাধুবাদ জানিয়েছেন সব শ্রেণিপেশার মানুষ। তারা মনে করেন, এমন উদ্যোগের ফলে এই এলাকার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত সবাই রমজানে দুধ নিয়ে বাড়তি চিন্তা করতে হবে না।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code