স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় হেলথ প্রমোশনে গুরুত্ব দেয়ার আহবান

প্রকাশিত: ৭:৫৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৭, ২০২৫

স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় হেলথ প্রমোশনে গুরুত্ব দেয়ার আহবান

Manual4 Ad Code

সৈয়দ আরমান জামী, বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ০৭ এপ্রিল ২০২৫ : সুস্বাস্থ্য কেবল ব্যক্তিগত চাহিদার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, এটি একটি জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির অন্যতম প্রধান ভিত্তি। স্বাস্থ্য সুরক্ষা শুধু হাসপাতাল নির্মাণ, চিকিৎসক ও ঔষধ সেবনের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বরং মানুষের স্বাস্থ্যশিক্ষা, সচেতনতা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, পুষ্টির উন্নয়ন, খেলাধুলা ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের উপযোগী প্রকৃতি ও পরিবেশের ওপর বহুলাংশে নির্ভর করে। এজন্য বিশুদ্ধ পানি, নির্মল বাতাস, গাছ, মাটি, নিরাপদ খাদ্য, বাসস্থান, পয়ঃ ব্যবস্থা, ব্যায়াম, হাঁটা-চলা, যাতায়াত, উন্মুক্ত স্থান (মাঠ, পার্ক, খোলা জায়গা), খেলাধুলার সুযোগ সুস্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যকীয়। এসব বিষয় নিশ্চিত করা সম্ভব হলে জনগণের অসুস্থতার হার অনেকাংশে হ্রাস পাবে এবং চিকিৎসানির্ভরতা ও স্বাস্থ্যখাত রাষ্ট্রের ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

আজ সোমবার (৭ এপ্রিল ২০২৫) ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’ উপলক্ষে ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং (আইডাব্লিউবি) এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

ডাব্লিউবিবি ট্রাস্টের কৈবর্ত সভাকক্ষে “স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় হেলথ প্রমোশনের গুরুত্ব” শীর্ষক এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংস্থার পরিচালক গাউস পিয়ারী।

বক্তব্য দেন উবিনীগ (উন্নয়ন বিকল্পের নীতি নির্ধারণী গবেষণা) পরিচালক সীমা দাস সীমু, নারীপক্ষের প্রকল্প পরিচালক সামিয়া আফরিন, এইড ফাউন্ডেশনের প্রকল্প পরিচালক শাগুফতা সুলতানা, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর কোষাধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম সুজন, ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক এম এ মান্নান মনির।

ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট্রের কমিউনিকেশন অফিসার শানজিদা আক্তারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংস্থার স্বাস্থ্য অধিকার বিভাগের প্রধান সৈয়দা অনন্যা রহমান।

Manual1 Ad Code

সীমা দাস সীমু বলেন, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিরাপদ খাদ্যের বিকল্প নেই। সাদা চিনি, লবন, সাদা আটা উপকারী নয়। খাদ্যশস্য উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ক্ষতিকর বিষের প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ ও ধোঁয়াবিহীন সেবনে গর্ভবতী মায়ের স্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়ছে। ফলমূলেও বিষযুক্ত স্প্রে করা হয়। স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিজের পরিবারকে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় কাজ করতে হবে।

সামিয়া আফরিন বলেন, মাতৃমৃত্যুর হার আমাদের দেশে অনেক বেশী যা প্রতিরোধযোগ্য। পরিবেশ দূষণ নারী স্বাস্থ্যকেও হুমকির মুখে ফেলছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে নারী সুস্বাস্থ্য রক্ষায় সকলকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। এ কাজে তরুণদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

আমিনুল ইসলাম সুজন বলেন, স্বাস্থ্য সবার অধিকার। এই অধিকার অর্জন করতে হলে নীতিগত সংস্থার করা প্রয়োজন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সর্বত্র অস্বাস্থ্যকর বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে। শিশুদের প্রলুব্ধ করা হচ্ছে, যা বন্ধ করা দরকার।

শাগুফতা সুলতানা বলেন, তামাক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। পরোক্ষ ধূমপানও নারী ও শিশুদের জন্য প্রাণঘাতী। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত সংশোধন করে সিগারেটের খুচরা শলাকা বিক্রি বন্ধ, তামাকের দোকানকে লাইসেন্স এর আওতায় আনাসহ স্কুল-কলেজ-হাসপাতালের সামনে তামাক বিক্রি নিষিদ্ধ করা দরকার।

এম এ মান্নান মনির বলেন, শিক্ষার্থীরা নেশাজাতীয় দ্রব্যে আসক্ত হচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশে পাশে বিভিন্ন বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্য বিক্রয় হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রায়েরবাজার হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মেহেরুন নেসা, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টোব্যাকো কন্ট্রোল রিসার্চ সেল (টিসিআরসি) প্রকল্প ব্যবস্থাপক ফারহানা জামান লিজা, চিল্ড্রেন ওয়াচ ফাউন্ডেশনের শাহ ইশরাত আজমেরী, মানবিক সাহায্য সংস্থার প্রতিনিধি শাকিলা আক্তার জেবা প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট, আইডব্লিউবিসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

Manual4 Ad Code

উল্লেখ্য, এ বছর বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে: “Healthy beginnings, hopeful futures” বা জন্ম হোক সুরক্ষিত, ভবিষ্যত হোক আলোকিত। মূলত, মা ও শিশুর স্বাস্থ্য-কে গুরুত্ব দিয়ে এ প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়। ১৯৪৮ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠার দিনটি ১৯৪৯ সাল থেকে ৭ এপ্রিল তারিখটি সারাবিশ্বে স্বাস্থ্য দিবস হিসাবে উদযাপিত হয়ে আসছে।

Manual5 Ad Code

 

Manual4 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code