সাবেক অর্থ উপমন্ত্রী এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রকাশিত: ১২:১৮ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২৫

সাবেক অর্থ উপমন্ত্রী এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Manual6 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ২১ অক্টোবর ২০২৫ : বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য, সাবেক অর্থ উপমন্ত্রী এবং কুমিল্লা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সীর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকী আজ।

Manual3 Ad Code

জাতীয় রাজনীতি, প্রশাসন, শিল্প উন্নয়ন ও সমাজকল্যাণে দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময় ধরে নিবেদিতপ্রাণ এই নেতা ২০২৩ সালের ২১ অক্টোবর ভোর ৪টা ৪০ মিনিটে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

শিক্ষা ও কর্মজীবনের সূচনা

১৯৪৭ সালের ২৯ নভেম্বর তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের বনকোট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী। তার পিতা নুরুল ইসলাম মুনশী এবং মাতা ফিরোজা বেগম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়াশোনা করে তিনি পেশাগত জীবনের সূচনা করেন। পরবর্তীতে তিনি সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করেন।

শিল্প উদ্যোক্তা হিসেবে ভূমিকা

১৯৮৫ সালে সহযোগী গোলাম ফারুকের সঙ্গে মিলে তিনি এপি আয়ুর্বেদিক ফার্মাসিউটিক্যালস ক্রয় করেন—যা মধু, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্রসাধনী ও ভেষজ ওষুধ উৎপাদনের জন্য সুপরিচিত। এর আগে তিনি একই প্রতিষ্ঠানে প্রশাসন বিভাগের প্রধান (হেড অব অ্যাডমিন) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
ব্যবসার পাশাপাশি তিনি ‘সেবা ঔষধালয়’ নামে একটি ফার্মেসি পরিচালনা করতেন।

Manual6 Ad Code

দেশের কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত পণ্যের উন্নয়নে তার ভূমিকা ছিল উল্লেখযোগ্য। তিনি ছিলেন—

বাংলাদেশ এগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)-এর সভাপতি,

Manual6 Ad Code

কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প দক্ষতা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান,

এডিবি-বাপা-এসইআইপি প্রকল্পের চেয়ারম্যান,

ইইউ-বাপা-শামের্তো প্রকল্পের সভাপতি,

এছাড়া তিনি বাংলাদেশ মৌমাছি পালনকারী সমিতির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

রাজনৈতিক জীবন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই এ এফ এম ফখরুল ইসলাম মুন্সী ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। পরবর্তীতে ১৯৮৫ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেবিদ্বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। একই বছর তিনি বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান পরিষদের চেয়ারম্যান পদেও দায়িত্ব পান।

জাতীয় রাজনীতিতে তার আনুষ্ঠানিক প্রবেশ ঘটে ১৯৮৬ সালে, যখন তিনি জাতীয় পার্টির মনোনয়নে কুমিল্লা-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালেও একই আসন থেকে পুনর্নির্বাচিত হন।
এরশাদ সরকারের সময়ে তিনি প্রথমে বন্দর, জাহাজ চলাচল ও নৌ-পরিবহন উপমন্ত্রী (৯ জুলাই ১৯৮৬–৩০ নভেম্বর ১৯৮৬) এবং পরে অর্থ উপমন্ত্রী (৩০ নভেম্বর ১৯৮৬–২৭ মার্চ ১৯৮৮) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন।
১৯৯৫ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন এবং ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে অংশ নেন।
দলীয় রাজনীতিতে তার অবদান ও নীতিনিষ্ঠ অবস্থানের কারণে তিনি ১৯৯৭ সাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।
এছাড়া তিনি দলটির ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এবং নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

মানবিকতা ও ব্যক্তিজীবন

রাজনীতির বাইরে ফখরুল ইসলাম মুন্সী ছিলেন একজন সফল উদ্যোক্তা, সমাজসেবক এবং মানবিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী ব্যক্তি। তিনি সবসময় স্থানীয় উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করেছেন।
তার স্ত্রী রাকিবা বানু, দুই পুত্র রাকিব মোহাম্মদ ফখরুল ও রাজী মোহাম্মদ ফখরুল তার উত্তরাধিকার রেখে গেছেন।

জাতীয় নেতৃত্বের মূল্যায়ন

Manual6 Ad Code

দলীয় নেতারা বলেন, ফখরুল ইসলাম মুন্সী ছিলেন একজন সৎ, পরিশ্রমী ও দূরদর্শী রাজনীতিক। রাজনীতি ও ব্যবসা—দুই ক্ষেত্রেই তার নৈতিক দৃঢ়তা ও নিষ্ঠা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code