শ্রীমঙ্গল ডিপোতে জ্বালানি তেলের সংকট

প্রকাশিত: ১২:৩৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ৩১, ২০২৪

শ্রীমঙ্গল ডিপোতে জ্বালানি তেলের সংকট

মো. আফজল হোসেইন | শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার), ৩১ অক্টোবর ২০২৪ : শরতের শেষ এই মৌসুমে অর্থাৎ বাংলা কার্তিক মাসের শেষ ও নভেম্বরের শুরু থেকে জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে এই অঞ্চলে। এই সময় অকটেন-পেট্রোলের তুলনায় ডিজেলের চাহিদা থাকে তুঙ্গে। এই অঞ্চল জুড়ে রয়েছে অসংখ্য চা-বাগান, কৃষি ভূমি ও অগণিত যান। শুকনো মৌসুমে চাষাবাদে প্রয়োজন হয় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি।ফসলী জমিতে ডিজেল চালিত মোটর ব্যবহার করে পানি সরবরাহ করে থাকে কৃষকেরা। ফলে মোটর ও জেনারেটর চালাতে প্রয়োজন হয় ডিজেলের। এছাড়াও মৌলভীবাজারে ৯০টি ও হবিগঞ্জ জেলায় ২৩টি মিলে মোট ১১৩টি চা-বাগানের অবস্থান এই অঞ্চলে। এই মৌসুমে চা-গাছ জীবিত রাখতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি। ডিজেল চালিত মোটর ব্যবহার করে চা-গাছে পানি সরবরাহ করে থাকে চা-বাগান কর্তৃপক্ষ।এছাড়াও বিভিন্ন উপজেলার জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা তেল ক্রয় করতে এসে গুণতে হচ্ছে দ্বিগুণ মাশুল।

শ্রীমঙ্গলে পদ্মা, মেঘনা, যমুনা জ্বালানি তেলের ডিপো যা দুু’টি জেলায় জ্বালানি তেল বিপণন করে থাকে।

বুধবার শ্রীমঙ্গলে পদ্মা অয়েল ডিপোতে জ্বালানি তেল ক্রয় করতে গেলে বিপাকে পড়েন চা-বাগানের চালক ও বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ব্যবসায়ীরা। এসময় দেখা যায় ফিনলে টি-কোম্পানির রাজঘাট, দারাগাও, ভাড়াউড়া, কালীঘাট, রশিদপুর, আমরাইল চা বাগানের গাড়ি আছে দাড়ানো অবস্থায়।
ট্রাক্টরগুলো দাড়ানো কেনো জানতে চাইলে জাগছড়া চা-বাগানের ট্রাক্টর চালক জানান, তারা বাগানের জন্য তেল নিতে এসেছে। তিনি বলেন, ডিপো কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে বলেছে ডিপোতে জ্বালানি তেলের সংকট।চাহিদা অনুযায়ী তেল দেওয়া সম্ভব না। চালক আরো জানান, প্রত্যেক বাগানে ১ হাজার থেকে ২ হাজার লিটার জ্বালানি তেল নিতে আসলে বিপরীতে ৪শ থেকে ৬শ লিটার দেওয়া হচ্ছে ডিপো থেকে। ডিপো কর্তৃপক্ষ তাদের চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি তেল দিতে পারেনি।

ডিপোতে তেল সংকটের কারণ জানতে চাইলে পদ্ম অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের ইনচার্জ মমতাজুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রাম থেকে রেলপথে জ্বালানি তেল আনা হয়। সপ্তাহে একবার জ্বালানি তেল আসার কথা থাকলেও সপ্তাহের শুরু থেকে এখনো আসেনি ওয়াগন।তিনি আরো বলেন, রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ওয়াগন চালানোর ইঞ্জিন সংকট, যার ফলে এখনো তেলবাহী ওয়াগন আসেনি। ফলে ডিপোতে চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানি তেল মজুদ নেই। যে পরিমাণ মজুদ আছে সেগুলো বন্টন করে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, আগামী রবিবারের মধ্যে ওয়াগন না আসলে তেল বিপণন করা কষ্ট হয়ে পড়বে।

এবিষয়ে শ্রীমঙ্গল স্টেশন মাষ্টার শিবলু জানান, গত ২৬ অক্টোবর শ্রীমঙ্গল থেকে ছেড়ে যায় জ্বালানি তেলবাহী ওয়াগন। চারদিন পাঁচদিন পর চট্টগ্রাম থেকে চালানো হয় তেলবাহী ওয়াগন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ওয়াগন চালানো হয় রাতের মধ্যেই শ্রীমঙ্গল স্টেশনে আসবে বলে জানান এই কর্মকর্তা। রেলের ইঞ্জিন সংকট কিনা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, যাত্রীবাহী ও মালবাহী ট্রেন চালানোর ইঞ্জিন আলাদা হয়ে থাকে। ওয়াগন চালানোর জন্য ভারী ইঞ্জিনের প্রয়োজন। ৩ হাজার সিরিজের ভারী ইঞ্জিন না হলে ওয়াগন নিয়ে উঠতে সক্ষম হয় না। তাছাড়া ভারী ইঞ্জিনের সংকট রয়েছে বলে জানান তিনি।