মানুষকে সঠিক ইতিহাস জানাতে আরো বেশি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান

প্রকাশিত: ৪:৫১ অপরাহ্ণ, জানুয়ারি ১৭, ২০২১

মানুষকে সঠিক ইতিহাস জানাতে আরো বেশি মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের আহ্বান

Manual7 Ad Code

ঢাকা, ১৭ জানুয়ারি ২০২১ : দেশের চলচ্চিত্র শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সম্ভব সবকিছু করার আশ্বাস দিয়ে বিজয়ের ইতিহাসকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য অধিকহারে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

Manual5 Ad Code

তিনি বলেন, ‘সঠিক ইতিহাস যাতে সবাই জানতে পারে। কারণ, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জনকারি বীরের জাতি। সেই বিজয়ের ইতিহাস প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন মনে রাখতে পারে, সেই ধরণের চলচ্চিত্র আরো নির্মাণ হওয়া দরকার।’
’৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করার অপচেষ্টা করা হয়েছে, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্রে শিল্প ও সংস্কৃতি যেমন থাকবে তেমনি বিশে^র সংগে তাল মিলিয়ে চলার আন্তর্জাতিক ভাবে গ্রহণযোগ্য উপকরণও থাকতে হবে। পাশাপাশি, সেখানে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, নীতি-আদর্শ এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতিফলন থাকাটা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার -২০১৯’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
চলচ্চিত্রকে একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা রাজনীতিবিদরা যত কথাই বলি না কেন একটি নাটক, সিনেমা বা গান বা কবিতা দিয়ে অনেক কথা বলা যায় এবং মানুষের অন্তরে প্রবেশ করা যায়। মনের গহীনে প্রবেশ করা যায়। সেজন্য এর একটা আবেদন রয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের বিনোদনের একমাত্র মাধ্যম চলচিচত্র। অথচ এটি কিন্তু দিনে দিনে শেষ হয়ে যাচ্ছে।
তাছাড়া, এই ডিজিটাল যুগে, যুগের সংগে তাল মিলিয়ে না করা হলে এর আকর্ষণ যেমন থাকে না তেমনি বাজারও পাওয়া যায় না। সেজন্যই বিএফডিসিকে উন্নত করায় তাঁর সরকার একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
২০১৯ সালে ২৬টি ক্যাটাগরিতে ৩৩ জন শিল্পী এবং কলাকুশলীকে পুরস্কৃত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তথ্য মন্ত্রী ড.হাছান মাহমুদ পুরস্কার বিজয়ীদের মাঝে পদক, রেপ্লিকা, সম্মাননার চেক এবং সনদ বিতরণ করেন।
শ্রেষ্ঠ অভিনেতা তারিক আনাম খান (আবার বসন্ত) এবং অভিনেত্রী হিসেবে প্রসুনেরাহ বিনতে কামাল (ন ডরাই) ২০১৯ সালের এই পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া, শ্রেষ্ঠ খল চরিত্রের জন্য জাহিদ হাসান (সাপলুডু) এবং শ্রেষ্ঠ পরিচালক হিসেবে তানিম রহমান অংশু (ন ডরাই) পুরস্কার লাভ করেন এবং যৌথভাবে ‘ন ডরাই’ এবং ‘ফাগুন হাওয়ায়’ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র মনোনীত হয়। মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা এবং কোহিনুর আক্তার সুচন্দা আজীবন সম্মাননা পুরস্কার লাভ করেন।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। তথ্য সচিব খাজা মিয়া স্বাগত বক্তৃতা করেন। পুরস্কার বিজয়ীদের পক্ষে আজীবন সম্মাননা বিজয়ী মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করে বক্তৃতা করেন।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, চলচ্চিত্র শিল্পে সংশ্লিষ্ট অভিনেতা-অভিনেত্রীসহ কলাকুশলীবৃন্দ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউসসহ গণভবন এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকার নিকটে কালিয়াকৈরের কবিরপুরে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফিল্ম সিটি’ নির্মাণের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়েছে বলেও শেখ হাসিনা তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, সেখানে আধুনিক সিনেমা তৈরি করতে যা যা প্রয়োজন সেই ধরনের সকল সুবিধা রাখা হচ্ছে। যাতে আমাদের সিনেমা শিল্পটা আরো উন্নত মানের হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রেও আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি, কেননা, এখন ডিজিটাল যুগ। আমাদের চলচ্চিত্র কেবল দেশে নয় বিদেশেও যাতে যেতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা সেন্সর সংক্রান্ত আইন ও বিধি আধুনিকভাবে তৈরী এবং সেগুলো কঠোর ভাবে যেন মানা হয় সেদিকেও বিশেষ ভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, ১ হাজার কোটি টাকার একটি ফান্ড আমরা তৈরী করবো। যেখান থেকে অল্প সুদে টাকা নিয়ে সংশ্লিষ্টরা সিনেমা হল বা সিনেপ্লেক্স তৈরী করতে পারবে। যাতে ঐ অঞ্চলের মানুষের বিনোদনের ব্যবস্থাটা হবে।
তিনি বলেন, অনেকগুলো সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। কাজেই সেগুলোকে পুণরায় চালু করা শুধু নয়, এর আধুনিকায়ন করা প্রয়োজন। কারণ ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন অনেক উন্নতমানের সিনেমা তৈরী করা যায়। সেই দিকেই আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিচ্ছি এবং সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।
তেজগাঁও আসনের সংসদ সদস্য থাকার সময় তিনি বিএফডিসির সড়কটি নির্মাণ করেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এরকাছেই থাকা কারওয়ান বাজারের পাইকারী বাজারও ধীরে ধীরে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করবে সরকার। কাছেই থাকা হাতির ঝিলসহ আশপাশের এই এলাকাটাকেও সরকার সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চায়।
তিনি বলেন, ‘এজন্য ৩২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে সরকারের বিএফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।’
পুরস্কার বিতরণ এবং আলোচনা পর্ব শেষে প্রধানমন্ত্রী চলচ্চিত্র শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও উপভোগ করেন।

Manual8 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code