বই পড়ার অভ্যাস তৈরির জন্য কেরালায় একটি লাইব্রেরী এটা

প্রকাশিত: ২:৩৯ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ৩, ২০২০

বই পড়ার অভ্যাস তৈরির জন্য কেরালায় একটি লাইব্রেরী এটা

Manual5 Ad Code

|| সৈয়দ অারমান জামী || ০৩ অাগস্ট ২০২০ : ছবিতে কেরালায় একটি লাইব্রেরী এটা। বই পড়ার অভ্যাস তৈরির জন্য, পাঠককে আকর্ষণ করতে কি সুন্দর চিন্তা। খুবই দৃষ্টিনন্দন।।

বইপড়া অনেক আনন্দের। ছোটবেলা থেকেই আমরা সবাই পাঠ্যপুস্তকের পাশাপাশি গল্পের বই পড়ে থাকি। লেখাপড়ার পাশাপাশি গল্পের বই পড়লে মেধার বিকাশ ঘটে। এছাড়া পাঠ্যপুস্তকের সীমিত জ্ঞান থেকে বাইরে বেরিয়ে রঙিন পৃথিবীর বিচিত্র তথ্য সম্পর্কে জানা যায়। কিন্তু বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। কর্মব্যস্ত এই জীবনে তাই আগের মতো বই পড়া হয়ে ওঠে না। কিন্তু তা সত্ত্বেও অনেকের ইচ্ছা থাকে একটু সময় বের করে বইপড়া। তাই নতুন বছরে কিভাবে বই পড়ার অভ্যাসটা বাড়ানো যায় তা জেনে নিন।

১. প্রথমেই লক্ষ্য স্থির করে ফেলুন এ বছর কয়টি বই পড়বেন

বছরের শুরুতেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুন এ বছর কয়টি বই পড়বেন। আপনার বন্ধু বা বান্ধবী ৫০/৬০টি বই পড়বে তাই আপনাকেও তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে হবে এ চিন্তা সম্পূর্ণ বাদ দিন। আপনি বইপড়ার উপর কতটুকু সময় ব্যয় করছেন সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। সাধারণত বছরে ১২টি অর্থাৎ মাসে একটি বই পড়বেন এভাবে একটি টার্গেট তৈরি করুন। পরবর্তীতে যদি আপনার বইপড়ার হার বেড়ে যায় তাহলে পূর্ববর্তী টার্গেটের সাথে তা সম্বন্বয় করে নিন।

২. নির্ধারণ করে নিন প্রতিদিন কতক্ষণ অথবা কত পৃষ্ঠা বই পড়বেন

Manual6 Ad Code

সাধারণত যারা নিয়মিত বই পড়েন দেখা যায়, তারা প্রতিদিন ৩০ মিনিট অথবা ১ ঘণ্টা বইপড়ার উপর সময় ব্যয় করেন। প্রথমেই অনেক পড়ার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করবেন না। যেমন ১০০ পৃষ্ঠা বই পড়বেন। তাহলে খুব সহজেই উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। অল্প লক্ষ্যমাত্রা স্থির করুন। তাহলে সহজে বইপড়ার প্রতি আগ্রহ বাড়বে।

Manual6 Ad Code

৩. প্রতিদিন বইপড়ার জন্য সবচেয়ে উপযোগী সময় বাছাই করুন

কেউ ঘুমাতে যাওয়ার আগে বই পড়তে পছন্দ করে। আবার কেউ কেউ চা, কফি পান করার সময় বই পড়তে ভালোবাসেন। কেউ আবার পড়ন্ত বিকেলে বই নিয়ে বসেন। অনেকে আবার সাপ্তাহিক কর্মব্যস্ত দিনের থেকে ছুটির দিনে বেশি বই পড়তে পছন্দ করেন। সুতরাং আপনি বেছে নিন আপনার বই পড়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।

কেউ কেউ চা, কফি পান করার সময় বই পড়তে ভালোবাসেন।
৪. আপনার ঘরে বইপড়ার একটি উপযোগী পরিবেশ গড়ে তুলুন

পরিবেশ মানুষের অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করে। আপনার ঘরে যদি বইপড়ার উপযুক্ত পরিবেশ থাকে তাহলে খুব সহজেই আপনার বইপড়ার প্রতি আগ্রহ জন্মাবে। খেয়াল করে দেখবেন যেসব বাসায় টিভি দেখার প্রচলন কম সেসব পরিবারের সদস্যরা বইপড়ায় বেশি আগ্রহী হয়।

৫. আজই লাইব্রেরী কার্ড বানিয়ে ফেলুন

অনেক সময় সব ধরণের বই কিনে পড়া সম্ভব হয় না। এছাড়া অনেকে অনলাইনে বই পড়তেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। তাদের জন্য এই সমস্যা সমাধানের উপায় হলো লাইব্রেরী। লাইব্রেরী কার্ড থাকলে আপনি একটি বই পড়া শেষ হলে আরেকটি বই এনে পড়তে পারেন। এছাড়া লাইব্রেরী হচ্ছে বইয়ের ভান্ডার। সেখানে বিভিন্ন বিষয়ে হরেক রকমের বই পাওয়া যায়। এছাড়া আপনি যদি নিরিবিলি বই পড়তে ভালোবাসেন তাহলে লাইব্রেরি নি:সন্দেহে একটি শ্রেষ্ঠ জায়গা।

বইপ্রেমীদের জন্য লাইব্রেরি নি:সন্দেহে একটি শ্রেষ্ঠ জায়গা।

৬. সবসময় সাথে একটি বই বহন করবেন

যেখানেই যান না কেন সাথে একটি বই বহন করবেন। হয়তো রাস্তায় অসম্ভব যানজট। এই ক্ষেত্রে বই পড়ে আপনি সেই সময়টুকু কাজে লাগাতে পারেন। এছাড়া বই আপনার জীবনে খুব ভালো ভ্রমণসঙ্গীর দ্বায়িত্ব পালন করতে পারে।

Manual7 Ad Code

৭. আপনার ফোনই হয়ে উঠতে পারে আপনার বই

অনেকে অনলাইনে, ই-বুক কিংবা পিডিএফে বই পড়তে পছন্দ করেন। এক্ষেত্রে আপনার ফোন কিংবা ট্যাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আপনার ফোনে লাইব্রেরি অ্যাপ ইন্সটল করে নিতে পারেন। এভাবে আপনি অসংখ্য বই পড়তে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার বাড়তি বই বহন করার ঝামেলাও পোহাতে হবে না।

৮. অডিও বই শুনুন

ডিজিটাল যুগের নতুন আকর্ষণ অডিও বই। আপনি হয়তো বাসে দাঁড়িয়ে আছেন কিংবা সকালে হাঁটতে বের হয়েছেন। এক্ষেত্রে দেখে বই পড়ার উপায় নেই। কিন্তু আপনি যদি হেডফোন কানে লাগিয়ে নিতে পারেন তাহলে অনায়েসে অডিও বইয়ের মাধ্যমে বই শুনতে পারেন।

Manual5 Ad Code

৯. পুরাতন বই স্থানীয় মার্কেট থেকে ক্রয় করুন

অনেক সময় অনেকে পড়া শেষ হয়ে গেলে পুরনো বই বিক্রি করে দেয়। আপনি যদি অন্যের বই কম দামে কিনতে পছন্দ করেন তাহলে খুব সহজেই স্থানীয় বাজার থেকে অনেক কম মূল্যে এসব বই কিনে পড়তে পারেন।

১০. আপনার বন্ধুর সাথে বইয়ের একটি ক্লাব খুলুন

আপনার বন্ধু এবং আপনি যদি একই ধরণের বই পড়তে পছন্দ করেন। তাহলে আপনি একটি ‘বুক ক্লাব’ খুলতে পারেন। এভাবে আপনারা একটি বই পড়া শেষ করে আলোচনা করতে পারেন।

১১. অনলাইনে পাঠকদের ক্লাব খুলতে পারেন

যদি আপনার বন্ধুরা কাছাকাছি না থাকে তাহলে আপনারা অনলাইনে সকল পাঠকেরা মিলে একটি বই নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।

১২. সিনেমা দেখার আগে বইটি পড়ে ফেলুন

অনেক ভালো বই দেখা যায় পরবর্তীতে সিনেমা বানানো হয়। অনেক সময় দেখা যায় সিনেমায় সেগুলোর অনেক অংশ বাদ দিয়ে দেয়া হয়। তাই সিনেমা দেখার পূর্বে বইটি পড়ে ফেলা উচিত।

বর্তমানের ডিজিটাল যুগে বইপড়ার অভ্যাসগুলোর আস্তে আস্তে হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এই ছোট ছোট অভ্যাসগুলোর মাধ্যমে নতুন বছরে সবাই আরো বেশি বইপড়ার ব্যাপারে আগ্রহী হবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ