কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ১২২ বছরে পদার্পণ

প্রকাশিত: ৬:২৮ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৪, ২০২০

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ১২২ বছরে পদার্পণ

Manual6 Ad Code

॥ কামাল আতাতুর্ক মিসেল ॥ কুমিল্লা (দক্ষিণ), ২৪ নভেম্বর ২০২০ : দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠটির প্রতিষ্ঠাতা হলেন রায় বাহাদুর আনন্দচন্দ্র রায়। ১৮৯৯ সালের ২৪ নভেম্বর কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ প্রতিষ্ঠার পর ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘রায় বাহাদুর’ উপাধিতে ভূষিত করে। কলেজটির নামকরণ করা হয়েছিল তৎকালীন ব্রিটেনের রানী ভিক্টোরিয়ার নামানুসারে। কলেজ সূত্রে জানা যায়, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের পদাপর্ণ ও প্রতিবার্ষিকী উপলক্ষে এবার করোনার কারণে কলেজে কোন অনুষ্ঠান হচ্ছে না। তবে কলেজের ফেজবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হবে আলোচনা সভা। এতে উপস্থিত থাকবেন কুমিল্লা সদর আসনের সাংসদ হাজী আ.ক.ম. বাহাউদ্দীন বাহার, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরী, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কুমিল্লা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক সোমেশ কর চৌধুরী, কলেজ প্রতিষ্ঠাতার দৌহিত্র (৪র্থ পুরুষ) প্রকৌশলী অশোক সিংহ রায়, কুভিক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া, কুভিক শিক্ষক পরিষদ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহজাহান প্রমুখ । এছাড়া কলেজের সাংবাদিক সমিতিসহ একাধিক সংগঠন দিনব্যাপি নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে । প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই নানা বির্বতন ও বিকাশের মধ্য দিয়ে কলেজটি বর্তমানে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক, স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের একটি সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে শিক্ষা-সংস্কৃতির বিকাশে ব্রিটিশ ভারতে প্রথম পর্যায়ে যে কয়টি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়, ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ তার মধ্যে অন্যতম। তিতাশ চৌধুরী লিখেছেন, ‘প্রাচীনত্বের বিচারে এ কলেজটি বুড়োদের দলেই পড়ে। মূলত এইটিই ছিল পূর্বাঞ্চলীয় অন্ধকার যুগের শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক’। পাকিস্তান সৃষ্টির পর এ কলেজের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা চালানো হয়। ‘ভিক্টোরিয়া’ শব্দটি ছেঁটে ফেলে দেয়ার চিন্তা করা হয়। শেষ পর্যন্ত তা আর হালে পানি পায়নি।

বর্তমানে কলেজটি দুটি অংশে বিভক্ত। শহরের কান্দিরপাড় রানীদীঘির পাড়ে কলেজের ইন্টারমিডিয়েট শাখা এবং ধর্মপুরে অনার্স শাখা অবস্থিত। প্রায় ২৭ হাজার শিক্ষার্থীর পদচারণায় কলেজটি মুখরিত হয় প্রতিদিন। ২২টি বিষয়ে অনার্স ও ১৯টি বিষয়ে মাস্টার্স পড়ানো হয় এখানে। এ কলেজে রয়েছে ১২টি সক্রিয় সাংস্কৃতিক সংগঠন। সংগঠনগুলো শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে অবদান রাখছে।
ভাষা আন্দোলন ও স্বাধীনতা সংগ্রামে কলেজটির ভূমিকা ছিল অনন্য। উপমহাদেশের বিখ্যাত সংগীতজ্ঞ শচীন দেববর্মণ, সত্যেন্দ্রনাথ বসু, অদ্বৈত্য মল্লবর্মণ, ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত, অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, হানিফ সংকেত এর মতো অসংখ্য খ্যাতনামা সাবেকদের পদচারণায় মুখরিত হয়েছে ভিক্টোরিয়ার ক্যাম্পাস।
আধুনিকতার সঙ্গে সমান তালে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কলেজটি। এখানকার প্রতিটি ভবনের ডিজাইন সত্যিই মনোমুগ্ধকর। এছাড়া হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল, মুক্তমঞ্চ, স্বাধীনতা স্তম্ভ, আনন্দচন্দ্র রায়ের প্রতিকৃতি, শহীদ মিনার, কলেজ ক্যান্টিন, কলেজ লেক, রানীদীঘি, কবি নজরুল ইসলাম হল, নওয়াব ফয়জুন্নেছা হল, মুতাহের হোসেন চৌধুরী লাইব্রেরি ভিক্টোরিয়া কলেজের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইন্টারমিডিয়েট শাখার রানীদীঘির পাড়ে বসে তার বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন, লিখতেন কবিতা। কথিত আছে, এখানে বসেই কবি তার প্রিয়তমা নার্গিসকে প্রেমপত্র লিখে পাঠাতেন। শত বাধা পেরিয়ে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ আজ তার ১২২ বছরের পদার্পন করেছে। নিজস্বতা ধরে রেখে পথ চলছে আগামীর পথে। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠাকালে যে আনন্দধারা প্রবাহিত ছিল, তা আজও অব্যাহত রয়েছে।

Manual8 Ad Code

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ১২২ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির মৌলভীবাজার জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য, অারপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ অামিরুজ্জামান।

Manual1 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code