মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার লড়াইয়ে তারিক আলীর শূণ্যতা অপূরনীয়: সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন

প্রকাশিত: ৩:৩৯ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখার লড়াইয়ে তারিক আলীর শূণ্যতা অপূরনীয়: সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ : “মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখা, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ বিরোধী লড়াইয়ে তারিক আলীর শূণ্যতা অপূরনীয় হয়ে থাকবে।” সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সভাপতি, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের অন্যতম ট্রাষ্ট্রি জিয়া উদ্দিন তারিক আলীর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে আজ বিকেল ৫টায় সংগঠনের কার্যালয় রুম-১ পশ্চিম গ্যালারী সংলগ্ন, জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্স, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০ এক স্মরণসভা সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ডা. অসিত বরণ রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

সভায় ভার্চুয়াল আলোচনায় অংশ নেন সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, পঙ্কজ ভট্টাচার্য, ডা. সারওয়ার আলী, সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চের সমন্বয় ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার।
আরও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার হোসেন সামছি, জহিরুল ইসলাম জহির, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট পারভেজ হাসেম, শিক্ষা ও প্রশিক্ষন বিষয়ক সম্পাদক অলক দাশগুপ্ত, কেন্দ্রীয় নেতা মোঃ নূরল আমিন, মহানগর সদস্য সচিব জুবায়ের আলম প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, দেশ আজ কঠিন সময় অতিবাহিত করছে, বৈশ্বিক মহামারী করোনার সাথে সমান তালে বাড়ছে ডেঙ্গুর প্রার্দূভাব। প্রতিদিন মৃত্যুর মিছিল যেমন দীর্ঘায়িত হচ্ছে তেমনি আক্রান্ত হওয়ার সংখ্যাও দীর্ঘতর হচ্ছে। অন্যদিকে সরকার ও প্রশাসনের ত্রুটি, দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে সাম্প্রদায়িক অপশক্তি দেশে তাদের অবস্থান দৃঢ়তর করে মহান স্বাধীনতার স্বপ্নকে চিরতরে মুছে দেবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হচ্ছে। এইসময়ে আফগানিস্থানে অপশক্তি তালেবানের আকস্মিক উত্থানে আমাদের দেশেও জঙ্গিরা সংগঠিত হতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। দেশে সামাজিক অনাচার নারী-শিশু নির্যাতন, সংখ্যালঘু ও আদিবাসী নিগৃহিতের সংখ্যাও বেড়ে চলেছে। একইসাথে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, কর্মহীনতা বেকারত্ব দেশের সার্বিক পরিস্থিতিকে জটিলতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। সরকার নানান কৌশলে মানবিক বিপর্যয় ও সাম্প্রদায়িক শক্তির সম্প্রসারণের পথকে সুগম করছে। এহেন পরিস্থিতিতে জিয়া উদ্দিন তারিক আলীর মতো বিচক্ষন দেশপ্রেমিক অসাম্প্রদায়িক সংগঠকের অভাব তীব্রতর হচ্ছে। তারিক আলী মহামারী কারোনায় গত বছর ৭ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে চলে গেলেন। সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর সহ দেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে আন্দোলনে তারিক আলীর শূণ্যতা অপূরনীয় হয়ে থাকবে। আমরা তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।
সভায় অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল ভার্চুয়াল আলোচনা অংশ নিয়ে বলেন, ছোট বেলা থেকে তারিক আমার বন্ধু ছিলেন। আমৃত্যু তারিক আলী নীতি নিষ্ঠার সাথে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও শোষণ মুক্তির লড়াইয়ে শামিল ছিলেন। দেশের প্রয়োজনে ত্যাগ স্বীকার করার মতো সাহসী ব্যক্তিত্ব তারিক আলী তাঁর কর্মময় জীবন দেশপ্রেমে যে অবদান রেখে গেছেন তা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
পঙ্কজ ভট্টাচার্য বলেন, মুক্তিযুদ্ধকে সংগঠিত করার মধ্যদিয়ে তারিক আলী মানবমুক্তির লড়াইয়ে সদা জাগ্রত ছিলেন। দেশের যে কোন প্রান্তে সংখ্যালঘু আদিবাসী সহ সমাজের দূর্বল জনগোষ্ঠির দুঃখে তিনি সর্বদা ব্যথিত হতেন। ছুঁটে যেতেন অকুলস্থলে, জনমত গঠন ও প্রতিকারের দাবিতে সর্বদা সোচ্চার থাকতেন। মানব সেবার অন্যন্য দৃষ্টান্ত স্থাপককারী তারিক আলী জাতীয় জীবনে স্মরণীয় থাকবে।
ডা. সারওয়ার আলী বলেন, কর্ম পাগল এই লোকটি সদা ব্যস্ত থাকতেন মানবতার মুক্তির অগ্রসর চিন্তায়। তার ধৈয্য ও কর্মের ফসল মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর। মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর আজ ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখছে মুক্তবুদ্ধি চর্চায়, ইতিহাস ঐতিহ্য রক্ষায় তারিক আলী ত্যাগের যে দৃষ্টান্ত দেখিয়েছেন নতুন প্রজন্মকে সংগঠিত ও মুক্তবুদ্ধির চর্চায় উদ্বুদ্ধ করে গেছেন তা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি।
ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার বলেন, একজন বন্ধু একজন নীতিনিষ্ঠ সমাজ কর্মী হিসেবে তাঁর দৃঢ়তা আমাদের এখনো প্রেরণা যোগায়, আমি তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।