জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে ২৪ অক্টোবর

প্রকাশিত: ৬:৫৮ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২১, ২০২৪

জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে ২৪ অক্টোবর

Manual2 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ২১ অক্টোবর ২০২৪ : দেশের (ঢাকা ব্যতীত) সাত বিভাগে আগামী ২৪ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে ছাত্রীদের জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে বিনামূল্যে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) টিকাদান কর্মসূচি।

Manual4 Ad Code

এদিন সরকারের উদ্যোগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), ইউনিসেফ ও দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গ্যাভির সহায়তায় এই টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে।

এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আজ সোমবার (২১ অক্টোবর ২০২৪) জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট আয়োজিত এক কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়।

জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সুফী জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে কর্মশালার উদ্বোধন করেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মো. নজরুল ইসলাম।

ইউনিসেফের প্রতিনিধি ব্রিজেট জব জনসন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) উপ-পরিচালক ডা. মো. শাহরিয়ার সাজ্জাদ প্রমুখ।

কর্মশালায় এইচপিভি টিকাদান ক্যাম্পেইন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ইপিআই কর্মসূচির ডিপিএম ডা. রাজীব সরকার।

এই ক্যাম্পেইনে গণমাধ্যমের ভূমিকা সম্পর্কে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউটের পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম।

Manual4 Ad Code

সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) উপ-পরিচালক ডা. মোহাম্মদ শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, সরকারের উদ্যোগে দেশে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর এইচপিডি টিকাদান ক্যাম্পেইন আগামী ২৪ অক্টোবর ঢাকা বিভাগ ব্যতীত অবশিষ্ট সাতটি বিভাগে শুরু হতে যাচ্ছে। এই ক্যাম্পেইন চলবে চার সপ্তাহ।
এরআগে ২০২৩ সালে ঢাকা বিভাগের ১৫ লাখেরও বেশি কিশোরীকে এক ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদান করা হয়েছে। এতে কোন কিশোরীর কোন বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়, জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধের লক্ষ্যে মোট ১৮দিন টিকাদান কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এর মধ্যে প্রথম ১০দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ও ইপিআই স্থায়ী কেন্দ্রসমূহে এ কার্যক্রম চলবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৫ম-৯ম শ্রেণীর ছাত্রীরা টিকা পাবে। কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে টিকা নিতে অসমর্থ হলে তারা স্থায়ী কেন্দ্রে টিকা নিতে পারবে। এছাড়া স্থায়ী কেন্দ্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী কিশোরীরাও টিকা গ্রহণ করতে পারবে।

পরবর্তী আটদিন নিয়মিত ইপিআই স্থায়ী (যেমন জেলা হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স) ও অস্থায়ী (যেমন বিভিন্ন ইউনিয়ন, ওয়ার্ডের টিকাদান কেন্দ্র) টিকাদান কেন্দ্রের মাধ্যমে কমিউনিটির ১০ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বহির্ভূত কিশোরীদের টিকা প্রদান করা হবে। তবে এক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাদ পড়া ৫ম-৯ম শ্রেণীর ছাত্রীরাও টিকা নিতে পারবে।
শুরুতে এ কার্যক্রম সাতটি বিভাগের নির্দিষ্ট বয়সী ও নির্ধারিত শ্রেণীতে অধ্যয়নরত কিশোরীরা www.vaxepi.gov.bd ওয়েবসাইটে নিবন্ধন করে টিকাকার্ড সংগ্রহ করতে পারবে। পরে ওই কার্ড দেখিয়ে টিকার ডোজ গ্রহণ করা যাবে।

উল্লেখ্য, নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ জরায়ুমুখ ক্যান্সার। নারীরা যেসব ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন সেসবের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার বৈশ্বিকভাবে চতুর্থ সর্বোচ্চ এবং বাংলাদেশী নারীদের ক্ষেত্রে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

Manual6 Ad Code

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ৬ লাখ ৬০ হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এদের মধ্যে প্রায় ৩ লাখ ৫০ হাজার জন মৃত্যুবরণ করে থাকেন, যার প্রায় ৯৪ শাতাংশই মৃত্যুই বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল বা স্বল্পোন্নত দেশে ঘটে থাকে। বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ৮ হাজার ২৬৮ জন নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং তার মধ্যে প্রায় ৪ হাজার ৯৭১ জন নারী মৃত্যুবরণ করেন। বাংলাদেশে ১৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সী নারীদের ক্যান্সারজনিত মৃত্যুর ক্ষেত্রে জরায়ুমুখ ক্যান্সার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

Manual5 Ad Code

ইপিআই’র উপ-পরিচালক ডা. শাহরিয়ার সাজ্জাদ বলেন, ঢাকা বিভাগের অভিজ্ঞতার আলোকে অবশিষ্ট সাতটি বিভাগে অক্টোবর-নভেম্বের মোট ১৮ দিন এইচপিভি ক্যাম্পেইন শুরু হবে ২৪ অক্টোবর।

আমাদের লক্ষ্য সাত বিভাগে মোট ৬২ লাখ ১২ হাজার ৫৩২ জন কিশোরীকে এই টিকা প্রদান করা। ৫ম থেকে ৯ম শ্রেণীর ছাত্রীরা এই টিকা গ্রহণ করতে পারবে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) ডিপিএম ডা. রাজিব সরকার জানান, সাধারণত এই ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হওয়া থেকে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের লক্ষণ প্রকাশ পেতে ১৫-২০ বছর সময় লাগে। এজন্য এই রোগকে নীরব ঘাতক বলা হয়। আক্রান্ত রোগীদের অধিকাংশই প্রায় শেষ পর্যায়ে শনাক্ত হন যখন রোগ থেকে সেরে ওঠা খুবই কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। কিশোরীদের নির্দিষ্ট বয়সে এক ডোজ এইচপিভি টিকা প্রদান করলে এই ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code