কমলগঞ্জে মণিপুরীদের ঐতিহ্যবাহী ‘রাস উৎসব’ কাল

প্রকাশিত: ৪:১১ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০২৪

কমলগঞ্জে মণিপুরীদের ঐতিহ্যবাহী ‘রাস উৎসব’ কাল

Manual5 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার), ১৪ নভেম্বর ২০২৪ : রাসপূর্ণিমা উৎসব বৃহত্তর সিলেটের আদিবাসী মণিপুরী সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী উৎসব। প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালন করা হয়। রাস উৎসব উপলক্ষে আয়োজন করা হয় রাসনৃত্যের। রাসনৃত্য মনিপুরী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক অপূর্ব শৈল্পিক সৃষ্টি।

আগামীকাল শুক্রবার (১৫ নভেম্বর ২০২৪) তুমুল হৈচৈ, আনন্দ-উৎসাহে ঢাক-ঢোল, খোল-করতাল আর শঙ্খ ধ্বনির মধ্যদিয়ে হিন্দুধর্মের অবতার শ্রীকৃষ্ণ ও তার সখি রাধার লীলাকে ঘিরে অনুষ্টিত হবে রাস উৎসব। এইদিন দুপুরে উৎসবস্থল মাধবপুরের শিববাজার উন্মুক্ত মঞ্চ প্রাঙ্গণে হবে গোষ্ঠলীলা বা রাখাল নৃত্য। রাতে জোড় মন্ডপে রাসের মূল প্রাণ মহারাসলীলা।

জানা যায়, ১৭৭৯ সালে মণিপুরের মহারাজা ভাগ্যচন্দ্র স্বপ্ন দেখে নৃত্যগীতে যে প্রার্থনার শুরু করেছিলেন, সেটাই রাস উৎসব। ভাগ্যচন্দ্রের পরবর্তী রাজাদের বেশির ভাগই ছিলেন নৃত্যগীতে পারদর্শী এবং তারা নিজেরাও রাসনৃত্যে অংশ নিতেন। সেই ধারাবাহিকতায় উদযাপিত হয়ে আসছে রাস উৎসব। বর্নাঢ্য আয়োজন, মৃদঙ্গ, করতাল ও শঙ্খধ্বনির মধ্য দিয়ে রাধাকৃষ্ণের লীলা ও শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন ঘিরে এই দিনটি সকলের উৎসব হয়ে ওঠবে।

Manual5 Ad Code

মহারাসলীলার মূল উপস্থাপনা শুরু হবে দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ‘গোষ্ঠলীলা বা রাখালনৃত্য’ দিয়ে। গোষ্ঠলীলায় রাখাল সাজে কৃষ্ণের বালকবেলাকে উপস্থাপন করা হবে। এতে থাকবে কৃষ্ণের সখ্য ও বাৎসল্য রসের বিবরণ। গোধূলি পর্যন্ত চলবে রাখালনৃত্য। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্টান রাত ১১টা থেকে পরিবেশিত হবে মধুর রসের নৃত্য বা শ্রীশ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলানুসরণ। রাসনৃত্য ভোর (ব্রাহ্ম মুহূর্ত) পর্যন্ত চলবে। রাসনৃত্যে গোপিনীদের সাথে কৃষ্ণের মধুরলীলার কথা, গানে ও সুরে ফুটিয়ে তুলবেন শিল্পীরা।

Manual8 Ad Code

রাসোৎসবে মণিপুরী সম্প্রদায়ের লোকজনের পাশাপাশি অন্যান্য জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে হাজার হাজার লোকজন মেতে উঠবে একদিনের আনন্দ উৎসবে। মহারাত্রির আনন্দের পরশ পেতে আসা হাজার হাজার নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, দেশি-বিদেশি পর্যটক, বরেণ্য জ্ঞানী-গুণী লোকজনসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠবে মাধবপুর ও আদমপুরের মন্ডপ প্রাঙ্গণ। রাসোৎসবকে ঘিরে মাধবপুর ও আদমপুরের মন্ডপগুলো সাজানো হচ্ছে সাদা কাগজের নকশার নিপুণ কারুকাজে। করা হচ্ছে আলোকসজ্জাও। সেখানে মণিপুরী শিশু নৃত্যশিল্পীদের সুনিপুণ নৃত্যাভিনয় রাতভর মনমুগ্ধ করে রাখবে লাখো ভক্ত ও দর্শনার্থীদের। মণিপুরী পল্লীর এ উৎসবে দেশের বিভিন্ন স্থানসহ ভারত থেকেও মণিপুরী সম্প্রদায়ের লোকজনসহ জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে অনেকেই ছুটে আসেন মহারাসলীলা অনুষ্ঠান উপভোগের জন্য।

Manual2 Ad Code

রাসলীলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ জানান, আগামীকাল ১৫ নভেম্বর, দামোদর মাসখ্যাত কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে গৌড়ীয় বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী মণিপুরিদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব রাসপূর্ণিমা বা মহারাসলীলা হবে। এই উৎসবে সারাদেশের আগ্রহী মানুষের ঢল নামবে। ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের অংশগ্রহণে এটি পরিনত হয় এক মহা মিলনমেলা।
কমলগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবেদীন ও থানার অফিসার ইনচার্জ সৈয়দ ইফতেখার হোসেন বলেন, আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে নিরাপত্তার জন্য দুইস্থানেই যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

 

Manual1 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code