হিন্দু নারীদের ডিভোর্সের অধিকার, সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার কেন দেয়া হবে না: হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ২:৩০ অপরাহ্ণ, মে ১৪, ২০২৩

হিন্দু নারীদের ডিভোর্সের অধিকার, সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার কেন দেয়া হবে না: হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ১৪ মে ২০২৩ : হিন্দু বিবাহ আইনে নারীদের ডিভোর্সের অধিকার, সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। হিন্দু বিবাহ আইন বিয়ে রেজিস্ট্রেশন কেন বাধ্যতামূলক করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

রোববার (১৪ মে ২০২৩) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্না, অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন, অ্যাডভোকেট মো. শাহীনুজ্জামান।

মন্ত্রী পরিষদ সচিব, আইন সচিব, সংসদ সচিবালয় বিষয়ক সচিব, ধর্ম সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

রুলের বিষয়ে বাংলাদেশ হিন্দু আইন সংস্কার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক পুলক ঘটক জানিয়েছেন, শুধুমাত্র নারী হওয়ার কারণে কোনো একটি জনগোষ্ঠী’র অর্ধেক মানুষকে পিতামাতার সম্পত্তির উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত করা, অমানবিক এবং সংবিধান বিরোধী।

তিনি বলেন, পুরুষদের যত খুশি বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া এমনকি স্বেচ্ছাচারি লাম্পট্যপূর্ণ জীবন যাপনের সুযোগ দেওয়া অথচ তাদের স্ত্রীদেরকে বিবাহ বিচ্ছেদের অধিকার না দেওয়া অমানবিক। যে পরিস্থিতিতে প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের জন্যই প্রয়োজনীয়।

তিনি আরো বলেন, নারীরা সন্তান ধারণ করবে এবং লালন-পালন করবে, কিন্তু তাদের সন্তানদের অভিভাবকত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হবে না- এটিও অমানবিক। বৈবাহিক ব্যবস্থার অধীনে নর-নারীর যে কোনো ধরণের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বিবাহ নিবন্ধন হওয়া দরকার।

পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলেন, লিঙ্গ পরিচয়ের ভিত্তিতে কাউকে বঞ্চিত করার অনুমতি সংবিধান রাষ্ট্রকে দেয়নি। অথচ দেশের হিন্দু, বৌদ্ধ এবং অন্যান্য সমস্ত আদিবাসী গোষ্ঠীভুক্ত নারী এবং লিঙ্গবৈচিত্রময় জনগোষ্ঠী অধকারহীন বৈষম্যমূলক অবস্থায় বাস করছে।

পুলক ঘটক জানিয়েছেন, আমি হাইকোর্টের আদেশকে স্বাগত জানাই এবং রিট পিটিশনটি দ্রুত নিষ্পত্তি হবে আশা করছি। কারণ এরকম মামলা যতদিন ঝুলে থাকবে ততদিন বিপুল সংখ্যক মানুষ অধিকারহীন অবস্থায় রয়ে যাবে।

এর আগে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র, ব্লাস্টসহ ৯টি সংগঠন হিন্দু নারীদের আইনগত অধিকার নিশ্চিত করতে ও হিন্দু বিবাহ আইনের অসংগতি দুরীকরণে একটি নীতিমালা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়।