ন্যূনতম মজুরি নিয়ে মজুরি বোর্ডে গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনসহ ৩ সংগঠনের আপত্তি

প্রকাশিত: ৭:৩২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৪, ২০২৩

ন্যূনতম মজুরি নিয়ে মজুরি বোর্ডে গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনসহ ৩ সংগঠনের আপত্তি

Manual6 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ১৪ নভেম্বর ২০২৩ : পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা প্রত্যাখান করে মজুরি বোর্ডে আপত্তি দিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন সহ তিনটি শ্রমিক সংগঠন। আরও বেশ কয়েকটি সংগঠনের পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি নির্ধারণের খসড়া গেজেটের ওপর আপত্তি দেওয়ার কথা রয়েছে। এসব আপত্তি ও সুপারিশ আমলেও নেওয়া হবে।

Manual7 Ad Code

বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশনের সভাপতি কামরূল আহসান ও সাধারণ সম্পাদক বাচ্চু মিয়া মজুরী বোর্ড কর্তৃক গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ১২৫০০ টাকা নির্ধারণের ঘোষণাকে অগ্রহণযোগ্য বলে তা পুণঃনির্ধারণ করে ২৩ হাজার টাকা মজুরি ঘোষনার দাবি জানিয়েছেন।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ঘোষিত মজুরি দ্বারা গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঠকানো হয়েছে; যা শ্রমিকদের চাহিদা পুরণ করবে না। তারা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের অস্বাভাবিক মুল্যবৃদ্ধি, জীবনযাত্রার ব্যয় যে হারে বেড়েছে, সেই বিবেচনায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের জন্য ঘোষিত খসড়া মজুরি শ্রমিকদের প্রকৃত মজুরিতে সৃষ্ট ঘাটতিপূরণ করবে না। আর মুদ্রাস্ফীতির বিবেচনায়ও এই বৃদ্ধি মাত্র ১৫ শতাংশ। প্রকৃত মজুরির বিচারে ৫৬ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি একটি গাণিতিক সংখ্যার প্রতারণা ছাড়া কিছু নয়। গত পাঁচ বছরে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মাথাপিচু আয় বৃদ্ধি বা দারিদ্র দুরীকরণের লক্ষ্যের মানদন্ডে বিচার করলে এটাই প্রমাণিত হয় সরকার এবং গার্মেন্টস মালিকরা শ্রমিকদের চাহিদার সংকট বিলোপের পরিবর্তে শ্রমিকদের দারিদ্রতার বেড়ি দিয়ে আটকে রেখে সস্তা শ্রম শোষণের নির্মম ব্যবস্থাকে প্রলম্বিত করতে চায়।

মজুরি বোর্ডকে মালিকদের প্রস্তাব অনুমোদনের ক্রীড়নক আখ্যা দিয়ে তারা বলেন, একদিকে মালিকদের উপস্থাপিত প্রস্তাবকেই মজুরি বোর্ড চুড়ান্ত মজুরি হিসাবে ঘোষণা করে মালিকদের স্বার্থ রক্ষা করার চেষ্টা করছে, অন্যদিকে শ্রমিক প্রতিনিধি ঘোষিত মজুরীকে যথার্থ আখ্যা দিয়েছেন, যা গার্মেন্টস শ্রমিকদের আকাংখার প্রতি বেঈমানীর সামিল।

Manual2 Ad Code

নেতৃবৃন্দ বলেন, ঘোষিত মজুরিতে গ্রেড কঠামোর পরিবর্তনের শ্রমিকদের সাথে প্রতারণার কৌশল নেয়া হয়েছে শ্রমিকরা পূর্বের মজুরি কাঠামোর ৫ ও ৬ নম্বর গ্রেড বাদ দেওয়ার দাবি জানালেও মালিকদের সাথে আপোস করে ১ও ২ নম্বর গ্রেড বাদ দিয়ে কিছু কর্মচারীদের সুরক্ষা দুর্বল করা হয়েছে। বাৎসরিক গড় মূল্যস্ফীতি প্রায় ১০ শতাংশ হলেও শ্রমিকদের বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট ৫ শতাংশ ধরা হয়েছে যা শ্রমিকদের মজুরি কমানোর কৌশল। নেতৃবৃন্দ, মজুরীর পূর্ণাঙ্গ কাঠামো দ্রুত প্রকাশ করে, আইন মন্ত্রনালয়ে ভেটিংয়ের পূর্বে শ্রমিকদের মজুরি পুণঃর্বিবেচনা করার আহবান জানান।

সংশ্লিষ্ট একাধিক পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ২৬ নভেম্বর নিম্নতম মজুরি বোর্ডে বৈঠক হতে পারে। ওই বৈঠকে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের প্রতিনিধিদের সম্মতির ওপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত গেজেট হবে। ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা পরিবর্তন না হওয়ার আভাস মিললেও অন্য গ্রেডগুলোতে বেশকিছু পরিবর্তন আসার কথা রয়েছে।

Manual2 Ad Code

জানতে চাইলে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব রাইসা আফরোজ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত তিনটি সংগঠন খসড়া গেজেটের ওপর আপত্তি ও সুপারিশ জানিয়েছে।’ তবে সুনির্দিষ্টভাবে ওই ‍তিনটি সংগঠনের নাম জাননিনি তিনি।

Manual3 Ad Code

রাইসা আফরোজ বলেন, ‘১১ নভেম্বর খসড়া গেজেট হয়েছে। ২৪ নভেম্বর খসড়ার ১৪ দিন হবে। সেদিন শুক্রবার থাকায় আমরা রোববার (২৬ নভেম্বর) বৈঠক করতে পারি। সেখানে বিভিন্ন সংগঠন যেসব পর্যবেক্ষণ দিচ্ছে, সবকিছুর সারসংক্ষেপ করে তা প্রেজেন্টশন আকারে উপস্থাপন করব। কিছু বিষয়ে পরিবর্তন আসবে। যেহেতু খুব দ্রুত গেজেট করতে হয়েছে, বানানেও আমাদের বেশকিছু ভুল ছিল। আবার ন্যূনতম গ্রেডের সঙ্গে অন্যান্য গ্রেডের প্রার্থক্য খুব কম থাকার বিষয়টিও আমাদের নজরে এসছে। সবকিছুই পরবর্তী মিটিংয়ে উপস্থাপন করা হবে।’

এক প্রশ্নের উত্তরে নিম্নতম মজুরি বোর্ডের সচিব বলেন, ‘খসড়া যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, মিটিংয়ের পরও তাতে কিছু পরিবর্তন আসবে।’

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ