রুশ বিপ্লবের চেতনায় শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করতে হবে: শুভ্রাংশু চক্রবর্তী

প্রকাশিত: ৮:০৫ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ৭, ২০২৫

রুশ বিপ্লবের চেতনায় শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম বেগবান করতে হবে: শুভ্রাংশু চক্রবর্তী

Manual4 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি | সিলেট, ০৭ নভেম্বর ২০২৫ : মহান রুশ বিপ্লবের ১০৮তম বার্ষিকী উপলক্ষে এর তাৎপর্য ও প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন সিলেট জেলার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শুক্রবার (৭ নভেম্বর ২০২৫) বিকেল ৪টায় সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের সাহিত্য আসর কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভার পূর্বে একটি লাল পতাকা মিছিল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে এবং পরে সাহিত্য আসর কক্ষে এসে শেষ হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলন সিলেট জেলার সমন্বয়ক এডভোকেট মহিতোষ দেব মলয় এবং সঞ্চালনা করেন এডভোকেট রনেন সরকার রনি।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক জননেতা কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী।

শ্রমিক রাষ্ট্রের আদর্শ আজও প্রাসঙ্গিক

প্রধান অতিথির বক্তব্যে কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, “১৯১৭ সালের ৭ নভেম্বর রাশিয়ার বিপ্লবী শ্রমিক শ্রেণি তৎকালীন বুর্জোয়া সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে পৃথিবীর ইতিহাসে প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। মহামতি লেনিন ও স্ট্যালিনের নেতৃত্বে শ্রমিক শ্রেণির রাষ্ট্র গঠনের মধ্য দিয়ে মানবমুক্তির নতুন যুগের সূচনা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে সংশোধনবাদী নেতৃত্বের কারণে সোভিয়েত ইউনিয়ন পুঁজিবাদে পরিণত হয়, তবুও রুশ বিপ্লবের শিক্ষা আজও বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের সংগ্রামে আলোকবর্তিকা হয়ে আছে।”

তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশে জনগণ বারবার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে বুর্জোয়া শাসনব্যবস্থা উৎখাতের চেষ্টা করেছে, কিন্তু সংগঠিত শ্রমিক শ্রেণির নেতৃত্ব না থাকায় সেই অভ্যুত্থানগুলো জনগণের মুক্তির লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানও তার ব্যতিক্রম নয়।”

প্রশাসনের নিপীড়ন ও শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশা

কমরেড শুভ্রাংশু চক্রবর্তী সিলেটের সাম্প্রতিক প্রশাসনিক পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “শ্রমজীবী মানুষ—রিকশাচালক, হকার, চা শ্রমিক—আজ প্রশাসনের নিপীড়নের শিকার। কখনো ব্যাটারি রিকশা উচ্ছেদ, কখনো হকার উচ্ছেদ করে তাদের জীবিকা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, অথচ বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। এভাবে জনগণের রক্ত-ঘামে গড়া শহর থেকে শ্রমজীবী মানুষকে উৎখাত করা জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী।”

তিনি শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “রুশ বিপ্লবের চেতনায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের আবারও সংগঠিত হতে হবে। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে বেগবান করতে হবে। সমাজতন্ত্রই শ্রমিক শ্রেণির মুক্তির একমাত্র পথ।”

Manual6 Ad Code

Manual3 Ad Code

বিভিন্ন নেতার বক্তব্য

Manual5 Ad Code

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সাম্যবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য কমরেড সুশান্ত সিনহা সুমন, চা শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমরেড হৃদেশ মুদি, বাসদ সিলেট জেলার আহ্বায়ক কমরেড আবু জাফর, বাসদ সিলেট জেলার প্রাক্তন আহ্বায়ক কমরেড উজ্জ্বল রায়, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সিলেট জেলার সভাপতি কমরেড সিরাজ আহমদ, বাসদ (মার্ক্সবাদী) সিলেট জেলার সমন্বয়ক কমরেড সঞ্জয় কান্ত দাস, বাসদ সিলেট জেলার সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল, বাংলাদেশ নারী মুক্তি আন্দোলন সিলেট জেলার সংগঠক লক্ষী পাল, বিপ্লবী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক বিশ্বজিৎ শীল প্রমুখ।

Manual6 Ad Code

উপস্থিতি

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সিলেট জেলার সাধারণ সম্পাদক ডা. হরিধন দাস, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র সিলেট জেলার আহ্বায়ক নাজিকুল ইসলাম রানা, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী সিলেট জেলার সভাপতি সরফরাজ সানোয়ার, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট সিলেট জেলার সভাপতি সুমিত কান্তি দাস পিনাক, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন সিলেট জেলার সভাপতি মাশরুক জলিলসহ বিভিন্ন প্রগতিশীল রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ছাত্র সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

আলোচনা সভা শেষে সমবেত কণ্ঠে “কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল” সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে কর্মসূচির সমাপ্তি ঘটে।

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code