“এলাকায় এলাকায় মজবুত রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। যদি রাজনৈতিক সংগঠনকে শিক্ষিত করার ব্যবস্থা না থাকে, তাহলে এটা একটা কথার কথা থেকে যাবে। সংবাদপত্র ছাড়া এ শিক্ষার ব্যবস্থা কে করবে।”- মহান দার্শনিক ও রুশ বিপ্লবের মহানায়ক কমরেড ভি অাই লেনিনের উক্তিকে প্রতিপাদ্য করে এ উপলক্ষে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর ২০২৪) রাত সাড়ে ৮টায় কলেজ রোডস্থ শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সাপ্তাহিক নতুন কথা’র বিশেষ প্রতিনিধি, আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ আবু জাফর সালাউদ্দিনের সঞ্চালনায় এ সভায় বক্তব্য দেন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার প্রতিনিধি ও শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি দীপঙ্কর ভট্টাচার্য লিটন, সাবেক সহসভাপতি ইসমাইল মাহমুদ, কাওসার ইকবাল, ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন আরাফাত রবিন, কোষাধ্যক্ষ এহসান বিন মুজাহির, সাবেক কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ ছায়েদ আহমদ, সাধারণ সদস্য সাইফুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন আহমেদ, শামসুল ইসলাম শামীম, আব্দুর রব এবং সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কাজী কামরুল ইসলাম বাবুল।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ক্লাবের সহসম্পাদক (দপ্তর) মুসলিম চৌধুরী, ক্লাবের সাধারণ সদস্য মিজানুর রহমান আলম, গণমাধ্যম কর্মী হৃদয় দাস শুভ, গণমাধ্যম কর্মী দেওয়ান মাসুকুর রহমান, ছাত্রনেতা সাইফুর রহমান শিপু, সুমন আহমদ, রুমন আহমদ প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আরপি নিউজের সম্পাদক ও বিশিষ্ট কলামিস্ট কমরেড সৈয়দ আমিরুজ্জামান বলেন, “বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে গণমাধ্যম যে ভূমিকা রেখেছে তা এক কথায় অতুলনীয়। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের প্রচারিত উজ্জীবনী গান, সংবাদ, কথিকা, সাক্ষাৎকার, আলোচনা অনুষ্ঠান, সংবাদ বিশ্লেষণ মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলার সাধারণ মানুষকে সাহস ও শক্তি যুগিয়েছে। মুক্তিপাগল মানুষের মনে মুক্তিচেতনার অগ্নিস্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি করেছে। দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক আজাদসহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদ, সংবাদবিশ্লেষণ, সম্পাদকীয়, উপম্পাদকীয় সাধারণ মানুষকে শুধুই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে সংগঠিত করে নি, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে বাংলার দামাল ছেলেদের অনুপ্রাণিত করেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের পথ-নির্দেশনা দিয়েছে, বিদেশিদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে, মহান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে প্রবল বিশ্বজনমত গঠন করেছে। দেশি গণমাধ্যমের পাশাপাশি বিদেশি গণমাধ্যমও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে। বিশ্বের প্রভাবশালী পত্রিকা নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, দ্য গার্ডিয়ান, দ্য টাইমস, দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ, দ্য স্টেটস ম্যান, ফিন্যানসিয়াল টাইম, বিবিসি, টাইম ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম মুক্তিযুদ্ধকে মুহূর্তেই ছড়িয়ে দেয় বিশ্বময়। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বিশ্বজনমতকে বাঙালিদের পক্ষে আনতেও প্রশংসনীয় ভূমিকা রেখেছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। ফলে দিন দিন বেড়েছে আমাদের বন্ধুদেশের সংখ্যা। এক ঘরে হয়ে পড়েছে হানাদার পাকিস্তান। বিশ্বজনমত আগ্রাসী পাকিস্তানের বিপক্ষে যাওয়ায় পাকসেনাদের মনোবল ভেঙ্গে যায়। পক্ষান্তরে বিশ্ব জনমত ও দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকায় মুক্তিযোদ্ধারা শক্তি-সাহস পেয়েছে, তাদের নৈতিক মনোবল ছিল ইস্পাতকঠিন। ফলে দীর্ঘ নয় মাসের রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জন সহজ হয়েছে।
আমরা মনে করি, গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে সমতার চেতনায় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা ও বৈষম্যহীন উন্নত এবং শক্তিশালী ও স্বাধীন বাংলাদেশকে উন্নতি-সমৃদ্ধির শিখরে নিয়ে যেতেও গণমাধ্যম পথপ্রদর্শকের ভূমিকা রাখতে পারে।
পরে অনুষ্ঠান শেষে অনলাইন নিউজ পোর্টাল আরপি নিউজের একযুগ পূর্তির কেক কাটা হয়।