ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবস আজ

প্রকাশিত: ১২:৪৯ পূর্বাহ্ণ, মে ১৬, ২০২৫

ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবস আজ

Manual2 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ১৬ মে ২০২৫ : ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চ দিবস আজ। ফারাক্কা বাঁধের ফলে নদীর নাব্যতা হারানোর আশঙ্কায় ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী পদ্মার পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে ৪৯ বছর আগে ১৯৭৬ সালের এই দিনে মজলুম জননেতা মাওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে লং মার্চ অনুষ্ঠিত হয়।

Manual3 Ad Code

মওলানা ভাসানীর নেতৃত্বে রাজশাহীর একটি মাদরাসার মাঠ থেকে লাখ লাখ জনতা ফারাক্কা বাঁধ অভিমুখে লংমার্চ শুরু করেন। ওই লংমার্চ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলে দেয়। বিশ্ব মিডিয়াগুলোতে ফলাও করে খবর প্রচার হওয়ায় ভাসানী হয়ে ওঠেন আফ্রো-এশিয়ার নেতা।

চুক্তি অনুযায়ী, পানির ন্যায্য হিস্যার দাবি পূরণে ১৯৯৬ সালে ফারাক্কার পানি ভাগাভাগির বিষয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে নতুন করে ৩০ বছর মেয়াদি চুক্তি হলেও এখনও সমস্যার সমাধানে পৌঁছাতে পারেনি দুই দেশ।

ফারাক্কা ইস্যুতে ভারতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, দেশটি নিজেদের প্রয়োজনে পানি অপসারণ বা আটকে দিচ্ছে। বিশেষ করে এই বাঁধের কারণে বর্ষার মৌসুমে বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমের বেশকিছু জেলা বন্যা ও নদী ভাঙনের কবলে পড়ে। তাছাড়া শুষ্ক মৌসুমে পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় বাংলাদেশিদের।

ভারতের বিরুদ্ধে ফারাক্কা নিয়ে অভিযোগ হলেও দেশটির বিহার ও উত্তরপ্রদেশে প্রতিবছর বন্যা ও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে ফারাক্কা বাঁধ সরিয়ে স্থায়ী সমাধানের জন্য দাবি জানিয়ে আসছে বিহারবাসী।

Manual6 Ad Code

কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের বৈঠকে ছয়টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সমাধান নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ফারাক্কা ইস্যুতে রুটিন আলোচনা করে উভয়পক্ষ।

উল্লেখ্য, ভারতের হুগলী নদীতে পানি সরবরাহ এবং কলকাতা বন্দরটি সচল করার জন্য ১৯৭৪ সালে ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। যার অবস্থান বাংলাদেশ থেকে ১৮ কিলোমিটার উজানে ভারতের ভূখণ্ডে গঙ্গা নদীর ওপরে।

প্রতিবছর ফারাক্কা দিবস পালিত হয়। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বিবৃতি দিয়েছেন।

Manual8 Ad Code

২০২৬ সালে ফারাক্কা চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই চুক্তির পর্যালোচনা করে সম্মত ব্যবস্থায় উপনীত হোন: ওয়ার্কার্স পার্টি

বাংলাদেশের ওর্য়াকার্স পার্টি ১৬ মে’র ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবসে মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেছে, “মওলানা ভাসানীর ফারাক্কা মার্চের ধারাবাহিকতায় পরবর্তীকালে বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারের আমলে ফারাক্কা নিয়ে চুক্তি সম্পাদনে প্রচেষ্টা ছিল, তার ওপর ভিত্তি করেই ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ও ভারতের যুক্তফ্রন্ট সরকারের আমলে গঙ্গার পানি চুক্তি সম্পাদিত হয়। ঐ চুক্তি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক নদী হিসেবে গঙ্গানদী এবং এর পানিতে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা পাওয়ার বিষয়টি প্রথম স্বীকৃত হয়। ওই চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর অবদান এদেশের মানুষ চিরকাল স্মরণ করবে। চুক্তি হিসেবে আদর্শ স্থানীয় না হলেও, বিশেষ করে ফারাক্কায় পানি প্রাপ্তির ভিত্তিতে শুকনো মৌসুমে বাংলাদেশের পানি পাওয়ার বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টিসহ দেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক শক্তি এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছিল। কিন্তু ঐ চুক্তির পরের বছর থেকেই ভারত বাংলাদেশকে চুক্তি অনুযায়ী পানি দেয় নাই। এছাড়া গঙ্গায় বাংলাদেশের পানি প্রাপ্তির বিষয়কে গঙ্গায় পানিপ্রবাহ বৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত করে নতুন নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করে চুক্তিকে অকার্যকর করার প্রয়াসে লিপ্ত হয়। ইতিমধ্যে ফারাক্কায় পানি প্রাপ্তি প্রতিবছর চুক্তির পরিমাণের চেয়ে নিচে থাকার কারণ হিসেবে ভারত ও বাংলাদেশ উভয় সরকারই প্রকৃতির ওপর দোষ চাপিয়ে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করেছে। ইতিমধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ফারাক্কার ভাটিতে থাকা এলাকায় ভাঙন ও বিহারে পানি প্রাপ্তি কমে যাওয়ায় পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন মহল ও বিহারের মুখমন্ত্রী নিতীশ কুমার ফারাক্কা বাঁধ ভেঙে দেওয়ারও দাবি তুলেছেন। কিন্তু ভারতের উত্তর প্রদেশে উজানে গঙ্গার পানি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় গঙ্গার পানির সামগ্রিক প্রাপ্তি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আগামী ২০২৬ সালে ফারাক্কা চুক্তির ত্রিশ বছরের মেয়াদ পূর্ণ হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ তিস্তা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায়, সেখানে নতুন করে গঙ্গার পানির প্রাপ্যতা নিয়ে আবার চুক্তিহীন অবস্থায় উপনীত হলে সেটি জাতির জন্য বিপর্যয়কর হবে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সময় থাকতে এখনই ফারাক্কা চুক্তি পর্যালোচনা করে একটি সম্মত অবস্থায় উপনীত হওয়া জরুরি মনে করছে। গঙ্গাকে যেন আবার তিস্তার ভাগ্য বহন না করতে হয় তা নিশ্চিত করাও জরুরি।”

Manual4 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code