মুজিবের বায়োপিকে কিছু অসঙ্গতির কথা জানালেন চলচ্চিত্র গবেষক শামছুল আলম

প্রকাশিত: ৫:৪২ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ২৩, ২০২৩

মুজিবের বায়োপিকে কিছু অসঙ্গতির কথা জানালেন চলচ্চিত্র গবেষক শামছুল আলম

Manual4 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | ঢাকা, ২৩ নভেম্বর ২০২৩ : বঙ্গবন্ধুর জীবনী নিয়ে বানানো চলচ্চিত্রে কিছু অসঙ্গতির কথা জানিয়েছেন সিনেমাপ্রেমি ও চলচ্চিত্র গবেষকরা।

Manual7 Ad Code

ভারতের কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা শ্যাম বেনেগাল পরিচালিত বায়োপিকটির ট্রেলার দেখেই কিছুর অসঙ্গতির কথা জানান তারা। অথচ নানা গবেষণা ও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ শেষে ২০২১ সালে সিনেমার কাজ শুরু হয়, শেষ হয় ২০২৩ সালে।

চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব, গবেষক ও লেখক মীর শামসুল আলম বাবু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ট্রেলার দেখে চার দফায় ব্যাখ্যাসহ বেশকিছু ভুল উপস্থাপন করেছেন।

তিনি জানান, শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এই চলচ্চিত্রের যতটুকু ট্রেলার বা অন্য মাধমে প্রকাশ হয়েছে – তাতে রয়েছে ‘ইতিহাসের রফাদফার দৃশ্য’।

Manual5 Ad Code

বাবু জানান, বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে। চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে ‘মুজিব’ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে প্রথম রিকশায় আসেন এবং নামেন বর্তমান কলাভবনে। অথচ ১৯৪৭ সালে কলাভবন ছিল বর্তমান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইমার্জেন্সি গেটের ভেতরে।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ঢাকায় আসেন। ঢাকা এয়ারপোর্টে অপেক্ষায় থাকা লাখো জনতার মধ্যে স্বাধীন দেশে পা ফেলেন তিনি। তখন বিমানের সিঁড়িতেই বহু মানুষ তার গলায় মালা পড়ান। তখন সিঁড়ির কাছেই হাজারো মানুশন ভিড় করে, সবাই সেই সিঁড়ি বেয়ে উঠতে চায় এবং জাতির পিতাকে স্পর্শ করতে চায়।

অথচ ‘মুজিব – একটি জাতির রূপকার’ চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে – উনি ধীরে ধীরে নামছেন, সঙ্গে মাত্র তিনজন লোক, নেমে মাটিতে সেজদা/চুমু দিলেন, পাশে লাল কার্পেট বিছানো, সুশৃঙ্খল ব্যান্ড পার্টি দাঁড়িয়ে, দাঁড়িয়ে মালা হাতে নেতৃবৃন্দ।

একটি দৃশ্যে দেখানো হচ্ছে- ৩২ নাম্বরের দোতালা বাড়িতে প্রবেশ করছে বালক শেখ কামাল, জামাল ও কিশোরী শেখ হাসিনা। অথচ ইতিহাস বলে ১৯৬১ সালের এক অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নাম্বার প্লটে বাড়িতে শেখ পরিবার যখন প্রবেশ করেন তখন এটি দুই কামরার একতলা বাড়ি ছিল। এরপর বেগম মুজিবের তৎপরতায় তিল তিল করে ধীরে ধীরে বাড়িটি দোতালায় পরিণত হয়।

Manual3 Ad Code

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি, সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন কলাভবন গেট দিয়ে ছাত্রদের যে মিছিল বের হয় সেই মিছিলে গুলি হয়নি, সেই মিছিলের কেউই মারা যাননি। প্রথম মিছিল বের হবার পাঁচ ঘণ্টা পর দুপুর সাড়ে তিনটায় বিভিন্ন স্থান থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জমায়াতের ওপর গুলি হয়। যে গুলিতে বর্তমান শহীদ মিনার, ব্যারাক, পানির পাম্প এমনকি চানখাঁরপুলের পাশে সব মিলিয়ে কয়েক জায়গায় কয়েকজন শহীদ হন।

অথচ শ্যাম বেনেগালের ‘মুজিব – একটি জাতির রূপকার’ ছবিতে দেখিয়েছেন – গেট দিয়ে বের হওয়া মিছিলেই গুলি হয়।

শ্যাম বেনেগালের ‘মুজিব-দ্যা মেকিং অফ এ নেশন’ চলচ্চিত্রে যুবক মুজিব ও কিশোরী রেনুর বিয়ের আয়োজন দেখানো হয়েছে। কিন্তু মুজিবের অসমাপ্ত আত্মজীবনী থেকে জানা যায় যখন তার বিয়ে হয় তখন বয়স বার তের হতে পারে। রেণুর বয়স তখন তিন বছর হবে।

মীর শামসুল আলম বাবু ছাড়াও সিনেমাটির ট্রেইলার দেখে বেশকিছু ইউটিউবাররা অসংঙ্গতি তুলে ধরে বানিয়েছেন কনটেন্টও।

Manual6 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ