চুনারুঘাটে চার দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপ্তি

প্রকাশিত: ৮:৩৬ অপরাহ্ণ, অক্টোবর ২৩, ২০২৫

চুনারুঘাটে চার দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসবের সমাপ্তি

Manual7 Ad Code

নিজস্ব প্রতিবেদক | চুনারুঘাট (হবিগঞ্জ), ২৩ অক্টোবর ২০২৫ : চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদ চত্বরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের আয়োজনে এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত চার দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা ও সাংস্কৃতিক উৎসব উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হয়েছে।

বইপ্রেমী, শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও সংস্কৃতিপ্রেমীদের অংশগ্রহণে এ আয়োজন পরিণত হয় জ্ঞান ও সংস্কৃতির এক প্রাণবন্ত মিলনমেলায়।

উৎসবের শেষ দিনে অনুষ্ঠিত হয় চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান এবং মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চুনারুঘাট উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. তৌফিক আনোয়ার।
তিনি বলেন, “ভ্রাম্যমাণ বইমেলা জ্ঞানপিপাসু মানুষের তীর্থক্ষেত্র। এই মেলাও জ্ঞানসন্ধানী মানুষদের এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এ ধরনের উদ্যোগ আলোকিত মানুষ গড়ার আন্দোলনকে আরও বেগবান করবে। জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়তে বই পড়ার বিকল্প নেই।”

Manual1 Ad Code

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক চুনারুঘাট শাখার ম্যানেজার সুদীপ কুমার, লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম, দক্ষিণাচরণ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. সাদ্দাম হোসেন, চুনারুঘাট পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়ন্ত কুমার রায় ও তৌহিদুল ইসলাম, এবং ভ্রাম্যমাণ বইমেলার ইউনিট ইনচার্জ অমিত চক্রবর্তী।

সভাপতিত্ব করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. কাউছার শোকরানা, আর সঞ্চালনায় ছিলেন উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার জগদীশ দাশ।

Manual2 Ad Code

‘আলোকিত মানুষ গড়ার আন্দোলন’কে বেগবান করার প্রত্যয়

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ইউনিট ইনচার্জ অমিত চক্রবর্তী বলেন, “দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাঠপ্রেমী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের হাতে সহজলভ্যভাবে বিশ্বসেরা বই পৌঁছে দিতে আমরা ‘ভ্রাম্যমাণ বইমেলা কর্মসূচি’ চালু করেছি। এটি মূলত আমাদের ‘আলোকিত মানুষ গড়ার’ কর্মযজ্ঞেরই অংশ।”

তিনি আরও বলেন, “যেখানে বই পৌঁছায় না, সেখানে পাঠচর্চার বীজ বপন করাই আমাদের লক্ষ্য। চুনারুঘাটে মানুষের আগ্রহ ও অংশগ্রহণ প্রমাণ করেছে—এ এলাকার মানুষ বই ভালোবাসে, সংস্কৃতিকে ভালোবাসে।”

প্রাণবন্ত অংশগ্রহণে উৎসবমুখর পরিবেশ

চার দিনব্যাপী এ মেলায় অংশ নেয় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাহিত্যপ্রেমী ও সাধারণ পাঠকরা। প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মেলায় উপচে পড়া ভিড় ছিল লক্ষ্যণীয়। শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে মেলা প্রাঙ্গণ ছিল মুখর, অন্যদিকে অভিভাবক ও সংস্কৃতিপ্রেমীরা বই কিনে ও সাংস্কৃতিক আয়োজনে অংশ নিয়ে উৎসবকে করে তোলেন প্রাণবন্ত।

শেষ দিনে চিত্রাঙ্কন ও আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। অতিথিদের বক্তব্যে উঠে আসে—“বই মানুষকে আলোকিত করে, জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে এ ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত প্রশংসনীয়।”

সহযোগিতা ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা

Manual5 Ad Code

এই আয়োজন বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে সহযোগিতা করেছে মেটলাইফ ফাউন্ডেশন, আর স্থানীয় পর্যায়ে সহায়তা দিয়েছে চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন।
উৎসবের শেষাংশে অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যেখানে স্থানীয় শিল্পীরা নৃত্য, সংগীত ও আবৃত্তির মাধ্যমে দর্শকদের মুগ্ধ করেন। উপস্থিত দর্শক ও অতিথিরা এমন আয়োজনকে নিয়মিত করার আহ্বান জানান।

Manual5 Ad Code

জ্ঞান ও সংস্কৃতির নবজাগরণ

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের “ভ্রাম্যমাণ বইমেলা” কর্মসূচি দীর্ঘদিন ধরে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাঠাভ্যাস জাগিয়ে তুলতে কাজ করছে। চুনারুঘাটে এ মেলার আয়োজন স্থানীয় পর্যায়ে জ্ঞানচর্চা, বইপ্রেম ও সংস্কৃতিচর্চার এক নতুন জোয়ার সৃষ্টি করেছে।
আয়োজক ও অতিথিদের প্রত্যাশা—এই বইমেলা ভবিষ্যতে আলোকিত সমাজ গঠনে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।

 

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code