শিল্পের শহর, শিল্পীর শহরে এবার আর্ট ক্যাম্প…

প্রকাশিত: ৪:৩৫ পূর্বাহ্ণ, অক্টোবর ১৮, ২০২০

শিল্পের শহর, শিল্পীর শহরে এবার আর্ট ক্যাম্প…

মনজুরুল অাজিম পলাশ || কুমিল্লা থেকে, ১৮ অক্টোবর ২০২০ : সুলতান শাহরিয়ার। চন্দন দেব রায। উত্তম গুহ। শক্তি কাম সিনহা। চারজন তরুণ। একই নগরের। কুমিল্লা শহরের। একইসাথে একইসময়ে পড়াশুনা করেছেন চট্টগ্রামে চারুকলায়। সেই ১৯৭৭ খ্রিস্টাব্দ। আজ থেকে ৪৩ বছর আগে। শিল্প সংস্কৃতির পাদপীঠ কুমিল্লা শহরের এমন প্রাগ্রসরতার ইতিহাস কল্পনা করলে বিস্মিত হতে হয় বৈকি।

সেই শহরে এবার অনুষ্ঠিত হলো আর্ট ক্যাম্প। কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে, প্রথিকৃৎ কুমিল্লা চারুশিল্পী পরিষদের অংশগ্রহণে এবং ফেভার ক্যাসেল-এর সার্বিক সহযোগিতায় গত শুক্রবার সারাদিনব্যাপী এই ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয় কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির ছায়াশীতল সবুজ প্রাঙ্গনে। সারা দিন সেখানে কাটানোর অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি—শিল্পকলা একাডেমিকে কখনোই এমন বিশ্বাসযোগ্য আর শিল্পিত মনে হয়নি আগে কখনো। জেলা কালচারাল অফিসার আয়াজ মাবুদ সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছেন এই আর্ট ক্যাম্পকে তাঁর আঙিনায় আন্তরিকভাবে ঠাঁই দিতে।

শিল্পের বিশুদ্ধ এবং সর্বোচ্চ পর্যায় চারুকলার এই সম্মিলিত অনুশীলনে যোগ দিয়েছেন কুমিল্লার নবীন প্রবীণ শিল্পীরা। শিল্পের টানে কুমিল্লার বাইরে থেকেও এসেছেন অনেক শিল্প অন্তপ্রাণ। এই ক্যাম্প একদিকে যেমন আমন্ত্রণ জানিয়েছে লোকধারার স্থানীয় একজন রিকশা পেইন্টারকে তেমনি ধারণ করেছে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন চারুকলার শিক্ষক বাংলাদেশের কৃতি শিল্পী মং মং সো এর মত প্রতিভাধর ব্যক্তিত্বকেও। সেদিন প্রান্তিকতা এবং আন্তর্জাতিকতার এক অপূর্ব শিল্পিত অভিজ্ঞতা বিনিময়ের চারণভূমি হয়ে উঠেছিল কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির সবুজ চত্বর। ছবি আঁকার ফাঁকে ফাঁকে আড্ডা আলোচনায় মেতে উঠেছিল সবাই।

এই আর্ট ক্যাম্প কুমিল্লায় চারু শিল্প চর্চার পথকে অনেক সুগম করবে এবং স্পর্ধিত রাখবে। শিল্পের নিপুন এই মাধ্যমটিকে সচল-বিশ্বাসযোগ্য-বিস্তারিত রাখতে দারুণভাবে সহায়তা করবে। শিল্পকে রাজধানী-বন্দিত্ব থেকে কিছুটা হলেও মুক্ত করে প্রান্তিকতায় ছড়িয়ে দেবে। শিল্পীদের শেকড় যাত্রায় এবং নিজ জনপদে এসে কাজ করবার প্রবণতা উৎসাহী রাখবে। সৃষ্টিশীলতার চর্চায় কিছুটা হলেও ঈর্ষাহীনতার যুথবদ্ধ বলয় সৃষ্টি করবে…