মানিকগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ

প্রকাশিত: ৯:০৫ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩

মানিকগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ

Manual3 Ad Code

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিবেদক | মানিকগঞ্জ, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৩ : মানিকগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ।

Manual4 Ad Code

১৯৭০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারী কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের সমন্বয় কমিটির একাংশের নেতৃত্বে পল্টনের বিশাল জনসভা থেকে ‘স্বাধীন জনগণতান্ত্রিক পূর্ব বাংলা’র কর্মসূচি প্রকাশ্যে উত্থাপন, ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও ১৯৭১ সালের ৯ মার্চ ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় বাঙালির স্বাধীনতা আন্দলন ও বঙ্গবন্ধুর সিদ্ধান্তের প্রতি মজলুম জননেতা মওলানা অাব্দুল হামিদ খান ভাসানীর একাত্মতা ঘোষণার পর জাতিগত নিপীড়ন-শোষণ-বৈষম্য-বঞ্চনার শিকার মুক্তিপাগল বাঙালি যুদ্ধের জন্য তৈরিই ছিলো বলা যায়।

১৯৭১ সালের ১ ও ২ জুন কলকাতার বেলেঘাটায় যুদ্ধরত কমিউনিস্ট ও বামপন্থী দল এবং গণসংগঠনসমূহ মিলিত হয়ে গঠন করেছিল বাংলাদেশ জাতীয় মুক্তি সংগ্রাম সমন্বয় কমিটি। এ সম্মেলনে গৃহীত ঘোষণাপত্র তখন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়েছিল। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারকে স্বীকার করেই সমন্বয় কমিটি সরকারকে সহযোগিতাও যেমন করবে, তেমনি স্বতন্ত্রভাবেও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনা করবে। এ সমন্বয় কমিটির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ দল ছিল ন্যাপ (ভাসানী) ও ‘কমিউনিস্ট বিপ্লবীদের পূর্ব বাংলা সমন্বয় কমিটি’ যার নেতৃত্বে সারাদেশে ১৪টি সশস্ত্র ঘাটি এলাকা ছিল।

১৯৭১ সালের ১৩ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে হানাদার বাহিনীর সদস‌্যরা ঢাকার দিকে ফিরতে শুরু করে।

পরের দিন সকালে ১৪ ডিসেম্বর দেবেন্দ্র কলেজ মাঠ প্রাঙ্গনে তৎকালীন এমএলএ মাজাহারুল হক চাঁন মিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে লাল সবুজের পতাকা উত্তোলন করেন।

Manual7 Ad Code

মানিকগঞ্জে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ বলে খ্যাত সিংগাইরের গোলাইডাঙ্গা যুদ্ধ। এ যুদ্ধের নেতৃত্ব দেন তোবারক হোসেন লুডু। গোলাইডাঙ্গা মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প দখলের জন্য তিন শতাধিক পাকবাহিনী ১০ থে‌কে ১২টি নৌকায় ক‌রে সেখানে আসে। এ খবর পেয়ে মুক্তিযোদ্ধারা দুটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে অবস্থান নেয়। সেখানে দ্বিমুখী আক্রমণে একজন কর্নেলসহ ৮১ জন পাক সেনা মারা যায়।

Manual8 Ad Code

১৪ অক্টোবর বালিরটেক ও ১৫ অক্টোবর সুতালড়িতে পাকবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ হয়। বালিরটেক যুদ্ধে দু’জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। ২২ নভেম্বর দেশীয় দোসর ও পাক হানাদার বাহিনী গভীর রা‌তে তেরশ্রী, সেনপাড়া, বড়রিয়া এবং বড়বিলা গ্রামের ঘুমন্ত মানুষের ওপর নারকীয় তান্ডব চালায়। নির্বিচারে গুলি, বেয়নেট চার্জ ও বাড়ি ঘরে আগুন দিয়ে তেরশ্রী জমিদার সিদ্ধেশ্বর প্রসাদ রায় চৌধুরী এবং অধ্যক্ষ আতিয়ার রহমানসহ ৪৩ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে।

১০ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার মিরপুর গ্রামে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইসমাইল উদ্দিন মোল্লার বাড়ি মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে পাকিস্তানী বাহিনী ও তাদের দোসররা অতর্কিত আক্রমণ করে। মুক্তিযোদ্ধারাও পাল্টা আক্রমণ করলে প্রায় ২ ঘন্টা সম্মুখ যুদ্ধ হয়। এতে বীর মুক্তিযোদ্ধা মুনসুর আলম গুলিতে আহত হন।

এক পর্যায়ে হানাদার বাহিনী এলাকার কোকারাম মন্ডলকে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং আগুনে পুড়িয়ে দেয় এই গ্রামের প্রায় অর্ধশত বাড়িঘর। দিবসটি উপলক্ষে প্রতি বছর ১৩ ডিসেম্বর থেকে ১৫ দিনব্যাপী বিজয় মেলা উদযাপন করা হয়।

Manual1 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code