বায়ুতে ওজোন গ্যাসের উপস্থিতির তারতম্য বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটও তৈরী করে

প্রকাশিত: ৪:১৫ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩

বায়ুতে ওজোন গ্যাসের উপস্থিতির তারতম্য বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটও তৈরী করে

Manual7 Ad Code

বিশেষ প্রতিনিধি | ঢাকা, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ : “বায়ুতে ওজোন গ্যাসের উপস্থিতির তারতম্য একদিকে যেমন বায়ুমান খারাপ করে অপরদিকে এটি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটও তৈরী করে।”

আজ শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩) “আন্তর্জাতিক ওজোন স্তর সুরক্ষা দিবস-২০২৩” উপলক্ষে বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস), পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ এর আয়োজনে এবং কম্পাস প্রোগ্রাম, ইউএস ফরেস্ট ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত এক ওয়েবিনারে এ কথা বলা হয়।
বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের পূর্ণকালীন সদস্য অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফার সভাপতিত্বে উক্ত ওয়াবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্যাপস এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার।
ক্যাপস এর গবেষক ইঞ্জি. নাছির আহম্মেদ পাটোয়ারীর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আইপিডির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান।
ওয়াবিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন কম্পাস প্রোগ্রাম, ইউএস ফরেস্ট ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসের কো-অর্ডিনেটর স্পেশালিস্ট মো. শামস উদ্দিন, স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদা পারভীন, সিনিয়র লেকচারার মাহমুদা ইসলাম, প্রভাষক মো. হুমায়ুন কবির, ক্যাপস এর গবেষক ইঞ্জি. মারজিয়াত রহমান এবং সিজিইডির নির্বাহী পরিচালক আব্দুল ওহাব।

Manual7 Ad Code

মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, “দুই ধরনের ওজোন রয়েছে। একটি খারাপ ওজোন যা ভূপৃষ্ঠে থাকে এটিকে গ্রাউন্ড লেভেল ওজোন বলা হয়, অপরটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার থাকে যা ওজন স্তর বা ওজোনস্ফিয়ার নামে পরিচিত। এটিকে ভালো ওজোন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। মহাশূন্যের এই ওজোনস্তর সূর্যের ক্ষতিকর অতি বেগুনি রশ্মিকে পৃথিবীতে প্রবেশ থেকে বাধা সৃষ্টি করে। ওজোন গ্যাস একটি স্বল্প আয়ুর জলবায়ু দূষক হিসেবে পরিচিত এবং এটি একটি অন্যতম বায়ু দূষক। বায়ুতে ওজোন গ্যাসের উপস্থিতির তারতম্য একদিকে যেমন বায়ুমান খারাপ করে অপরদিকে এটি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটও তৈরী করে”।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. গুলশান আরা লতিফা বলেন, “ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার ফলে জলজ ফ্লাইটোপ্লাঙ্কটন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে যা ইকোসিস্টেমের উপর প্রভাব বিস্তার করছে। জীববৈচিত্র্য যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে এবং কিভাবে ওজোনে স্তরকে রক্ষা করা যায় সেটি গবেষণার মাধ্যমে নির্ণয় করার চেষ্টা করতে হবে”।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান বলেন, “পরিবেশকে যদি আমরা সমুন্নত রাখতে চাই তাহলে আমাদেরকে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রাখতে হবে। কিন্তু কনক্রিটের আচ্ছাদনের মাধ্যমে আমরা শহরগুলোর প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলছি। সিএফসি যুক্ত এসি ব্যবহারের আধিক্য দিন দিন ওজোন স্তরের ক্ষয় বৃদ্ধি করছে, যা গণপরিবেশ ধ্বংসের অন্যতম কারণ। একজন পরিকল্পনাবিদ হিসেবে তিনি পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করে টেকসই উন্নয়নের দিকে ধাবিত হতে সকলকে আহ্বান করেন”।
আলোচকের বক্তব্যে মো. শামস উদ্দিন বলেন, “ইউএস ফরেস্ট সার্ভিস এর কম্পাস প্রোগ্রাম দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। ওজোন স্তর তথা পরিবেশ সুরক্ষার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অগ্রগণ্য হয়ে কাজ করতে হবে”।
আলোচকের বক্তব্যে ড. মাহমুদা পারভীন বলেন, “অসচেতনতামূলক কাজের মাধ্যমে আমরা ওজোন স্তরকে ক্ষতিগ্রস্ত করছি। চোখে ছানি সহ বিভিন্ন রকম ক্যান্সার এর প্রধান কারণ হলো সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি। ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে এর ওজোন হোলের মাধ্যমে পৃথিবীতে অতি বেগুনি রশ্মি এসে আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলছে। তাই আমাদেরকে নিজেদের জন্যই ওজোন স্তর তথা পরিবেশকে রক্ষা করতে হবে”।
আলোচকের বক্তব্যে আব্দুল ওহাব বলেন, বাংলাদেশ সরকার ওজোন স্তর নিয়ে গবেষণার জন্য প্রায় সাড়ে ১৭ লক্ষ ডলার অনুদান পেয়েছে এবং ইতিমধ্যেই প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। সরকারের উদ্যোগ রয়েছে কিন্তু আমরা যথেষ্ট সচেতন না। এখনো সিএফসিযুক্ত এসির ব্যবহার কমছে না। আমাদেরকে বিকল্প প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে।
সমাপনী বক্তব্যে ক্যাপসের গবেষক ইঞ্জিনিয়ার মারজিয়াত রহমান বলেন, “পরিবেশটা আমাদের তাই নিজেদের জন্যই পরিবেশ রক্ষা করতে হবে, ওজোন স্তরের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া শুধু বাংলাদেশেরই নয় এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তাই আজকে এই দিনে আমাদের শপথ করতে হবে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সিএফসি গ্যাসের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে আমরা ওজোন স্তরকে রক্ষা করব”।

Manual6 Ad Code

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

 


Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code